গৃহ নির্মাণ ঋণ নেয়া আগে অবশ্যই পোস্টটি ভাল করে পড়ে নিবেন।

গৃহ নির্মাণ ঋণ ২০২৩ । গৃহ নির্মাণ ঋণ নেয়ার আগে অবশ্যই পোস্টটি ভাল করে পড়ে নিবেন।

সরকারি বা বেসরকারি কর্মচারীগণ ব্যাংক হতে গৃহ নির্মাণ ঋণ নেয়ার আগে অবশ্যই পোস্টটি ভাল করে পড়ে নিবেন। ঋণ গ্রহনের সময় আমরা সাধারণত টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলো ভাল করে পড়ে দেখি না। দ্রুত টাকা বুঝে সাইন করে চলে আসি আসলে এটি মূলত ঠিক নয়। তাই নিচের পোস্টটি পড়ে নিজে সতর্ক হউন এবং অন্যকে সতর্ক করুন। যে ৫টি বেসরকারি ব্যাংক গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান করবে সরকারি কর্মচারীদের!

ব্যাংক লোন নিয়ে যারা ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী তাঁদের সুবিধার্থে আমার আজকের পোস্ট, ব্যাংকার বন্ধুরা ক্ষমা করবেন। আমি ২০১০ সালে HSBC ব্যাংক থেকে ১৫ বছর মেয়াদী ২৭,৫০,০০০/- টাকা ঋণ নিয়ে ৪৫ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। চুক্তি ছিল ৯.৯৯% হারে সূদ নিবে।

সেই হিসাবে মাসিক কিস্তি পরিশোধের পরিমান ছিল ২৭,৫০০/- টাকার মত। পরবর্তী এক বছরের মধ্যে সূদের হার বেড়ে গেল পর্যায়ক্রমে ১৪% পর্যন্ত এবং মাসিক কিস্তি গিয়ে ঠেকল ৩৪,০০০/- টাকায়। আমার পরিকল্পনা ছিল পাঁচ বছর পরে এক কালিন বাকী টাকা নগদ পরিশোধ করে ঋণ মুক্ত হব। ২০-৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গৃহ নির্মাণ ঋণ পাচ্ছে সরকারি চাকরিজীবিরা।

যথারীতি পাঁচ বছর পরে ব্যাংকে গেলাম বকেয়ার হিসাব নিতে। ব্যাংক জানাল আমার ২৬,২৫,০০০/- টাকা বকেয়া আছে। আমি তো অবাক, এটা কিভাবে হয়, কারন আমি ইতি মধ্যে ২২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে ফেলেছি। কারন জিজ্ঞেস করাতে ব্যাংক বলল, “আপনার ১৫ বছরের ঋনের সূদ অগ্রিম হিসাব করে মাসিক কিস্তির সাথে ৯৫% হারে কেটে নেয়া হচ্ছে এবং গৃহ ঋণের এটাই নিয়ম“। অর্থাৎ এই পাঁচ বছরে আমার ঋণের আসল কাটা গেছে মাত্র ৫% হারে। আমার মাথার উপর আাকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থা। পরে নিজের বোকামি বুঝতে পেরে সিদ্ধান্ত নিলাম আর এই ফাঁদে পা দিবনা, অন্যত্র অনেক মূল্যবান প্রপার্টি বিক্রি করে ব্যাংকের বকেয়া টাকা এক কালীন পরিশোধ করলাম।

ব্যাংক হোম লোন বা পারসোনাল লোন এখন আমাদের জীবন যাত্রার অংশ কিন্তু ঋণ নেওয়ার পূর্ব অবশ্যই সতর্ক থাকুন

অতএব বন্ধুগন, প্রয়োজনে ঋণ নিন, তবে আগে টার্মস্ এন্ড কন্ডিশন গুলি ভাল করে বুঝে নিবেন। না হয় আমার মত ভুলের চরম মাশুল দিতে হবে।

**বর্তমানে, IDLC, DBH, সহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সবার ক্ষেত্রে সুদের হার ১৪%,১৩%,১২%। আমি আরও খোজ নিয়ে দেখেছি যে,  আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঋণ নিজস্ব নীতিমালায় দিয়ে থাকে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরন করতে হয় তাই সকল ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোতে একই নিয়ম প্রযোজ্য হয়। শুধুমাত্র শর্তগুলো ভিন্ন ভাবে সাজানো হয়।

প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গৃহ নির্মাণ বা লংটার্ম ঋণের ক্ষেত্রে তাদের সুদগুলো প্রাথমিক কিস্তির মাধ্যমে নিয়ে নেন। পরবর্তীতে আসল কর্তন শুরু হয়। তাই আপনার ঋণ চুক্তিটি ভাল করে পড়ে নিন এবং কথার সাথে লিখিত ডকুমেন্টের মিল রয়েছে কিনা দেখে নিন।

তারাই লংটার্ম ঋণ বা গৃহ নির্মাণ ঋণে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় যারা মনে করেন ২০ বছরের জন্য ঋণ নিই, সামর্থ হলে ৫-৭ বছর পরে পুরো অর্থ পরিশোধ করে দিব। তাই সাবধান এভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।

Loan নেয়ার ক্ষেত্রে সবাই সচেতন হই, নিজে সচেতন হই, অন্যকে সচেতন করি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিবেন না। এ ফাঁদ থেকে কখনও বের হতে পারবেন না। জীবন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু ঋণ শেষ হবে না।

কৃতজ্ঞতা: Mahbub Hasan

ব্যাংক কর্মকর্তাদের গৃহ নির্মাণ ঋণ সিলিং ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় উন্নীত ২০২২

One comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *