সেনাবাহিনীর বেতন-ভাতা বৃদ্ধিতে ‘আকাশ-পাতাল’ ফারাক ২০২৫ । ব্রিগেডের দাবি ৪২০০০ টাকা, অন্যপক্ষের প্রস্তাব ২৫০০০/- টাকা!
সেনাবাহিনীর সদস্যদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সদর দপ্তর ৮৬ স্বতন্ত্র সিগন্যাল ব্রিগেড, ঢাকা সেনানিবাসের একটি ইউনিট সেনা সদর এজির শাখায় একটি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। তবে এই প্রস্তাবনার উচ্চাভিলাষী অঙ্ক নিয়ে অন্য একটি পক্ষের ২৫,০০০/- টাকার প্রস্তাবনা তৈরি করার খবর আসায় সংশ্লিষ্ট মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিষয়টিকে ‘সেলুকাস’ বলে মন্তব্য করছেন।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ৮৬ স্বতন্ত্র সিগন্যাল ব্রিগেড ইউনিট তাদের প্রস্তাবে একজন কর্মীর সর্বনিম্ন মাসিক বেতন ৪২,০০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছে। এর পাশাপাশি অন্যান্য ভাতার ক্ষেত্রেও বেশ আকর্ষণীয় অঙ্ক প্রস্তাব করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—
- শিক্ষা ভাতা: প্রতি সন্তান ৫,০০০ টাকা
- যাতায়াত ভাতা: মাসে ৫,০০০ টাকা
- চিকিৎসা ভাতা: মাসে ১০,০০০ টাকা
- টিফিন ভাতা: মাসে ২,০০০ টাকা
- বৈশাখী ভাতা: ৫০%
- শ্রান্তি বিনোদন ছুটি: ২ বছর পর পর
তবে, এই উচ্চ দাবির বিপরীতে, একটি ভিন্ন পক্ষ থেকে সর্বনিম্ন মাসিক ২৫,০০০/- টাকা বেতনের একটি প্রস্তাবনা তৈরি করার খবর পাওয়া গেছে।
সামরিক বাহিনীর মতো একটি সুশৃঙ্খল ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন-ভাতার দাবিতে এমন দুটি প্রস্তাবনার মধ্যে ১৭,০০০ টাকার ব্যবধান তৈরি হওয়াকে ‘আকাশ-পাতাল’ ফারাক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
আলোচনার কেন্দ্রে ‘সেলুকাস’
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সেনা কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে, তখন একটি ইউনিট সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ৪২,০০০ টাকার একটি বাস্তবিক প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। সেখানে অন্য একটি মহল কী যুক্তিতে সর্বনিম্ন বেতন ২৫,০০০/- টাকার প্রস্তাব তৈরি করছে, তা বোধগম্য নয়।
একজন কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, “অর্থনৈতিক বাস্তবতা যেখানে ৪২ হাজার টাকার দাবিকে সমর্থন করে, সেখানে ২৫ হাজার টাকার প্রস্তাবনা সত্যিই হতাশাজনক। প্রাচীন গ্রীক বীর সেলুকাসের মতো বিস্মিত হয়ে বলতে হচ্ছে—’বিচিত্র এ দেশ!’“
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য উপযুক্ত বেতন-ভাতা নিশ্চিত করা কেবল তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মনোবল বজায় রাখার জন্যও অত্যন্ত জরুরি। এখন দেখার বিষয়, সেনা সদর এজির শাখা এবং পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই দুই বিপরীতমুখী প্রস্তাবনার মধ্যে ভারসাম্য এনে কর্মীদের জন্য কতটুকু যৌক্তিক ও সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নেয়।
এই নিউজটি আপনার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে আপনার দেওয়া মন্তব্যকে হাইলাইট করা হয়েছে। এটি বর্তমান আলোচনার কেন্দ্রে থাকা বিষয়টি স্পষ্ট করে তোলে।
বর্তমানে এই প্রস্তাবনাটি সেনাসদর, এজি’র শাখা (বেতন ভাতা এবং হিসাব পরিদপ্তর) হয়ে গঠিত ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি-২০২৫’-এ পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।