International Pay Scale 2025 । আন্তর্জাতিক পে স্কেলের আলোকে বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো?
বিশ্বব্যাপী সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো এবং গ্রেড সংখ্যা বিশ্লেষণ করলে বাংলাদেশের বর্তমান বেতন ব্যবস্থার একটি চিত্র পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেশের পে স্কেলের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বেতন কাঠামোয় কী ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। – International Pay Scale 2025
সর্বনিম্ন বেতন কত হওয়ার উচিত? ২০২৫ সালে বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামোয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন প্রত্যাশা করা যায়। প্রথমেই গ্রেড সংখ্যা, জি গ্রেড সংখ্যায় খুব বড় ধরনের পরিবর্তন নাও আসতে পারে, তবে বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য কমাতে এর পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিছু গ্রেড কমিয়ে আনা বা কয়েকটি স্তরে একীভূত করার সম্ভাবনা থাকতে পারে। সর্বনিম্ন মূল বেতন মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের ২০২৫ সালের পে স্কেলে সর্বনিম্ন মূল বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করে এটি ৮,২৫০ টাকা থেকে বেড়ে কমপক্ষে ২০,০০০-২৫,০০০ টাকা বা তারও বেশি হওয়া উচিত বলে অনেকেই মনে করেন।
সর্বোচ্চ মূল বেতন কত হওয়ার উচিত? সর্বোচ্চ মূল বেতনের ক্ষেত্রেও একটি যৌক্তিক বৃদ্ধি প্রত্যাশিত। ভারতের মতো দেশে যেখানে সর্বোচ্চ মূল বেতন ২,৫০,০০০ রুপি, সেখানে বাংলাদেশের বেতন কাঠামোয় একটি উল্লেখযোগ্য upward adjustment দরকার। আশা করা যায়, ২০২৫ সালে এটি ১,০০,০০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত বেতন কাঠামো নিশ্চিত করবে। আন্তর্জাতিক পে স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামোয় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা হলে তা কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে? বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো (পে স্কেল) আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন দেশের পে স্কেল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশে গ্রেড সংখ্যা বেশি হলেও বেতনের পরিমাণ, বিশেষ করে সর্বোচ্চ বেতনের ক্ষেত্রে, ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান। এ অবস্থায় ২০২৫ সালে নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নে আন্তর্জাতিক মান ও দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। গ্রেড সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান মধ্যমানে। ফিলিপাইনের গ্রেড সংখ্যা সবচেয়ে বেশি (৩৩টি), অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে এটি মাত্র ১৫টি।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বনিম্ন মূল বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ভারতেরও সর্বনিম্ন মূল বেতন বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বাংলাদেশের সর্বনিম্ন মূল বেতন, যা ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী নির্ধারিত, তা বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
সর্বোচ্চ মূল বেতনের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন এবং কেনিয়ার বেতন কাঠামো বাংলাদেশের তুলনায় বেশ এগিয়ে। ভারতের সর্বোচ্চ মূল বেতনও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি।
Caption:
আন্তর্জাতিক trend এবং প্রশাসনিক efficiency বাড়ানোর জন্য বর্তমান ২০টি গ্রেড কমিয়ে ১৬-১৮টি-তে নামিয়ে আনা যেতে পারে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি মজুরির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সর্বনিম্ন মূল বেতন ২০,০০০ – ২২,০০০ টাকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। ২০২৫ সালে বাংলাদেশের সরকারি বেতন কাঠামো নিম্নরূপ হওয়া উচিত বলে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে
- বেতন গ্রেড সংখ্যা বাড়িয়ে আনতে হবে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে, যা বর্তমানে ২০ মাত্র, যাতে কর্মচারীদের কারিগরি দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও দায়িত্বের পরিমাণ অনুযায়ী সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয়।
- সর্বনিম্ন বেতন কমপক্ষে ২৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা উচিত, কারণ বর্তমানে সল্পবেতনের জন্য অনেক কর্মচারী জীবনযাত্রায় সংকটে ভুগছেন এবং চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন।
- সর্বোচ্চ বেতন ধারাবাহিক ও যুক্তিযুক্ত বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রায় ১,৫০,০০০ টাকার কাছাকাছি আনতে হবে, যা সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষ দক্ষ কর্মীদের যথাযথ মর্যাদা দেবে।
- বেতন কাঠামোকে বাজারের বাস্তব মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে রিভাইজ করতে হবে, কারণ দীর্ঘদিন বেতন কাঠামো অপরিবর্তিত থাকায় কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
- বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি মহার্ঘ ভাতা ও অন্যান্য প্রণোদনা বৃদ্ধি করাও জরুরি, যাতে সরকারি কর্মচারীরা অর্থনৈতিক চাপ থেকে মুক্তি পায়।
- সার্বিকভাবে, ২০২৫ সালের বেতন কাঠামোতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি উদার, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পে স্কেল বাস্তবায়ন জরুরি যা কর্মপ্রেরণা বৃদ্ধি করবে ও আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
- বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন মূল বেতন ৮,২৫০ টাকা (২০১৫ সাল)। এটি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। ২০২৫ সালের জন্য পরিকল্পনা সর্বনিম্ন মূল বেতন ২৫,০০০ টাকায় উন্নীত করা উচিত। এতে কর্মচারিদের জীবনমান উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাবে।
সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের বিশাল ব্যবধান কি?
হ্যাঁ। বেতনের পরিমাণের দিক থেকে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের চেয়ে notably পিছিয়ে। ২০১৫ সালের স্কেল অনুযায়ী বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের মধ্যে অনুপাত প্রায় ১:৯.৫। অন্যান্য দেশে এই অনুপাত নিম্নরূপ:
দেশ | সর্বনিম্ন বেতন (স্থানীয় মুদ্রা) | সর্বোচ্চ বেতন (স্থানীয় মুদ্রা) | অনুপাত (সর্বোচ্চ/সর্বনিম্ন) |
---|---|---|---|
বাংলাদেশ | ৮,২৫০ টাকা | ৭৮,০০০ টাকা | ≈ ৯.৫ : ১ |
ভারত | ১৮,০০০ রুপি | ২,৫০,০০০ রুপি | ≈ ১৩.৯ : ১ |
যুক্তরাষ্ট্র | ১৮,৭৮৫ ডলার | ১,০৫,১২৩ ডলার | ≈ ৫.৬ : ১ |
পাকিস্তান | ৯,১৩০ রুপি | ৮৫,৭০০ রুপি | ≈ ৯.৪ : ১ |