বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নতুন নির্দেশনা ২০২৫ । স্ত্রী/স্বামী সন্তানদের সরকারি সফর সঙ্গী করা যাবে না? - Technical Alamin
Latest News

বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নতুন নির্দেশনা ২০২৫ । স্ত্রী/স্বামী সন্তানদের সরকারি সফর সঙ্গী করা যাবে না?

বাংলাদেশের সরকারি বিশিষ্টজন ভ্রমণের ক্ষেত্রে সফর সঙ্গী নিয়ে যাওয়াটা একটি ট্র্যাডিশন হয়ে দাড়িয়েছে-অতিরিক্ত সফরসঙ্গী নেওয়াটা হতে বিরত রাখার নির্দেশনা–বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নতুন নির্দেশনা ২০২৫

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে অবশ্যই বিদেশ ভ্রমণ হয়? হ্যাঁ। এটি আর করা যাবে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ হওয়াটা বাধ্যতামূলক বা সাধারণ নিয়ম নয়। বিদেশ ভ্রমণের অর্থায়ন বিভিন্ন উৎস থেকে হতে পারে, যেমন: নিজের অর্থে ভ্রমণ করা, চাকরিসূত্রে নিজের কর্মস্থান বা কোম্পানির খরচে ভ্রমণ, সরকারি প্রয়োজনে বা প্রশিক্ষণের জন্য সরকারের অর্থায়নে ভ্রমণ, কোনও সেমিনার, কনফারেন্স বা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আয়োজক সংস্থার অর্থায়নে ভ্রমণ। স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের অধীনে ভ্রমণ। কিছু ক্ষেত্রে, প্রকল্পের অংশ হিসেবে বা অন্য কোনও কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কারও ভ্রমণের খরচ বহন করতে পারে।

একান্ত সচিব/সহকারী একান্ত সচিবদের সহযাত্রী হিসাবে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারে? হ্যাঁ। তবে নতুন আদেশ জারি হওয়ার পর বিরত থাকতে হবে। হ্যাঁ, একান্ত সচিব (Private Secretary – PS) বা সহকারী একান্ত সচিব (Assistant Private Secretary – APS)-রা সাধারণত তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (যেমন: মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব ইত্যাদি)-দের সহযাত্রী হিসেবে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন। ভ্রমণের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজে সহায়তার জন্য পিএস বা এপিএস-এর উপস্থিতি প্রয়োজনীয় বা অপরিহার্য বিবেচিত হতে হবে। যেমন – মিটিংয়ের সময় নোট নেওয়া, যোগাযোগ সমন্বয় করা, ভ্রমণসূচি পরিচালনা করা ইত্যাদি। যেকোনো সরকারি বিদেশ সফরের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের (যেমন: প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়) অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এই অনুমোদনের অংশ হিসেবেই নির্ধারণ করা হয় কে বা কারা সফরে যাবেন।

সফর সঙ্গী হতে কি জিও জারি করতে হয়? পিএস বা এপিএস-এর নাম অনুমোদিত তালিকায় এবং সরকারি আদেশে (Government Order – GO) অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। সরকারি সফরের আকার এবং বাজেট সংক্রান্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করতে হয়। প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা সীমিত রাখা হয় এবং প্রয়োজনীয়তা কঠোরভাবে যাচাই করা হয়। সুতরাং, যদি সফরের প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তার জন্য একান্ত সচিব বা সহকারী একান্ত সচিবের অন্তর্ভুক্তিকে কর্তৃপক্ষ অপরিহার্য মনে করে এবং সে অনুযায়ী সরকারি আদেশ জারি হয়, তবেই তারা সহযাত্রী হিসেবে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন। এটি স্বয়ংক্রিয় নয়, বরং প্রয়োজনীয়তা ও অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল।

সরকারি সফর সঙ্গী করা নিয়ে নির্দেশনা ২০২৫ । ব্যয় সংকোচনে নিয়ম বর্হিভূত সফর সঙ্গী লিমিট রাখা হয়েছে

সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী অথবা যাদের কাজের সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ জড়িত, তাদের ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ গ্রহণ করা নৈতিকতা এবং আইনগত দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এটি স্বার্থের সংঘাত (conflict of interest) তৈরি করতে পারে এবং অনেক দেশে (বাংলাদেশ সহ) সরকারি চাকরি বিধিমালা বা দুর্নীতি দমন আইনের পরিপন্থী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সুতরাং, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ সম্ভব হলেও, এটি একমাত্র বা আবশ্যক উপায় নয় এবং নির্দিষ্ট কিছু পেশা বা পদের ক্ষেত্রে এটি অনৈতিক ও নিয়মবিরুদ্ধ হতে পারে।

Caption: Ex Bangladesh Travel

সফর সঙ্গী সীমিতকরণ নির্দেশনা ২০২৫ । উপদেষ্টাদের অযাচিত সফর সঙ্গী হওয়া যাবে না?

  1.  ঠিকাদার/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ণে অবশ্যই বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
  2. জরুরী কারণ ব্যতীত মাননীয় উপদেষ্টা বা সিনিয়র সচিব/সচিব মহোদয়গণের একান্ত সচিব/সহকারী একান্ত সচিবদের সহযাত্রী হিসাবে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
  3. সরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ কর্তৃক তাদের স্ত্রী/স্বামী-সন্তানদের সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যাবেনা।

সরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ কর্তৃক তাদের স্ত্রী/স্বামী-সন্তানদের সফরসঙ্গী করতে পারে?

কর্মকর্তাগণ সাধারণত নিয়ে যেতেন। তবে না, সাধারণত সরকারি খরচে বা সরকারিভাবে আয়োজিত বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ তাদের স্ত্রী/স্বামী বা সন্তানদের সফরসঙ্গী হিসেবে নিতে পারেন না। সরকারি ভ্রমণের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ শুধুমাত্র দাপ্তরিক বা রাষ্ট্রীয় কাজের উদ্দেশ্যেই ব্যয় করা হয়। কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত ভ্রমণের খরচ সরকারি তহবিল থেকে বহন করার নিয়ম নেই। সরকারি বিদেশ সফরে শুধুমাত্র সেইসব ব্যক্তিকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয় যাদের উপস্থিতি উক্ত সফরের দাপ্তরিক বা রাষ্ট্রীয় কাজের জন্য অপরিহার্য। স্ত্রী/স্বামী বা সন্তানদের উপস্থিতি সাধারণত দাপ্তরিক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিবেচিত হয় না। বিদেশ সফরের জন্য যে সরকারি আদেশ জারি করা হয়, তাতে শুধুমাত্র অনুমোদিত কর্মকর্তাদের নামই উল্লেখ থাকে যারা সরকারি প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে ভ্রমণ করবেন। পরিবারের সদস্যদের নাম সেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকে না। বাংলাদেশের “সরকারি চাকরি (বিদেশ ভ্রমণ) বিধিমালা” এবং সংশ্লিষ্ট আর্থিক নিয়মাবলী অনুযায়ী, সরকারি খরচে পরিবারের সদস্যদের বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ নেই।

ব্যক্তিগত খরচে নেওয়া সম্ভব কি? যদি কোনো কর্মকর্তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে (যেমন: বিমান ভাড়া, থাকা-খাওয়া, ভিসা ইত্যাদি সব খরচ নিজে বহন করে) তার স্ত্রী/স্বামী বা সন্তানদের সাথে নিতে চান, তবে তা করতে পারেন যদি: এটি তার সরকারি দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকার ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে। ভ্রমণের আয়োজক বা সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়মে কোনো বাধা না থাকে। তবে, এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, পরিবারের এই সদস্যরা সরকারি প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবেন না এবং তারা সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রটোকল, নিরাপত্তা বা অন্য কোনো সুবিধা পাবেন না। তাদের থাকা-খাওয়া এবং অন্যান্য সকল কর্মকর্তাকে নিজ দায়িত্বে ও নিজ খরচে করতে হবে।

কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রটোকলের অংশ হিসেবে অনেক সময় তাদের স্বামী/স্ত্রী  (First Lady/Gentleman) সফরসঙ্গী হতে পারেন। কিন্তু এটি সাধারণ সরকারি কর্মকর্তা বা এমনকি মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও সাধারণত প্রযোজ্য নয়।সুতরাং, মূল উত্তর হলো – সরকারিভাবে (অর্থাৎ সরকারি খরচে ও ব্যবস্থাপনায়) কর্মকর্তাদের স্ত্রী/স্বামী-সন্তানদের বিদেশ সফরে সফরসঙ্গী করার নিয়ম নেই।
   
   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *