নগদ বা পাওনা টাকার পরিবর্তে চেক নেয়ার নিয়ম ২০২২
পাওনাদারের নিকট টাকা চাইতে চাইতে আপনি যখন অস্থির – টাকার পরিবর্তে ব্ল্যাংক চেক – পাওনা টাকার পরিবর্তে চেক নেয়ার নিয়ম ২০২২
নগদ টাকার পরিবর্তে ফাঁকা চেক নিবেন? – পরিচিত কারও সাথে লেনদেনের ক্ষেত্রে আমরা চেক ব্যবহার করি। প্রিয়জনদের অর্থ ধার দিতেও আমরা স্বাক্ষরযুক্ত চেক রেখে দেই। পরবর্তীতে যখন কোন ভাবেই টাকা উঠানো যায় না তখন যাই মামলা করতে পুলিশের কাছে। আপনার চেক দিয়ে কি মামলা হবে? এ সব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো আজ।
চেক দিয়ে মামলা করার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে ব্যাংক হতে চেকটি ডিসঅনার করিয়ে আনতে হবে। যদি ব্যাক ডেট বা পোস্ট ডেটে চেকটি স্বাক্ষর করে থাকে। তবে ৬ মাস সময় অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত কোনভাবে ব্যাংক চেক Dishonour প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করবে না। চেক প্রত্যাখ্যাত প্রত্যয়ন পত্র ব্যতীত আপনি থানায় কারও নামে প্রতারণা মামলা করতে পারবেন। যদি আপনাকে দেনাদার ২ মাস পরে টাকা দিতে চায়, তবে দুই মাস পরে আপনি ব্যাংকে চেক উপস্থাপন করে দেখলেন যে, তার ব্যাংক হিসাবে টাকা নাই, অন্যদিকে তাৎক্ষনিক চেক বাউন্স করবে কিন্তু প্রত্যাখ্যাত প্রত্যয়ন পত্র ব্যাংক হতে নিতে পারবেন না।
তাহলে প্রশ্ন হলো কিভাবে চেক নিলে ভাল হয়? প্রথমত চেক নেয়ার সময় চেকে তারিখ দেওয়া থাকা যাবে না। দ্বিতীয়ত চেকে Pay To এর স্থানে ফাঁকা থাকা যাবে না। যে ব্যক্তি মামলা করবে তার নামে চেক ইস্যু করা থাকতে হবে। ব্যাংক হতে প্রত্যয়নপত্র নিতে চেকে যার না থাকবে তার নামে প্রত্যয়নপত্র ইস্যু হবে। তাই Cash or Self বা নিজ লেখা যেন না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবে।
দেনাদারের দেয়া বা কারও দেওয়া চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করে টাকা পেলেন না, তাহলে? আইন সব সময় আপনার পাশেই আছে। আপনি যদি এমন চেকের মাধ্যমে প্রতারিত হন, তাহলে চাইলেই আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। এই অপরাধের বিচারের জন্য হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন, ১৮৮১ নামের একটি আইন রয়েছে। এই আইনের ১৩৮ নম্বর ধারায় আপনি সেই প্রতারক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতিকার পেতে পারেন এবং তার কাছে থেকে তিন গুন টাকা আদায় করতে পারেন।
পাওনা টাকার পরিবর্তে চেক নেয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক থাকবেন / যে ভুল গুলো করলে মামলা করতে পারবেন না।
নাম ও টাকা এমাউন্ট না লিখে শুধু স্বাক্ষর যুক্ত চেক দিয়ে কি মামলা করা যাবে? নাম এবং টাকার পরিমান নিজের হাতে লিখলে যে সমস্যায় পড়বেন।
Caption: Blank Cheque is not allowed to asign case / To be aware of taking a cheque from others.
পাওনা টাকার চেক নেওয়ার ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- প্রথমত নিশ্চিত হউন ব্যাংক চেকটি তার নামে কিনা। অর্থাৎ এমআইসিআর (MICR) চেক বইয়ের পাতায় তার নাম, একাউন্ট ও ব্যাংকের নাম প্রিন্ট করা রয়েছে কিনা। মোট কথা ডিজিটাল বা অনলাইন চেক গ্রহণ করবেন। খেয়াল রাখুন অন্যের চেক যেন আপনাকে সাইন করে ধরিয়ে না দেয়। মনে রাখবেন এত ঘুরানোর পর যে চেকটি আপনাকে সান্তনা দেয়ার জন্য দিচ্ছে সেটি সঠিক কিনা খেয়াল রাখবেন।
- দ্বিতীয়ত, টাকার অংক এবং কথায় তার নিজ হাতে লিখান। টাকার অংক এবং কথায় লেখা ঠিক আছে কিনা এবং আপনার সামনে লিখান। যাতে কোন প্রকার ভুলত্রুটি এবং ঘষামাজা না হয়।
- তৃতীয়ত, Date বা তারিখ অবশ্যই ফাঁকা রাখবেন। কোন ক্রমেই তারিখ দিতে দিবেন না। আপনি হয়তো ভাবছেন যে, ৬ মাস মেয়াদ থাকে সে দুই মাসেই টাকা দিতে চাইছে ডেট দেই। ব্যাপারটা এমন নয়, আপনি ধরেই নিবেন যে, চেকটি ক্যাশ নাও হতে পারে। যে তারিখ ক্যাশ করার কথা আপনি নিজে ডেট বসিয়ে নিবেন। ডিসঅনার করাতে ডেট আপনার ইচ্ছামত বসিয়ে নিন।
- চতুর্থত, Pay to তে অবশ্যই আপনার বা পাওনাদারের নাম লিখাবেন। কোন ক্রমেই Cash বা নিজ এমন শব্দ ব্যবহার করবেন না এবং চেক দাতাকে দিয়েই আপনার নাম লিখিয়ে নিন। তার হাতের লেখা থাকলে কোন ক্রমেই অস্বীকার করতে পারবে না যে, তিনি চেকটিতে স্বাক্ষর করেন নি।
- ফাইনালি, চেকটি ফ্রেস কিনা দেখে নিবেন। চেকের পিছনের পাতায় যে, কোন স্বাক্ষর বা মোবাইল নম্বর বা কোন কিছু লেখা না থাকে। কোথাও কাটাকাটি হলে অবশ্যই কাউন্টার স্বাক্ষর করিয়ে নিন।
আপনি যদি চেকের মামলা খান তবে আপনার করণীয় কি ?
মামলা থেকে কিভাবে বাঁচবেন?– কোন ব্যাক্তিকে যদি আপনার প্রদত্ত অথবা আপনার চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করে এবং আপনার একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকা, স্বাক্ষরে গরমিল সহ অন্যকোন ত্রুটির কারনে যদি চেকটি ফেরত আসে তাহলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফেরত আসার কারন উল্ল্যেখ করে একটি ডিজঅনার স্লিপ প্রদান করবেন। উক্ত ডিজঅনার স্লিপ সহ কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন তাহা হলে আদালত আপনাকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করবেন। নোটিশ পাওয়ার পর বিচলিত না হয়ে একজন আইনজীবির সরনাপন্ন হউন ও যথাসময়ে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়ে নিন।