ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ঋণ সুবিধা ২০২২

কুটির ও মাইক্রো উদ্যোগে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা হতে সর্বোচ্চ ১ (এক) কোটি টাকা ক্রেডিট সুবিধা ২০২৩

গ্যারান্টি চলমান থাকা সাপেক্ষে ১ (এক) বছর অতিবাহিত হওয়ার পর পরবর্তী বছর হতে অব্যবহিত পূর্ববর্তী দিনের গ্যারান্টিপ্রাপ্ত ঋণস্থিতির উপর গ্যারান্টি ফি পরিশােধ করতে হবে। এক্ষেত্রে যে সকল ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অব্যবহিত পূর্ববর্তী বছরের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক শ্রেণিকৃত ঋণের হার ৫ শতাংশ বা এর কম তাদের জন্য বার্ষিক ০.৫০ শতাংশ হারে এবং যে সকল ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকৃত ঋণের হার ৫ শতাংশের বেশী কিন্তু ১০ শতাংশের কম তাদের জন্য বার্ষিক ০.৭৫ শতাংশ হারে গ্যারান্টি ফি প্রদান করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক

(সেন্ট্রাল ব্যাংক অব বাংলাদেশ)

প্রধান কার্যালয় মতিঝিল, ঢাকা-১০০০

বাংলাদেশ

website: www.bb.org.bd

সিজিডি সার্কুলার নং-০২ তারিখ : ১০ আগস্ট ২০২২ 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

প্রিয় মহােদয়,

কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) খাতে ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় প্রদেয় মেয়াদি ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান প্রসঙ্গে।

সিএমএস উদ্যোগ খাতে জামানতবিহীন ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সংক্রান্ত এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৩, তারিখ: ২৭ জুলাই ২০২০ এর প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।

২। উক্ত সার্কুলারের মাধ্যমে ‘কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র (সিএমএস) উদ্যোগ খাতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম’ শীর্ষক একটি স্কিম প্রবর্তন করা হয়। উক্ত স্কিমের আওতায় ১৩ এপ্রিল ২০২০ তারিখের এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০১ এর মাধ্যমে সিএমএসএমই খাতে ঘােষিত ২০,০০০ (বিশ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় কেবলমাত্র সিএমএস খাতে চলতি মূলধন (Working Capital) ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়। পরবর্তীতে, উক্ত গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ২৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখের এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০১ এর মাধ্যমে ১০/৫০/১০০ টাকার হিসাবধারী প্রান্তিক/ভূমিহীন কৃষক, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৫০০ (পাঁচশত) কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদানের বিষয়েও নীতিমালা জারি করা হয়।

৩। সম্প্রতি সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের অপেক্ষাকৃত স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৪, তারিখ: ১৯ জুলাই ২০২২ এর মাধ্যমে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) খাতে মেয়াদি ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) কোটি টাকার আবর্তনশীল (revolving) পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে। সিএমএসএমই খাতের প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক গ্রাহকের ঋণ পরিশােধের সামর্থ্য থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ গ্রহণের জন্য প্রয়ােজনীয় সহায়ক জামানত দিতে সক্ষম হন না। ফলে, আলােচ্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটি সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বার্থে সিএমএসএমই খাতে সহায়ক জামানত প্রদানে অক্ষম উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তি সহজতর করার লক্ষ্যে তাদের যাচিত মেয়াদি ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান করার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে।

৪। এক্ষণে, বর্ণিত সার্কুলারের মাধ্যমে সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ঘােষিত ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় প্রদেয় ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান করা হবে। আলােচ্য ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত নীতিমালা অনুসরণীয় হবে:

৪.১। অংশগ্রহণ চুক্তি : আলােচ্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টের সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি (Participation Agreement) সম্পাদন করতে হবে।

এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০২২ এর আওতায় এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রােগ্রামস্ ডিপার্টমেন্টের সাথে চুক্তিবদ্ধ সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ ডিপার্টমেন্টের সাথে অংশগ্রহণ চুক্তি (Participation Agreement) সম্পাদন করার যােগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ২৯ আগস্ট ২০২২ তারিখের মধ্যে এ ডিপার্টমেন্টের সাথে অংশগ্রহণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।

৪.২ ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণের জন্য উপযুক্ত ঋণগ্রহীতা : এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০২২ এর মাধ্যমে প্রবর্তিত পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ঋণ গ্রহণের জন্য উপযুক্ত ঋণগ্রহীতাগণ ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণের জন্য যােগ্য মর্মে বিবেচিত হবেন।

৪.৩। ক্রেডিট গ্যারান্টি ক্যাপ : এ গ্যারান্টি সুবিধার আওতায় গ্যারান্টি পাের্টফোলিও ক্যাপ এর হার হবে এ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক একটি নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার বছরে অনুমােদিত মােট গ্যারান্টির সর্বোচ্চ ৩০ (ত্রিশ) শতাংশ এবং উক্ত গ্যারান্টি পাের্টফোলিও ক্যাপ এর আওতায় কোন একক উদ্যোক্তা বা ঋণগ্রহীতার ক্ষেত্রে গ্যারান্টি কভারেজ এর হার হবে সর্বোচ্চ ৭০ (সত্তর) শতাংশ।

৪.৪। ক্রেডিট গ্যারান্টির মেয়াদ : প্রাথমিকভাবে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের মেয়াদই হবে গ্যারান্টির মেয়াদ। নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে কোন ঋণ সম্পূর্ণ আদায় হলে সংশ্লিষ্ট ঋণের গ্যারান্টির মেয়াদও শেষ হবে। তবে, কোন ঋণ পুনঃতফসিল/পুনর্গঠন করা হলে, পুনঃনির্ধারিত মেয়াদ গ্যারান্টির মেয়াদ হিসেবে গণ্য হবে। পুনঃতফসিল/পুনর্গঠন এর মাধ্যমে ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট হতে গ্যারান্টির মেয়াদও বৃদ্ধি করতে হবে এবং বর্ধিত সময়ের জন্য গ্যারান্টি ফি প্রদান করতে হবে।

৪.৫। ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রাপ্তির জন্য গ্রাহক পর্যায়ে প্রযােজ্য ঋণসীমা : বর্ণিত সুবিধা প্রাপ্তির জন্য সিএমএসএমই উদ্যোগ খাতে গ্রাহক পর্যায়ে প্রযােজ্য ঋণসীমা নিম্নরূপ :

(ক) কুটির ও মাইক্রো উদ্যোগের উৎপাদনশীল ও সেবা শিল্প খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা হতে সর্বোচ্চ ১ (এক) কোটি টাকা;

(খ) ক্ষুদ্র উদ্যোগের উৎপাদনশীল শিল্প খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ১ (এক) লক্ষ টাকা হতে সর্বোচ্চ ৩ (তিন) কোটি টাকা এবং সেবা শিল্প খাতে সর্বনিম্ন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা হতে সর্বোচ্চ ১ (এক) কোটি টাকা; এবং

(গ) মাঝারি উদ্যোগের উৎপাদনশীল শিল্প খাতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ১ (এক) লক্ষ টাকা হতে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা এবং সেবা শিল্প খাতে সর্বনিম্ন ১ (এক) লক্ষ টাকা হতে সর্বোচ্চ ২ (দুই) কোটি টাকা।

৪.৬। ঋণের সুদ হার ও সুদ হিসাবায়ন : আলােচ্য গ্যারান্টি সুবিধার আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে প্রদেয় ঋণের সুদহার হবে এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০২২ এর অনুচ্ছেদ নং-২.৬ (ক) এ বর্ণিত সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ। তাছাড়া, উক্ত সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণের ক্রমহ্রাসমান স্থিতির উপর সুদ আরােপ করতে হবে।

৪.৭। ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধার আওতায় ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ :

(ক) অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান (পিএফআই)-সমূহকে ক্যালেন্ডার বছর ভিত্তিক ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধার আওতায় ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বছরের শুরুতে ঘােষণা এবং ঐ বছরের মধ্যেই তা অর্জন করতে হবে। পিএফআই কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা যাচাই-বাছাই এবং ক্রেডিট গ্যারান্টি তহবিলের পর্যাপ্ততা বিবেচনা করে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক পিএফআই এর জন্য লক্ষ্যমাত্রা পুনঃনির্ধারণ করা যাবে। পিএফআই কর্তৃক ঘােষিত লক্ষ্যমাত্রা এ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক পুনঃনির্ধারণ করা হলে তা পত্র মারফত সংশ্লিষ্ট পিএফআই -কে অবহিত করা হবে;

(খ) সিএমএসএমই খাতের নারী উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পিএফআইসমূহকে তাদের Portfolio Guarantee Limit (PGL) এর ১০ (দশ) শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের অনুকূলে বিতরণের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের মধ্যে নারী উদ্যোক্তাদের নিকট হতে আবেদন পাওয়া না গেলে ঐ অংশ সম্ভাবনাময় অন্যান্য উদ্যোক্তাদের ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টি প্রদান করা যাবে;

(গ) কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যারান্টি সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০২২ এর অনুচ্ছেদ নং-২.৪ এ বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।

৪.৮। ক্রেডিট গ্যারান্টির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশন ইস্যুর পদ্ধতি :

(ক) অংশগ্রহণকারী ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রেডিট গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশনের জন্য যে মাসে আবেদন করা হবে তার অব্যবহিত পূর্ববর্তী মাসে মঞ্জুরীকৃত ঋণের আবেদনসমূহের তথ্যাদিসহ প্রতি মাসের ১৫ (পনের) তারিখের মধ্যে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট বরাবর নির্ধারিত ছকে (পরিশিষ্ট “ক’) আবেদন করতে হবে;

(খ) ক্রেডিট গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশন আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট পিএফআই কর্তৃক তাদের অনুমােদিত ঋণ নীতিমালার আওতায় গ্রাহকের ঋণের আবেদনসমূহ যথাযথভাবে যাচাই-বাছাইপূর্বক প্রাথমিকভাবে মঞ্জুর করা হয়েছে মর্মে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে;

(গ) আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট হতে প্রয়ােজনীয় যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পাদন করে দ্রুততার সাথে যােগ্য উদ্যোক্তাদের গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশন প্রদান করে সংশ্লিষ্ট পিএফআই -কে তা অবহিত করা হবে;

(ঘ) ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট হতে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান যথাযথ ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করে ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে গ্রাহকের অনুকূলে ঋণ বিতরণ করবে;

(ঙ) এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রােগ্রামস্ ডিপার্টমেন্টের সাথে কোন পিএফআই কর্তৃক সম্পাদিত অংশগ্রহণ চুক্তি কোন কারণে বাতিল/স্থগিত হলেয উক্ত পিএফআই এর অনুকূলে এ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক নতুনভাবে কোন গ্যারান্টি ইস্যু করা হবে না। তাছাড়া, এ ডিপার্টমেন্টের সাথে সম্পাদিত অংশগ্রহণ চুক্তির কোন শর্ত ভংগ করা হলে প্রয়ােজনে কোন কারণ দর্শানাে ছাড়াই এ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক উক্ত চুক্তি বাতিল/স্থগিত করা হবে।

৪.৯। ক্রেডিট গ্যারান্টি ফি’র হার : ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্ট ও ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে সম্পাদিত দ্বি-পাক্ষিক অংশগ্রহণ চুক্তির আওতায় প্রত্যেক ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাৎসরিক ভিত্তিতে গ্যারান্টি ফি পরিশােধ করতে হবে। নির্ধারিত গ্যারান্টি ফি সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতার নিকট হতে আদায় করা যাবে। কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোগ খাতে নিম্নবর্ণিত হারে গ্যারান্টি ফি পরিশােধ করতে হবে :

(ক) অংশগ্রহণকারী ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সিএমএসএমই খাতে গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ঋণের উপর প্রথম ১ (এক) বছরের জন্য ১ শতাংশ হারে গ্যারান্টি ফি পরিশােধ করতে হবে;

(খ) গ্যারান্টি চলমান থাকা সাপেক্ষে ১ (এক) বছর অতিবাহিত হওয়ার পর পরবর্তী বছর হতে অব্যবহিত পূর্ববর্তী দিনের গ্যারান্টিপ্রাপ্ত ঋণস্থিতির উপর গ্যারান্টি ফি পরিশােধ করতে হবে। এক্ষেত্রে যে সকল ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অব্যবহিত পূর্ববর্তী বছরের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক শ্রেণিকৃত ঋণের হার ৫ শতাংশ বা এর কম তাদের জন্য বার্ষিক ০.৫০ শতাংশ হারে এবং যে সকল ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকৃত ঋণের হার ৫ শতাংশের বেশী কিন্তু ১০ শতাংশের কম তাদের জন্য বার্ষিক ০.৭৫ শতাংশ হারে গ্যারান্টি ফি প্রদান করতে হবে;

(গ) উল্লিখিত গ্যারান্টি ফি ব্যতীত অন্য কোন ফি/চার্জ আদায়ের ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংকসমূহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা পরিপালনীয় হবে।

৪.১০। ক্রেডিট গ্যারান্টি ফি পরিশােধের সময়সীমা : গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পিএফআই-কে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টের অনুকূলে গ্যারান্টি ফি পরিশােধ করতে হবে। পরবর্তীতে, চলমান গ্যারান্টির ক্ষেত্রে প্রতি বছর তার অব্যবহিত পূর্ববর্তী বছর সমাপ্তির ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে গ্যারান্টি ফি আগাম পরিশােধ করতে হবে। অন্যথায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট পিএফআই এর চলতি হিসাব বিকলন করে গ্যারান্টি ফি আদায় করা হবে।

৪.১১। ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ : ঋণ অনাদায়ে বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী শ্রেণিকরণপূর্বক যথাযথভাবে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে মর্মে নির্দেশনা থাকলেও এ স্কিমের আওতায় গ্যারান্টি সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ শ্রেণিকৃত হলে একটি নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার বছরে গ্যারান্টি সুবিধাপ্রাপ্ত মােট ঋণের ৩০ (ত্রিশ) শতাংশ পর্যন্ত ঋণের বিপরীতে স্পেসিফিক প্রভিশন সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা গ্যারান্টি মেয়াদকালের জন্য অব্যাহতি প্রাপ্ত হবে।

৪.১২। ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়-দায়িত্ব :

(ক) অর্থায়নকারী ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব নিয়মাচার (Due diligence) যথাযথভাবে পরিপালনপূর্বক ঋণ মঞ্জুরী/বিতরণ/আদায় করবে। ঋণ বিতরণের পর ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বীয় উদ্যোগে তা তদারকী ও পরিবীক্ষণ করবে এবং ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করবে;

(খ) এ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক প্রদত্ত গ্যারান্টির যথার্থতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে যাচিত তথ্যাদিসহ প্রয়ােজনীয় দলিলাদি পিএফআই বাংলাদেশ ব্যাংককে সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে। তাছাড়া, পিএফআই-কে অবহিত করে এ ডিপার্টমেন্ট যে কোন সময় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিদর্শন করতে পারবে এবং পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলকে পিএফআই সকল প্রকার সহযােগিতা প্রদান করবে।

৪.১৩। ক্রেডিট গ্যারান্টির দাবি এবং নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া :

(ক) এ স্কিমের আওতায় গ্যারান্টিপ্রাপ্ত কোন ঋণ বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী মন্দমানে শ্রেণিকৃত হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত নীতিমালা অনুযায়ী পুনঃতফসিল/পুনর্গঠন করা যাবে এবং তা ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টকে অবহিত করতে হবে। তবে, গ্যারান্টিপ্রাপ্ত ঋণ তিন বার পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে। তৃতীয় বার পুনঃতফসিল করার (প্রযােজ্য ক্ষেত্রে) পর কোন ঋণ আদায় না হয়ে পুনরায় মন্দমানে শ্রেণিকৃত হলে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টে গ্যারান্টির বিপরীতে প্রাপ্য অর্থ দাবি (Claim) করা যাবে;

(খ) গ্যারান্টি দাবির আবেদন করার পূর্বে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ আদায়ের সকল প্রচেষ্টা গ্রহণসহ প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রযােজ্য ক্ষেত্রে মামলা দায়ের এবং অন্যান্য আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও যদি কোন ঋণ হিসাব মন্দমানে শ্রেণিকৃত হয় কেবল তখনি প্রযােজ্য ক্ষেত্রে আইনী প্রক্রিয়া শুরু (মামলা দায়ের) করে গ্যারান্টির বিপরীতে দাবি উত্থাপন করতে পারবে। তবে, মামলা সংক্রান্ত ব্যয় বিবেচনায় অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মামলাযােগ্য না হলে কুটির ও মাইক্রো খাতে গ্যারন্টি সুবিধাপ্রাপ্ত ২ (দুই) লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে আদালতে মামলা দায়ের ব্যতিরেকে ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টে গ্যারান্টির বিপরীতে প্রাপ্য অর্থ দাবি করা যাবে;

(গ) গ্যারান্টির বিপরীতে প্রদত্ত ঋণ মন্দমানে শ্রেণিকৃত হলে দাবির পরিমাণ হবে মন্দমানে শ্রেণিকৃত ঋণের আসলের গ্যারান্টিকৃত অংশ (Guaranteed Proportion of Principal Amount)। একক উদ্যোক্তা বা ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ অথবা পিএফআই-কে প্রদত্ত মােট গ্যারান্টি রেজিস্ট্রেশনের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ এর অদাবিকৃত অংশ, এ দুটির মধ্যে যা কম। অনাদায়ী সুদের জন্য কোনভাবেই গ্যারান্টি দাবি করা যাবে না;

(ঘ) গ্যারান্টির দাবি নিষ্পত্তির পরও ঋণ আদায়ের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আইনী পদক্ষেপসহ সকল ধরনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। গ্যারান্টির দাবি নিষ্পত্তির পর ঋণের বিপরীতে উদ্যোক্তা/গ্রাহক হতে কোন অর্থ আদায় হলে তা গ্যারান্টি কভারেজ এর আনুপাতিক হারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুকূলে ফেরত প্রদান করতে হবে;

(ঙ) কোন ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্যারান্টির আওতায় ঝুঁকি নির্ণয়ে সহায়ক এমন কোন তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে গােপন করলে অথবা ভুল তথ্য প্রদান করলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদ্যমান আইন/বিধি/নীতিমালার আওতায় প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৫। বিবিধ :

(ক) ঋণ বিতরণ ও আদায় সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময় সময় জারিকৃত নির্দেশনাবলী যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে;

(খ) এ নীতিমালায় উল্লেখ নেই এরূপ কোন বিষয়ে অথবা নীতিমালায় বর্ণিত কোন বিষয়ে অধিকতর স্পষ্টীকরণের আবশ্যকতা দেখা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে;

(গ) এ নীতিমালার পরিবর্তন বা সংশােধনের ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক সংরক্ষণ করে;

(ঘ) ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করা না হলে বা কোন শর্ত লংঘন করা হলে বা গ্যারান্টি আবেদনের সময় কোন তথ্য গােপন করলে বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে বা গ্যারান্টি ফি পরিশােধ না করলে সংশ্লিষ্ট ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত গ্যারান্টি বাতিল করার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংক এতদ্বারা সংরক্ষণ করে।

৬। ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং- ০৪, তারিখ: ১৯ জুলাই ২০২২ এর আওতায় বিনিয়ােগ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা অনুসরণপূর্বক গ্যারান্টি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে;

৭। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। এতদ্ব্যতীত, ক্রেডিট গ্যারন্টি সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে এসএমইএসপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০২০ এর মাধ্যমে জারিকৃত Manual of Credit Guarantee Scheme এবং তৎপরবর্তীতে এতদসংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

৮। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১৮ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলাে।

আপনাদের বিশ্বস্ত,

(মনােজ কুমার হাওলাদার)

পরিচালক (সিজিডি)

ফোনঃ ৯৫৩০২২১

কুটির ও মাইক্রো উদ্যোগে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা হতে সর্বোচ্চ ১ (এক) কোটি টাকা ক্রেডিট সুবিধা ২০২২: ডাউনলোড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *