সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা ২০২৩ । পেনশন স্কিম নিয়ে যে ১০টি প্রশ্নের উত্তর জেনে রাখুন

সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর নিয়ম ২০২৩ । পেনশন স্কিম নিয়ে যে ১০টি প্রশ্নের উত্তর জেনে রাখুন

সর্বজনীন পেনশন একটি ওয়েবসাইট ভিত্তিক সেবা-তবে শিঘ্রই অ্যাপ চালু হতে পারে – কিভাবে চালু করবেন আপনার পেনশন চলুন জেনে নিই- সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা ২০২৩

সর্বজনীন পেনশনে আসার নিয়ম কি? – সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য ‘ইউপেনশন‘ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। আগ্রহীদের www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। ‘ইউপেনশন’ ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের সময় কয়েকটি ধাপ মেনে চলতে হবে এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিকাশ রকেট, সোনালী ব্যাংক বা যে কোন ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করলেই কাজ শেষ।

পেনশন স্কিম চালু করতে কিভাবে কি করতে হবে? প্রথমেইউপেনশন ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে। এরপর ‘পেনশনার রেজিস্ট্রেশন’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তীতে একটি প্রত্যয়ন পাতা আসবে। সেখানে লেখা থাকবে ‘এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে আমি সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নই, সর্বজনীন পেনশন স্কিম বহির্ভূত কোন ধরনের সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হতে পেনশন সুবিধা গ্রহণ করি না, আমি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোন ধরনের ভাতা গ্রহণ করি না।‘ তবে, প্রত্যয়ন অংশে অবশ্যই সাবধানে ক্লিক করতে হবে। কারণ সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা আছে ‘ভুল তথ্য প্রদান করলে আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরত যোগ্য হবে না।’ ওই প্রত্যয়ন পাতার নিচে ‘আমি সম্মত আছি’ নামে একটি অপশন রাখা হয়েছে, সেখানে ক্লিক করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, রেজিস্ট্রেশন করুন পেইজে আবেদনকারীকে প্রথমে ‘প্যাকেজ/স্কিম’ নির্বাচন করতে হবে। পর্যায়ক্রমে ১০, ১৩ বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ই–মেইলের তথ্য দেওয়ার অপশন থাকবে। এই পেজের শেষ অংশ থাকবে ‘ক্যাপচা প্রদান করুন’ এবং পরবর্তী ধাপ ক্লিক । সঠিকভাবে ক্যাপচা দেওয়ার পরে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর ও ই–মেইলে একটি ওটিপি আসবে। ওই ওটিপি ফরমে ব্যবহার করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।

তৃতীয়ত, ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিতে হবে এবং এনআইডি অনুযায়ী এই পেজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনকারীর এনআইডি নম্বর, ছবি, বাংলা ও ইংরেজি নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা অটো চলে আসবে। আবেদনকারীর বার্ষিক আয়ের সম্ভাব্য পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে এবং নিজের পেশা, বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম সিলেক্ট করতে হবে।

চতুর্থত, ‘স্কিম তথ্য’ নামে আরেকটি পেজ/ট্যাব আসবে। এখানে মাসিক চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের সময় বেছে নিতে হবে। এখানে চাঁদা পরিশোধের জন্য মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক তিনটি অপশন থাকবে। এগুলো অবশ্যই চিন্তা ভাবনা করে লিখুন। যদিও আপনি চাইলে স্কিম তথ্য পরবর্তীতে পরিবর্তন করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী পেনশন পুন: নির্ধারণ হবে।

পঞ্চমত, এখন আপনাকে ব্যাংক তথ্য পেইজে গিয়ে ব্যাংক হিসাবের নাম ও নম্বর, হিসাবের ধরন (সঞ্চয়ী অথবা চলতি), ব্যাংকের নাম ও শাখার নাম উল্লেখ করে দিতে হবে। শাখার রাউটিং নম্বর জানা না থাকলে রাউটিং নম্বর জানা নেই বাটনে ক্লিক করে ব্যাংক, শাখা উল্লেখ করে দেখে নিতে পারবেন।

ষষ্ঠত, এবার নমিনির তথ্য দিতে হবে। সেখানে নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ উল্লেখ করতে হবে। চাইলে একাধিক নমিনি যোগ করা যাবে এবং শতকরা হারে নমিনির প্রাপ্যতা বন্টন করা যাবে তবে মোট নমিনির অংশ কোনভাবে ১০০ অতিক্রম করা যাবে না। নমিনির মোবাইল নম্বর, নমিনির সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি উল্লেখ করে দিতে হবে।

সপ্তমত, ফরমপূরণের শেষধাপ সম্পূর্ণ ফর্ম, এতক্ষণ যে তথ্য দিয়েছেন সেগুলো একনজড়ে দেখা যাবে। কোনো ভুল চোখে পড়লে এই পেজে তা সংশোধন করা যাবে। আপনি এখান থেকে পূরণকৃত আবেদন ফরম ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করবেন এবং কোন ভুল না থাকলে বা সকল তথ্য ঠিক মনে হলে আমি নিশ্চিত করছি-তে টিক দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করুন এ ক্লিক করলেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হবে।

অষ্টম ধাপ, ফরম পূরণ বা আবেদন সম্পন্ন করুন এ ক্লিক করার পরই অটো আপনাকে পেমেন্ট গেইটওয়েতে নিয়ে যাওয়া হবে। আপনি পেমেন্ট করুন এ ক্লিক করুন। যদি তখনও মনে হয়ে আবেদনে কোন ভুল রয়েছে তবে আপনি আবেদন সংশোধন করুনে ক্লিক করবেন এবং তথ্য সংশোধন করে পুনরায় সম্পন্ন করুন-এ ক্লিক করলে এই পেইজে আসতে পারবেন। পেমেন্ট করুন -এ ক্লি করলে সোনালী ব্যাংক, কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং মেন্যুর মাধ্যমে পেমেন্ট ইনফো দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন এবং পেমেন্ট সম্পন্ন হলে রিসিড পাবেন সেটি ডাউনলোড করুন।

সর্বশেষ ধাপ- ইউজার তৈরি করুন- এ ক্লিক করে আপনি অটো প্রাপ্ত ইউজার আইডি’র নিচের বক্সে পাসওয়ার্ড দুইবার ইনপুট করে ইউজার তৈরি করুন -এ ক্লিক করলে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সেট হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আপনি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগিন করতে পারবেন এবং প্রতি মাসের বা বছরের পেমেন্ট করতে পারবেন। ধন্যবাদ

জাতীয় পেনশন স্কিমে আবেদন করার নিয়ম / সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ধাপে ধাপে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করার পদ্ধতি দেখুন

সরকারি কর্মচারীদেরও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনা হবে তবে  সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির আগে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা সরকারি পেনশন স্কিমে অংশ নিতে করতে পারবেন না।

Caption: Apply for Pension Registration

সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৩ । সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে ১০টি প্রশ্নের উত্তর জানুন

  1. পেনশন স্কিমে মুনাফাসহ বছরে কত টাকা জমা হলো তা কীভাবে জানা যাবে? চাঁদাদাতা তার পেনশন আইডি দিয়ে ইউনিভার্সাল পেনশন সিস্টেমে প্রবেশ করে সহজেই বছর শেষে মুনাফাসহ জমা হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারবেন।
  2. চাকরি পরিবর্তন করলে নতুন পেনশন নম্বর নিতে হবে কি না? চাকরি পরিবর্তন করলে নতুন পেনশন নম্বর গ্রহণ করতে হবে না। শুধু জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
  3. চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর তিনি কীভাবে পেনশন পাবেন? চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর তার ব্যাংক হিসাবে অথবা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে মাসিক পেনশন দেওয়া হবে।
  4. শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করলেই পেনশন স্কিমে অংশ নেওয়া যাবে, নাকি হার্ড কপি জমা দিতে হবে? হার্ড কপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করে মাসিক টাকা জমা দিলেই হবে।
  5. গৃহিণীরা কোন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন? গৃহিণীরা স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য প্রযোজ্য সুরক্ষা স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।
  6. প্রবাস স্কিমে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করার পর কত দিনের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে? এনআইডি তৈরিতে যুক্তিগতভাবে সে সময়ের প্রয়োজন হবে, সেই সময়কালের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে।
  7. জাতীয় পেনশন স্কিমের যাবতীয় ব্যয় কি স্কিমে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের জমানো টাকা দিয়ে মেটানো হবে? না, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের যাবতীয় ব্যয় সরকার বহন করবে।
  8. কোনো ব্যক্তির কাছে মাসিক চাঁদার টাকা নগদ দেওয়া যাবে কি না? না, কোন ব্যক্তির কাছে চাঁদার টাকা নগদ জমা দেওয়া যাবে না। ব্যাংক, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে চাঁদার টাকা জমা দেওয়া যাবে।
  9. পেনশন স্কিমে জমা হওয়া টাকার গ্যারান্টর কে হবেন? জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারই জমা টাকার গ্যারান্টর।
  10. চাঁদাদাতা, নমিনি বা নমিনিরা মেয়াদ পূর্তির আগে মারা গেলে জমা টাকা কে পাবেন? সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ও উত্তরাধিকার সনদের ভিত্তিতে উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে জমা টাকা মুনাফাসহ তাকে বা তাদের দেওয়া হবে।

কিস্তি বা চাঁদা যদি সময় মত দিতে না পারি?

প্রবাসীদের প্রবাস স্কিমের ক্ষেত্রে ১২ মাস পর্যন্ত চাঁদা না দিলেও পেনশন স্কীম স্থগিত থাকবে না। অন্যদিকে আপনি সারা বছরের চাঁদা একই সাথেও পরিশোধ করতে পারবেন। তবে আপনাকে এজন্য বিলম্ব মাসুল গুণতে হবে। অন্যদিকে আপনি যদি সুরক্ষা স্কীমে থাকেন তবে আপনি ৩টি চাঁদা একাধারে পরিশোধ না করলে স্কিমটি স্থগিত থাকবে। জরিমানাসহ বকেয়া পরিশোধ করলে স্কিমটি পুনরায় চালু হবে। মোবাইল ব্যাংকিং এ চাঁদা পরিশোধের ক্ষেত্রে ০.৭০% চার্জসহ পরিশোধ করতে হবে এবং স্কীমের অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রেও ০.৭০% চার্জ প্রযোজ্য হইবে।

প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত ভিডিও দেখে আবেদন করুন: ভিডিও

জাতীয় প্রবাসী পেনশন স্কিম ২০২৩ । প্রবাসীরা ২০ বছরে চাঁদা দিয়ে মাসিক ৪৯,২৬৮ পেনশনে নিশ্চিন্ত জীবন

4 comments

  1. একজন চৌদ্দ বছর চাঁদা দিলে তার পেনশন হার কত হবে?

  2. বিকাশ এ সর্বজনীন পেনশনের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম

    1. সর্বজনীন পেনশন ওয়েবসাইটে পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে বিকাশে জমা দেওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *