ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি: জেনে নিন করণীয়
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা প্রায়শই কোনো আগাম বার্তা ছাড়াই হঠাৎ আঘাত হানে। কিন্তু যথাযথ প্রস্তুতি এবং সচেতনতা এই আকস্মিক বিপদের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। সম্প্রতি একটি জনসচেতনতামূলক বার্তায় ভূমিকম্পের আগে, সময় এবং পরে নাগরিকদের কী কী করণীয়, সে সম্পর্কে সহজ নির্দেশিকা তুলে ধরা হয়েছে।
🚨 ভূমিকম্পের আগে আপনার প্রস্তুতি
ভূমিকম্পের আঘাত হানার আগেই নিজেদের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। এই প্রস্তুতিমূলক কাজগুলি দুর্যোগের সময় আপনার জীবন রক্ষা করতে পারে:
জরুরি ব্যাগ (Emergency Kit) প্রস্তুত: শুকনো খাবার, পানীয় জল, ফার্স্ট এইড কিট, টর্চলাইট, হুইসেল এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ একটি জরুরি ব্যাগ সব সময় প্রস্তুত রাখুন।
ভারী জিনিস গুছিয়ে রাখুন: আলমারি এবং তাকের উপর থেকে ভারী ও কাঁচের জিনিসপত্র নিচে বা সুরক্ষিত জায়গায় নামিয়ে রাখুন, যাতে কম্পনের সময় সেগুলি পড়ে গিয়ে আঘাত না করে।
বের হওয়ার পথ চেনা: পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়ির প্রতিটি কক্ষ থেকে দ্রুত এবং নিরাপদে বেরিয়ে আসার সবচেয়ে সহজ ও দ্রুততম পথটি চিহ্নিত করুন এবং অভ্যাস করুন।
⚠️ ভূমিকম্পের সময় করণীয়
কম্পন শুরু হলে আতঙ্কিত না হয়ে স্থির থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ জীবন বাঁচাতে পারে:
শান্ত থাকুন, দৌড়াদৌড়ি নয়: কম্পন শুরু হলে দৌড়াদৌড়ি না করে শান্ত থাকুন। মনে রাখবেন, বেশিরভাগ আঘাত ঘটে নিচে পড়ে যাওয়া বস্তু বা ভেঙে পড়া কাঠামোর কারণে।
‘ড্রপ, কভার ও হোল্ড অন’ নীতি: যদি সম্ভব না হয়, তবে টেবিল বা মজবুত কিছুর নিচে মাথা ও ঘাড় ঢেকে থাকুন (‘ড্রপ, কভার, এবং হোল্ড অন’ নীতি)।
খোলা জায়গা খুঁজুন: যদি দ্রুত বাইরে যেতে পারেন, তবে বৈদ্যুতিক খুঁটি, গাছ বা ভবন থেকে দূরে খোলা জায়গায় দাঁড়ান।
🩹 ভূমিকম্পের পরে আপনার দায়িত্ব
কম্পন থেমে যাওয়ার পরেও সতর্কতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
ক্ষতি যাচাই করুন: নিজের ও চারপাশের পরিবেশের ক্ষতির পরিমাণ দেখে নিন। আহতদের প্রয়োজন হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিন।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: গ্যাস-বৈদ্যুতিক লাইনে কোনো ছিদ্র বা ক্ষয়ক্ষতি হলে দ্রুত তা বন্ধ করুন।
ভেঙে পড়া ভবনে প্রবেশ নয়: ভূমিকম্পে ভাঙা ভবনে বা ক্ষতিগ্রস্ত কাঠামোতে পুনরায় প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকুন।
জরুরি যোগাযোগ: জরুরি সহায়তার জন্য প্রয়োজনে ৯৯৯-এ কল করুন।
এই নির্দেশিকা স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দেয়: সতর্কতা মানলে কমবে ঝুঁকি, বাড়বে নিরাপত্তা। প্রতিটি নাগরিকের উচিত এই সহজ নিয়মগুলি মেনে চলার মাধ্যমে নিজেদের এবং সমাজের দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা।


