কোন জরিপ কত সালে হয় । এস এ রেকর্ড কত সালে হয়? - Technical Alamin
ভূমি সেবা অনলাইন

কোন জরিপ কত সালে হয় । এস এ রেকর্ড কত সালে হয়?

সরকারের জরিপ বিভাগ সরেজমিন জরিপ করে ভূমির মালিকানার যে বিবরণ ও নকশা তৈরী করে তাই রেকর্ড বা জরিপ– কোন জরিপ কত সালে হয়

কার সময়ে ভূমি জরিপ চালু হয়? –পাঠানসম্রাট শেরশাহ সর্ব প্রথম এ উপমহাদেশে জরিপ প্রথা চালু করেন। পরবর্তীতেমোঘল সম্রাট আকবরের একজন অন্যতম সভাসদ টোডরমল সার্ভে ও সেটেলমেন্টকার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু উক্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ এবং plot-to-plot সার্ভে কার্যক্রম ছিলনা বরং একটি সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম ছিল।

ক্যাডাস্ট্র্যাল সার্ভে (সি.এস.জরিপ) কখন হয়?- ১৮৮৫সালের বংগীয় প্রজাস্বত্ব আইনের ১০ম পরিচ্ছেদের বিধান অনুসারে ১৮৮৯ সাল হতে১৯৪০ সাল পর্যন্ত সিলেট ও পার্বত্য জেলা ব্যতীত সাআ দেশে সি.এস.জরিপসম্পন্ন করা হয়। এ কর্মসূচীতে কক্সবাজারের রামু থানা হতে আরম্ভ করে ১৯৪০সালে দিনাজপুর জেলায় সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অপারেশন শেষ করার মাধ্যমেসি.এস.জরিপের পরিসমাপ্তি ঘটে। ঐ সময়ে সিলেট জেলা আসাম প্রদেশের অর্ন্তভূক্তথাকায় বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের আওতাভূক্ত ছিলনা বিধায় সিলেট জেলায়সি.এস.জরিপ হয়নি। তবে জরিপ কার্যক্রম জরুরী বিবেচনায় ১৯৩৬ সালের সিলেটপ্রজাস্বত্ব আইনের (Sylhet tenancy Act) আওতায় জেলার ক্যাডাষ্ট্রাল সার্ভে১৯৫০ সালে আরম্ভ করা হয় এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্বআইন ১৯৫০ এর অধীনে ঐ জরিপ ১৯৬৩ সালে শেষ হয়। উক্ত জরিপে নকশা ও রেকর্ড উভয়ইপ্রস্তুত করা হয়। সি.এস.জরিপের মাধ্যমে প্রতিটি মৌজার জন্য নকশা (ম্যাপ)প্রস্তুত করে প্রতিটি ভূমি খন্ডের বাস্তব অবস্থা, আয়তন, শ্রেণী, জমির পরিমাণ, খাজনার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ করে খতিয়ান প্রণয়ন করা হয়। সি.এস.খতিয়ান ও নকশা খুবই নিখুঁত ও নির্ভরযোগ্য ছিল। সি.এস. জরিপে জমিদারগণের নাম খতিয়ানের উপরিভাগে লেখা থাকত এবং দখলকার রায়তের নাম নিচে লেখা থাকত।তখন জমির মালিক ছিলেন সরকার পক্ষে জমিদারগণ এবং রায়তগণ প্রজা হিসেবে শুধুমাত্র ভোগ দখলকার ছিলেন।

ভূমি জরিপ পদ্ধতি ও স্তর কি কি?  ১৯৫০সালের রাষ্ট্রীয় আধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৪(১) ধারা এবং ১৮৭৫ সালেরসার্ভে এ্যাক্টের ৩ ধারা মোতাবেক সরকার কর্তৃক কোন নির্দিষ্ট এলকা/মৌজার জরিপ কার্যক্রম শুরু করার আদেশ পেয়ে সংশ্লিষ্ট সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার প্রজ্ঞাপন জারী করে জরিপ কার্যক্রম শুরু করেন। জরিপ কার্যক্রম কতিপয় সুনির্দিষ্ট স্তরের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫ এর ২৭ বিধিতে ১০ টি স্তরের উল্লেখ আছে।

জোনাল জরিপ কখন হয়েছে? ভূমিরেকর্ড হালকরণ ও ভূমি রাজস্ব আদায়ের সমস্যাবলী দূলীকরণের মাধ্যমে প্রশাসনে সংস্কার আনয়নের জন্য তৎকালীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাবএ.কে.এম মোশারফ হোসেন এর সভাপতিত্বে ” ভূমি রাজস্ব প্রশাসনিক সমস্যা তদন্তকমিটি” গঠন করা হয়। কমিটি বিভিন্ন সম্রার কথা বিবেচনা করে সংশোধিত জরিপকার্যক্রমে পদ্ধতিগত যুগোপযোগী পরিবর্তন আনয়নের সুপারিশ করেন। উক্ত সুপারিশের ভিত্তিতে নিকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকার বৃহত্তর জেলায় জরিপের জোনাল অফিস গঠন করে এর আওতাভূক্ত প্রতিটি থানায় একটি করে থানা সেটেলমেন্ট অফিস গঠন করে। ১৯৮৫-৮৬ সাল হতে ১০ টি বৃহত্তর জেলায় (যশোর, বগুড়া, ফরিদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও সিলেট) এ কার্যক্রমচালু হয়।

www.land.gov bd । Types of land surveying

ভূমি জরিপ হচ্ছে ভূমির মালিকানা সম্বলিত ইতিহাসের সরেজমিন ইতিবৃত্ত। আইনী সংজ্ঞা হচ্ছে, The Survey Act, 1875 এর ধারা ২ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুসারে সরকারের জরিপ বিভাগ সরেজমিন জরিপ করে ভূমির মালিকানার যে বিবরণ ও নকশা তৈরী করে তাই রেকর্ড বা জরিপ। অর্থাৎ রেকর্ড বা জরিপ হচ্ছে মালিকানার বিবরণ ও নকশার সমন্বয়।

Caption: Land Survey Report 2016

এস.এ. জরিপ ১৯৫০ । এস. এ. পূর্ববর্তী সংশোধনী জরিপ কখন হয়েছে?

  1. ১৯৫০সালের জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের (State acquisition and Tenancy Act. 1950) এর আওতায় ১৯৫৬ সালে জমিদারী প্রতা বিলুপ্ত করেপ্রজাদেরকে সরাসরি মালিকে পরিণত করার উদ্দেশ্যে কার্যক্রম শুরু করা হয়। একার্যক্রমের আওতায় জমিদারগণের নামের তালিকা প্রণয়নের সঙ্গে সঙ্গে তাদেরঅধিনস্থ রায়তের নাম, জমির বিবরণ, খাজনার পরিমাণ সম্বলিত তালিকাও প্রস্তুতকরা হয়। জমিদারগণের জন্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণী তালিকা (Compensation Assesment Roll) প্রণয়নের পর রায়তের বিবরণ সম্বলিত তালিকাটি খতিয়ান হিসেবেগণ্য করে কালেক্টরেটগণের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এটিই এস.এ. রেকর্ড হিসেবেপরিচিত। এস.এ. জরিপের সময়ে ঢাকাসহ কিছু বিবাদপূর্ণ মৌজায় এবং কোন কোন পৌরএলকায় ক্যাডাষ্ট্রাল জরিপের পদ্ধতিতে ম্যাপ ও রেকর্ড প্রণয়ন করা হয়েছে যারম্যাপ ও রেকর্ড মুদ্রিতও হয়। এস.এ. জরিপ কার্যক্রমে সরেজমিনের সঙ্গে ম্যাপ ওরেকর্ড মিল করে রেকর্ড প্রণীত না হওয়ায় খতিয়ানের বিশ্বস্ততা সম্পর্কে কিছুসন্দেহের আবকাশ থেকে যায়। এস.এ জরিপে প্রস্তুতকৃত খতিয়ানগুলো অধিকাংশইহাতের লেখায় চূড়ান্ত করা হয়। এস.এ. রেকর্ডের অংশীদার বিশিষ্ট খতিয়ান গুলোতে রেকর্ডীয় মালিকদের নামে নামে সর্বক্ষেত্রে অংশ লেখা হয়নি বিধায় স্বত্ব (Title) নির্ধারণের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়।
  2. সংশোধনী জরিপ- সি.এস.জরিপের মাধ্যমে নকশা ও রেকর্ড প্রস্তুতির পর সময়ের ব্যবধানে ভূমির প্রকৃতিও মালিকানায় ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ায় তা সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এবিষয়টি বিবেচনা করে সরকার ১৮৭৫ সালের সার্ভে আইনের ৩ ধারা এবং ১৮৮৫ সালেরবি.টি. এ্যাক্ট এর আওতায় পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সংশোধনী জরিপ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ১৯৩৩ সালে একটি নীতিমালা জারী করা হয় যাষ্ট্যন্ডার্ড রুলস্ রিগার্ডিং দি রিভিশনাল সেটেলমেন্টস এ বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার ১৮৭৫ সালের সার্ভে আইনের ৩ ধারা এবং ১৮৮৫ সালের বি.টি.এ্যাক্ট এর আওতায় পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সংশোধনী জরিপ (আর.এস) কার্যক্রম গ্রহনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সংশোধনী জরিপ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য১৯৩৩ সালে একটি নীতিমালা জারী করা হয় যা ষ্ট্যান্ডার্ড রুলস্ রিগার্ডিং দিরিভিশনাল সেটেলমেন্ট অপারেশনস ইন বেঙ্গল, ১৯৩৩ নামে প্রকাশিত। এর আওতায়১৯৪০ সালে বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশাল জেলায় আর.এস. জরিপ আরম্ভ হয়। অতঃপর১৯৪৫ সালে ফরিদপুর এবং ১৯৫২ সালে বৃহত্তর বরিশাল জেলায় আর.এস. কার্যক্রম সমাপ্ত হয়।
  3. এস. এ. পরবর্তী সংশোধনী জরিপ-এস.এ.রেকর্ড চলমান অবস্থায় বিভিন্ন অনিয়ম ও ভুলভ্রান্তির কারণে সারা দেশেপ্রচুর অভিযোগ তথা গণ অসন্তোষ দেখা দেয়। বিষয়টি যাঁচাই করার জন্য তৎকালীনপূর্ব পাকিস্তান সরকার ভূমি রাজস্ব কমিশন গঠন করেন। এ কমিশন ” খান বাহাদুর মাহমুদ কমিশণ” নামে পরিচিত ছিল। উক্ত কমিশন ১৯৫৯ সালের জুলাই মাসে এস.এ.রেকর্ডের ভুলত্রুটি স্বীকার করে একটি রিপোর্ট প্রদান করেন। পরবর্তীতে সরকারপূণরায় ১৯৬২ সালে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন এর নেতৃত্বে “ভূমি রাজস্ব প্রশাসনতদন্ত কমিটি” গঠন করেন। উক্ত কমিটির প্রতিবেদনে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ওপ্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৪ (১) ধারায় সংশোধনী জরিপ চালু করে নকশা ও রেকর্ড হালকরণের প্রস্তাব করা হয়। উক্ত প্রস্তাব মোতাবেক ১৯৬৫-৬৬ সালে দেশ ব্যাপী সংশোধনী জরিপ আরম্ভ হয়। এ কর্মসূচীতে রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, পাবনা, ময়মনসিংহ ও জামালপুরের জরিপ কর্মসূচী শেষ হয় (১৯৬৬ হতে ১৯৭৯পর্যন্ত)।

ট্রাভার্স জরিপ (Travers) কি?

কোন মৌজার ৩৩% এর বেশী প্লট পরিবর্তিত হলে একটি নতুন প্লেন সিটে ট্রাভার্স জরিপের মাধ্যমে নকশা প্রস্তুত করতে হয়। এরূপ সিটকে পি-৭০ সিট বলে। একজন ক্যাম্প অফিসারের নের্তৃত্বে ট্রাভার্স সার্ভেয়ার, কম্পিউটর ও কতিপয় খালাসীসহ একটি ট্রাভার্স দল গঠন করে ট্রাভার্স জরিপ সম্পন্ন করা হয়।ট্রাভার্স সার্ভেয়ার থিওডোলাইট যন্ত্রের সাহায্যে ট্রাভার্স ষ্টেশন চিহ্নিত করে বাঁশের খুঁটি পুঁতে দেন। চিহ্নিত বাঁশের খুঁটিগুলে কম্পিউটেশনের মাধ্যমে গোলাকার চাঁদা আকারে মোটা সিটে সন্নিবেশিত করে কিস্তোয়ার কাজ করার জন্য সিট গুলো সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট সরবরাহ করা হয়।

https://reportbd.net/%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%9c%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%aa-%e0%a6%87%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *