পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.)-এর ছুটি পরিবর্তন ২০২৫ । শুক্রবারের পরিবর্তে শনিবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে? - Technical Alamin
Latest News

পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.)-এর ছুটি পরিবর্তন ২০২৫ । শুক্রবারের পরিবর্তে শনিবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে?

সূচীপত্র

আসন্ন পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সাধারণ ছুটির তারিখ পরিবর্তন করেছে সরকার। পূর্বে ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. রোজ শুক্রবার এই ছুটি নির্ধারিত থাকলেও, এখন তা পরিবর্তন করে ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. রোজ শনিবার পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে-পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.)-এর ছুটি পরিবর্তন ২০২৫

ছুটি কি পরিবর্তন হলো? জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস শনিবার বন্ধ থাকবে। মূলত, চন্দ্র দর্শন সাপেক্ষে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদার সাথে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) পালনের সুবিধার্থে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, সারাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় শনিবার এই পবিত্র দিবসটি উদযাপন করবে।

ডিউটি করলে কি অধিকাল ভাতা পাওয়া যায়? যদি আপনাকে সরকারি ছুটির দিনে, যেমন ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.)-এর দিনে ডিউটি করতে হয়, তাহলে আপনি অধিকাল ভাতা (ওভারটাইম) পাওয়ার যোগ্য হতে পারেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত সরকারি কর্মচারীদের জন্য সাপ্তাহিক ছুটি বা উৎসবের দিনে কাজ করলে অতিরিক্ত ভাতা পাওয়ার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ধারা ১১৮ অনুযায়ী, উৎসবের ছুটির দিনে কাজ করলে একজন শ্রমিককে ১ দিন বিকল্প ছুটি এবং ২ দিনের মজুরি ক্ষতিপূরণমূলক ভাতা হিসেবে দিতে হবে। এর মানে, আপনি ছুটির দিনে কাজ করলে অতিরিক্ত বেতন পাবেন, যা আপনার সাধারণ বেতনের চেয়ে বেশি হবে। তবে, কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম হতে পারে। কিছু প্রতিষ্ঠান, যেমন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, তাদের কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট হারে ওভারটাইম ভাতার বিধান রাখে। এটি নির্ভর করে আপনার পদ এবং আপনার প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট বিধিবিধানের উপর। কিছু ক্ষেত্রে, ওভারটাইম ভাতার পরিবর্তে টিফিন ভাতা বা অন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতে পারে যদি অতিরিক্ত কাজের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকে। আপনার নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার অফিস বা প্রশাসনিক বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা সবচেয়ে ভালো হবে।

ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী কি? ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী উৎসব যা প্রতি বছর হিজরি বর্ষের তৃতীয় মাস রবিউল আউয়াল-এর ১২ তারিখে পালিত হয়। ‘ঈদ’, ‘মিলাদ’ এবং ‘নবী’ এই তিনটি আরবি শব্দ নিয়ে এর নামকরণ হয়েছে।

ঈদ: অর্থ আনন্দ বা উৎসব।

মিলাদ: অর্থ জন্ম।

নবী: অর্থ নবী বা রাসূল।

সুতরাং, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.)-এর অর্থ হলো নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মদিনের আনন্দোৎসব। এই দিনে মুসলমানরা মহানবী (সা.)-এর আগমনকে স্মরণ করে এবং তাঁর জীবন, আদর্শ ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করে। এটি একই সাথে তাঁর জন্মদিন ও ওফাতের দিন হিসেবেও বিবেচিত। এই দিনে মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মিলাদ মাহফিল, এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

হ্যাঁ, পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকে। পূর্ববর্তী নথিতে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, এটি একটি “সাধারণ ছুটি” (General Holiday)।

MOPA হলো “Ministry of Public Administration” বা “জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়”-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়, যা বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের সেবা প্রদান সম্পর্কিত বিষয়গুলো পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। এর প্রধান কাজ হলো সরকারি কর্মচারীদের ব্যবস্থাপনা, যেমন নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা, এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

Caption: Mopa

বাংলাদেশে কি কি ধর্মীয় দিবস পালিত হয়? বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা তাদের ধর্মীয় উৎসবগুলো যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে পালন করে। প্রধান প্রধান ধর্মীয় দিবসগুলো নিচে দেওয়া হলো:

  1. ইসলাম ধর্ম:

    ঈদুল ফিতর: এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে এই উৎসব পালিত হয়।

    ঈদুল আযহা: জিলহজ মাসের ১০ তারিখে এই উৎসবে পশু কোরবানি করা হয়।

    ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী: রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস পালিত হয়।

    আশুরা: মহররম মাসের ১০ তারিখে কারবালার শোকাবহ ঘটনাকে স্মরণ করে এই দিবসটি পালিত হয়।

    শবে বরাত: শাবান মাসের মধ্যভাগে এই রাতে মুসলিমরা ইবাদত-বন্দেগি করে।

    শবে কদর: রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে এই রাতটি তালাশ করা হয়, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।

    জুমাতুল বিদা: রমজান মাসের শেষ শুক্রবার।

     

  2. হিন্দু ধর্ম:

    দুর্গাপূজা: এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব, যা দেবী দুর্গার বিজয়কে উদযাপন করে।

    জন্মাষ্টমী: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবতা শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন।

    সরস্বতী পূজা: বিদ্যা ও জ্ঞান লাভের জন্য দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়।

    কালীপূজা: এটি শক্তি ও ধ্বংসের দেবী কালীর পূজা।

    দোলযাত্রা: এটি রঙের উৎসব বা হোলি নামেও পরিচিত।

    রথযাত্রা: রথে করে জগন্নাথ দেবের প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা করা হয়।

    লক্ষ্মীপূজা: ধন-সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর পূজা।

     

  3. বৌদ্ধ ধর্ম:

    বুদ্ধ পূর্ণিমা: গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধি লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ লাভের এই ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব।

    আষাঢ়ী পূর্ণিমা: এই দিনে বুদ্ধের ধর্মচক্র প্রবর্তন এবং বর্ষাবাস শুরু হয়।

    প্রবারণা পূর্ণিমা: এটি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস শেষ হওয়ার দিন।

     

  4. খ্রিস্ট ধর্ম:

    বড়দিন: ২৫শে ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে এই উৎসব পালিত হয়।

    পুণ্য শুক্রবার (গুড ফ্রাইডে): যিশু খ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার দিন।

    ইস্টার সানডে: যিশু খ্রিস্টের পুনরুত্থান দিবস।

    এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব কিছু ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব রয়েছে, যেমন:

    বৈসাবি: ত্রিপুরা, মারমা এবং চাকমা সম্প্রদায়ের এই নববর্ষের উৎসবটি তিনটি ভিন্ন উৎসবের সমন্বয়ে গঠিত: বৈসু (ত্রিপুরা), সাংগ্রাই (মারমা) এবং বিজু (চাকমা)।

বাংলাদেশে ঈদ ই মিলাদুন্নবী কিভাবে পালিত হয়?

বাংলাদেশে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) বেশ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সাথে পালিত হয়। এটি বাংলাদেশে একটি সরকারি ছুটির দিন। এই দিনে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করে।

সাধারণত, এই দিনে পালিত হওয়া কিছু কার্যক্রম হলো:

জাতীয় কর্মসূচি: সরকার দিবসটি পালনের জন্য বর্ণাঢ্য জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দেন।

পতাকা উত্তোলন ও ব্যানার প্রদর্শন: সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন এবং সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সড়কসমূহে ‘কালিমা তায়্যিবা’ লিখিত ব্যানার ও রঙিন পতাকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়।

উন্নত খাবার পরিবেশন: দেশের সকল সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতাল, কারাগার, শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস এবং এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়।

 

বিশেষ অনুষ্ঠান ও ক্রোড়পত্র: বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় এবং সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়।ধর্মীয় আলোচনা ও মাহফিল: মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা, মিলাদ, দোয়া মাহফিল, সেমিনার এবং ক্বিরাত ও হামদ-নাত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যার মধ্যে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ প্রান্তে পক্ষকালব্যাপী ইসলামিক বইমেলার আয়োজনও অন্তর্ভুক্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *