ইউটিউব থেকে কেমন আয়

ইউটিউব থেকে কেমন আয় আসে । ইউটিউবে কত ভিউতে কত টাকা?

ইউটিউব এখন খুবই জনপ্রিয় স্ট্রিমিং মিডিয়া। এখানে বিনোদন থেকে শিক্ষামূলক সব ধরনের ভিডিও পাওয়া যায়।

প্রয়োজনে বা সময় কাটানোর জন্য আমরা ইউটিউব ব্রাউজ করে থাকি। ইউটিউব ব্রাউজে ইউটিউবের চ্যানেলের মালিক গুগল অ্যাডসেন্স হতে ইনকাম পেয়ে থাকেন। বর্তমানে প্যাসিব ইনকামের জন্য ইউটিউব খুবই জনপ্রিয় মাধ্যম।

একটি Personal Youtube Channel হতে কি পরিমান ডলার আয় হয়?

স্বপন আহমেদ নামে একজন যুবক একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলেছে। সাধারণ বিনোদনের জন্যই তিনি ভিডিও এডিট করে তার নিজের ইমেইজ ও ভিডিও প্রতিস্থাপন করে ফানি ভিডিও তৈরি করে থাকে। কিছু ফানি ভিডিও এর মাধ্যমেই তিনি আবার জন সচেতনামূলক প্রচারণা চালিয়ে থাকেন। আসুন গত ২০ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে প্রকাশিত তার একটি ভিডিও হতে কত আয় হয়েছে তা দেখে নিই। একটি (sapan ahamed) ইউটিউব ভিডিও ইনকাম ক্যালকুলেটর ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা তার আনুমানিক ইনকাম বের করবো। তার এই ভিডিটিএত আজ পর্যন্ত ১ মিলিয়ন ভিউ রয়েছে। এটি ৩ মিনিটের একটি ভিডিও তিনি এই ভিডিওতে “হিরো আলম কে উচিৎ শিক্ষা দিলেন স্বপন আহমেদ” শিরোনামে ট্রল ভিডিও তৈরি করেছেন। আসুন এ ভিডিও থেকে তিনি কত টাকা আয় করেছেন তার একটি টুল ব্যবহার করে বের করে দেখি।

তিনি তার একটি ভিডিও’র মাধ্যমে ১৮৯৫ ডলার আয় করেছেন। অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ১৮৯৫*৮৪ = ‌১,৫৯,১৮০ টাকা। এই ভিডিওটির এত ভিউ এমনিতেই আসে নি, তার চ্যানেলে  ১ লক্ষ ৫৮ হাজার সাবস্ক্রাইব রয়েছে। অর্থাৎ কোন ভিডিও ভাইরাল না হলেও তার চ্যানেলে পাবলিশ হলেই প্রায় ১.৫ লক্ষ ভিউ হয়ে যায়। তবে কোয়ালিটি ভিডিও যদি আপলোড করা যায় তবে আয় আসবেই তা সেটি বিনোদন বা শিক্ষা মূলক বা যে কোন ভিডিওই হোক না কেন। যদিও উপরের আনুমানিক আয় সম্পূর্ণ প্রকৃত হয় না। আবার বাংলাদেশের ভিউ সিটিআর এবং সিপিসি খুবই কম যদি আমরা ১৮৯৫ ডলারের পরিবর্তে ৯০০ ডলারও ধরে নিই তাহলেও সেটি একেবারে কম নয়। ৯০০*৮৪ = ৭৫৬০০ টাকা একটি মাত্র ৩ মিনিটের ভিডিও’র জন্য কোন ক্রমেই কম নয়। আবার এটি প্যাসিব ইনকাম যতদিন ভিডিও ভিউ হবে ততদিন পর্যন্ত আয় হতেই থাকবে।

এবার আসুন একটি ইন্টারভিউ চ্যানেলের একটি ভিডিও থেকে কি পরিমাণ হয় দেখে নিই

ইন্ডিয়ান একটি অনলাইন ইন্টারভিউ চ্যানেল যেটির মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের এনে তাদের সফলতার কাহিনী তুলে ধরা হয়। আপনি অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও গুলো দেখে শিখতে পারেন কাজ অথবা নিজেকে চার্জ করে নিতে পারেন যাতে কাজে স্পিড পান। আসুন Satish K Video এই ইউটিউব চ্যানেলটি নিয়ে একটি জরিপ করি। এ চ্যানেলটিতে ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে, যে ভিডিওটি নিয়ে সার্ভে করবো তাতে আজ পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪১ হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। ১৪১০১৪ ভিউয়ের জন্য সতীশ ২৬১ ডলার আয় করেছেন। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ২৬১*৮৪= ২১,৯২৪ টাকা হয়। এই ভিডিওটিও যতদিন পর্যন্ত মানুষ দেখাতে থাকবে তত দিন পর্যন্ত আয় হতে থাকবে। এই ভিডিও হতে মাত্র ০২ মাসে তিনি ২১ হাজার টাকা আয় করেছেন।

আপনার যদি কোন বিষয় বিস্তর নলেজ থাকে অথবা আপনি নাজ, গান, কবিতা আবৃত্তি অথবা টেকনিক্যাল জ্ঞান বা অন্য যে কোন দক্ষতা থাকে আপনি তা ব্যবহার করে ইউটিউব থেকে আয়ের পথ তৈরি করে নিতে পারেন।

ইউটিউবে কত ভিউতে কত টাকা?

ইউটিউবে ভিউস থেকে টাকা উপার্জনের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্কেল নেই। ইউটিউবে টাকা উপার্জনের পদ্ধতি একটি সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় নির্ভর করে, যা ভিডিওগুলির প্রকাশ, দেখার হার এবং অনুষ্ঠানিক পার্টনারশিপের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত করে। মূলত, ইউটিউবে টাকা উপার্জনের প্রধান উপায় হ’ল ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম অথবা ইউটিউব প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে ইউটিউবাররা ভিডিও মনে রাখেন যা সম্পর্কিত পরিচিত নয়। এটি একটি নিয়মিত নিরীক্ষণ প্রক্রিয়ায় হয় এবং প্রমাণিত হয় যে দর্শকদের দ্বারা পুরোপুরি দেখা হয়েছে এবং যদি আপনার চ্যানেলে মিল যায় 1,000 সাবস্ক্রাইবার এবং 4,000 ঘন্টা দেখার সময় পাওয়া যায়, তাহলে আপনি প্রোগ্রামে অনুরোধ করতে পারেন। অনুমোদিত হলে, আপনি ইউটিউবে রেভেনিউ উপার্জন করতে পারবেন, যা ক্লিক-ভিউ এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উপার্জিত হয়।

ইউটিউব প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ পাওয়া যায় যার মাধ্যমে সদস্যরা ইউটিউবে বিজ্ঞাপনহীন মজা পাবেন এবং কিছু বিশেষ সুবিধাও পাবেন। সদস্যদের প্রতিটি মাসের জন্য ইউটিউব একটি প্রদত্ত পরিমাণ মূল্য উপার্জন করে, যা আপনার প্রদর্শিত ভিডিওগুলির ভিউসের উপর ভিত্তি করে নয়। সুতরাং, ইউটিউবে ভিউস থেকে কত টাকা আপনি উপার্জন করতে পারেন সেটি বিদ্যমান প্রক্রিয়া ও সীমাবদ্ধতার উপর ভিত্তি করে। প্রতিটি ইউটিউবারের উপার্জন পদ্ধতি পরিবর্তন করতে পারে এবং তা একইও হতে পারে না।

ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায় কি?

ভিডিও না বানিয়েও ইউটিউব থেকে আপনি ইনকাম উপার্জন করতে পারেন। একটি কয়েকটি পদ্ধতি নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  1. ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম (YouTube Partner Program): ইউটিউবে পার্টনার প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি অন্যান্য সংস্থা বা ব্রান্ডের বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় উপার্জন করতে পারেন। আপনি পার্টনার প্রোগ্রামে যোগদান করতে হবেন এবং এটি অনুমোদন প্রাপ্ত হলে আপনি আপনার ভিডিওগুলির মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। উপার্জিত আয় আপনার ভিডিওর ভিউস, ক্লিক ভিউস, বিজ্ঞাপনের প্রকার ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে।
  2. এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing): এফিলিয়েট মার্কেটিং একটি প্রকার পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম, যেখানে আপনি প্রমোট করা পণ্যের মাধ্যমে কমিশন উপার্জন করতে পারেন। আপনি অন্যান্য ওয়েবসাইট বা ব্লগে এফিলিয়েট লিঙ্ক দিয়ে পণ্যগুলি প্রমোট করতে পারেন এবং যদি কেউ আপনার দ্বারা প্রমোট করা পণ্যটি কিনে থাকেন, তবে আপনি কমিশন পাবেন।
  3. স্পন্সরশিপ (Sponsorship): আপনি আপনার চ্যানেলে বা ইউটিউব ভিডিওগুলিতে স্পন্সরশিপ গ্রহণ করতে পারেন। এটি অন্যভাবেও পেইড কনটেন্ট বলা যেতে পারে। কোম্পানিসমূহ আপনার দ্বারা প্রদর্শিত ভিডিওগুলির স্পন্সর হয়ে উপস্থাপন করতে চাইতে পারে এবং তার পরিবর্তে টাকা প্রদান করতে পারে। আপনি প্রতিটি স্পন্সরশিপ চুক্তিতে কিছু বিশেষ কাজ করতে পারেন, যেমন পণ্য প্রদর্শন বা প্রতিনিধিত্ব করা।

উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলি কেবলমাত্র কিছু উদাহরণ এবং আপনার ইনকাম উপার্জনের অপশনগুলি এটা নয়। আপনি ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে আরও অনেক পদ্ধউপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলি কেবলমাত্র কিছু উদাহরণ এবং আপনার ইনকাম উপার্জনের অপশনগুলি এটা নয়। আপনি ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে আরও অনেক পদ্ধতিতে আয় উপার্জন করতে পারেন। কিছু অপশনগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  1. প্রোডাক্ট লঞ্চ: আপনি নিজের প্রোডাক্ট বা সেবা লঞ্চ করতে পারেন এবং ইউটিউবে এর প্রচার করতে পারেন। এটি আপনাকে নিজের প্রোডাক্ট বা সেবা বিক্রয় করতে সহায়তা করবে এবং আপনি সরাসরি আপনার সামর্থ্যগুলি প্রদর্শন করতে পারবেন।
  2. প্রিমিয়াম সামগ্রী: আপনি আপনার চ্যানেলে মূল্যবান ও প্রিমিয়াম সামগ্রী প্রদান করতে পারেন। এটি সাধারণ সামগ্রীর চেয়ে বেশি মান ধারণ করে এবং আপনার দর্শকগণ পেইড সাবস্ক্রিপশন করতে পারেন যেটি আপনাকে অতিরিক্ত ইনকাম উপার্জন করতে সাহায্য করবে।
  3. উপার্জনশীল ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন: ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন সদস্যদেরকে অজানা বিজ্ঞাপনহীন ভিডিও দেখতে এবং কিছু বিশেষ সুবিধা পেতে দেয়। সাবস্ক্রাইবারদের প্রদত্ত সাবস্ক্রিপশন ফি থেকে আপনি আয় উপার্জন করতে পারেন।
  4. লাইভ স্ট্রিমিং: আপনি লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারেন এবং দর্শকদের লাইভ চ্যাট এবং স্যাম্পলিং মাধ্যমে টিপস, উপায় এবং মার্কেটিং পরামর্শ দিতে পারেন। আপনি লাইভ স্ট্রিমিং এর মাধ্যমে প্রেসেট টিপস এবং দরকারী উপকরণের লিঙ্ক প্রদান করতে পারেন এবং এই উপকরণের প্রদানের জন্য কমিশন পাওয়া যায়।

এইভাবে, ইউটিউবে ভিডিও না বানিয়েও আপনি ইনকাম উপার্জন করতে পারেন।

UPWORK থেকে আয় করার নিয়ম । ফ্রিল্যান্সিং করে কি কোটিপতি হওয়া যায়?

2 comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *