মুসলিম উত্তরাধিকার আইন
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন কি? ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কোন মুসলমান মারা গেলে তার ফেলে যাওয়া সম্পত্তি বা ত্যাজ্য সম্পত্তি কিভাবে কাদের মধ্যে বন্টন করা হবে সে সম্পর্কিত বিধানকে মুসলিম উত্তরাধিকার বা ফারায়েজ বলে।
উত্তরাধিকার আইনের উৎস:
১. কোরআন
২. হাদিস
৩. ইজমা
৪. কিয়াস
৫. আরবীয় প্রথা
৬. বিধিবন্ধ আইন
৭. আদালতের সিদ্ধান্ত
ক. হযরত মুহাম্মদ (স) এর অভিমত, উক্তি, শিক্ষা, উপদেশ, অনুশাসন এবং বানীর সংকলন বিষয়ক মন্তব্য
খ. হযরতের দৈনন্দিন জীবন যাপন প্রণালী, কর্মতৎপরতা এবং হযরত কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলী বিষয়ক তৎপরতা,
গ. হযরতের পছন্দনীয় কার্যাবলী এবং অপছন্দনীয় কার্যসমূহের বিবরণ মূলক ব্যক্তব্য।
ঘ. হযরত কর্তৃক তার সাহাবীদের ক্ষেত্রে ইঙ্গিতবাহী সম্মতি বা নীরব সমর্থন।
যেমন-হযরত ফাতেমা (রা) একবার দাবী করেন যে, তিনি তাঁর সম্পদের ওয়ারিশ। কিন্তু এর উত্তরে হযরত আবু বকর (রাJ রাসূল্লাহর পবিত্র বানী” আমরা, নবীরা কোন সম্পদ ওয়ারিশদের জন্য রেখে যাইনা; আমাদের যা থাকে, তা অবশ্যই খয়রাতের জন্য”। এই হাদিসের সত্যতা সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন করল না। হযরত ফাতেমা (রা) দাবি অগ্রাহ্য করা হলো।
৪. কিয়াস: যখন কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কোরআন, সুন্নাহ বা ইজমার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া না যায় তখন কিয়াস অর্থাৎ “ফলপ্রসূ যুক্তি”-এর দ্বারা সমাধান করাকে কিয়াস বলে।
যেমন-ইসলামে মাদকতা সৃষ্টিকারী তীব্র পানীয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মদকে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ না করা হলেও যেহেতু মদ মাদকতা সৃষ্টিকারী তীব্র পানীয়, সুতরাং সাদৃশ্যমূলকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে বিবেচিত হয়। এই কিয়াস।
৫. আরবীয় প্রথা: মুসলিম আইনের পঞ্চম উৎস হল প্রাক ইসলামী প্রথা। কোরআর, হাদিস, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস ব্যতীত আইনবিদগণ যে উৎসটির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন সেটা হল রীতি বা প্রথা। বহু পুরাতন আরব প্রথা কোরআনের আয়াত দ্বারা নাকচ করা হয়েছে। যা কোরআন কর্তৃক নাকচ করা হয়নি এবং যা সুন্নাহ কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গৃহীত হয়েছে, উহা মুসলিম আইনের বিধি হিসাবে বর্তমান রয়েছে।
যেমন-প্রাক ইসলামী প্রথায় যিহার, ইলা, খুলা ইত্যাদি যে কোন প্রথার মাধ্যমেই তালাক বা বিবাহ-বিচ্ছেদ হত, তালাক প্রাপ্তাকে পুনরায় বিবাহ করার আগে কিছু কাল অপেক্ষা করতে হতো। এরূপে কোন নারীর পুনবির্বাহের পূর্বে এই অপেক্ষমান সময়কে ইদ্দত পালন বলে। ইসলামী আইনেও নির্দিষ্ট মেয়াদে ইদ্দত পালন করতে হয়।
৬. বিধিবন্ধ আইন: বাংলাদেশে মুসলমানদের উপর শুধু মুসলিম ব্যক্তিগত আইনই প্রয়োগ করা হয়। উত্তরাধিকার, বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, উইল, হিবা এবং ওয়াকফ সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে মুসলিম আইন প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়াও মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সম্পর্কে ও কতিপয় আইন বিধিবন্ধ করা হয়েছে এবং ঐ প্রকারের আইনগুলোকে ৬ষ্ঠ উৎস বলে মুসলিম আইন বিকাশে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বিধিবন্ধ আইন হিসাবে আইন সভা দ্বারা পাশকৃত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলো হল:
১. শরীয়া আই, ১৯৩৭
২. মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৭
৩. মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (অধ্যাদেশ নং ৮)
৪. মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ-বিচ্ছেদ রেজিষ্ট্রেশন আইন, ১৯৭৪
৭. আদালতের সিদ্ধান্ত:
দেশের উচ্চ আদালতের কোন জটিল বিষয়ের সিদ্ধান্তও মুসলিম আইনের উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বই, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন pdf, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন ১৯৬১ pdf, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন চার্ট, উত্তরাধিকার আইন ১৯২৫, মুসলিম ফারায়েজ আইন pdf, ১৯৬১ উত্তরাধিকার আইন, মুসলিম ফারায়েজ আইন বই।