ধর্ম পরিবর্তনে এনআইডিতে নাম পরিবর্তন –শুধু মৌখিক ঘোষণা দিলেই হয় না, বরং আইনি কাগজপত্রের মাধ্যমে সকলকে জানিয়ে তারপর ধর্মান্তর সম্পন্ন হয়। নোটারি পাবলিকের সামনে নিজের এক্সিস্টিং বা বর্তমান পরিচয় প্রকাশ করে তা থেকে নতুন যে পরিচয়ে পরিচিত হতে চায় সেই পরিচয়টি প্রকাশ করে এফিডেভিটের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ভবিষ্যতের নতুন নাম পরিচয় ঘোষণা করতে হয়।

ধর্ম পরিবর্তনের কারনে কেউ যদি তার নাম পরিবর্তন আবেদন করতে চায়, তাহলে প্রথমে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনায় নিতে হবে। NID সার্ভারে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি মাধ্যমিক থাকে, তাহলে প্রথমে আবেদনকারীর মাধ্যমিক সনদ সংশোধন করে তার নতুন নামে মাধ্যমিক সনদ করতে হবে।

জন্ম সনদ সংশোধন- একইসাথে তার জন্মসনদ যদি আগে করা থাকে, তাহলে সেই জন্মসনদও নতুন নামে সংশোধন করতে হবে। এরপর সংশোধিত মাধ্যমিক সনদের ফটোকপি, আগের নামের মাধ্যমিক সনদের ফটোকপি, জন্মসনদ, ধর্ম পরিবর্তনের এভিডেভিড, কাবিননামা (বিয়ে হলে) এবং স্বামীর NID কার্ডের ফটোকপি দাখিল করে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম পরিবর্তন আবেদন করতে হবে।

এনআইডিতে নাম ও ধর্ম পরিবর্তনে যে ঘোষণাপত্র লাগবে / মুসলমান বা হিন্দু বা যে ধর্মই গ্রহণ করা হোক না কেন নিচের কাগজপত্রাদি লাগবে।

আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ইসলাম ধর্মের লোকজনদের সাথে এবং আমার সমবয়সী মুসলমান ছেলেমেয়েদের সাথে চলাফেলা, উঠাবসা করিয়া ও তাহাদের চালচলন ও আচার-আচরণের সাথে মিশিয়া এবং হুজুর ও মাওলানা সাহেবদের ওয়াজ নসিয়ত শুনিয়া আমার মনে বিশ্বাস জন্মে যে, জীবন পরিচালনায় জন্য ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি ও আকিদা এবং কোরআন ও সুন্নাহর বাণী আমার নিকট খ্রীষ্টান ধর্মের রীতিনীতির চাইতে উত্তম বিবেচিত হয়। ফলে ইসলাম ধর্মের প্রতি আমার বিশ্বাস স্থাপন হয়। ইসলাম ধর্মকে আমার জীবন-যাপনের পাথেয় হিসাবে গ্রহণ করার জন্য আমার মন দীর্ঘদিন যাবৎ বেকুল হইয়া উঠে। তাই আমি আমার পুরাতন খ্রীষ্টান ধর্ম পরিত্যাগ করিয়া ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এমন ঘোষণা এফিডেভিডে থাকতে হবে।

নোটারি পাবলিক ধর্ম পরিবর্তন Affidavit 2022

ধর্ম পরিবর্তনে মৌখিক ঘোষনার সাথে কাগজিক ঘোষণাও প্রয়োজন পড়বে।

যদি মাধ্যমিক পাশ না থাকে তবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ম?

  1. NID সার্ভারে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি মাধ্যমিক এর নিচে থাকে, তাহলে চাহিত নাম সংবলিত জন্মসনদ।
  2. ধর্ম পরিবর্তনের এভিডেভিড।
  3. কাবিননামা (বিয়ে হলে) এবং স্বামীর NID কার্ডের ফটোকপি দাখিল করে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম পরিবর্তন আবেদন করতে হবে।
  4. কেউ যখন ধর্ম পরিবর্তন জনিত কারনে তার নাম পরিবর্তন আবেদন করবেন, একইসাথে তার ধর্ম পরিবর্তন আবেদনও করা উচিৎ।
  5. তাই নাম পরিবর্তন করলে অবশ্যই ধর্ম পরিবর্তন করবেন যদিও ধর্ম কি তা জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ থাকে না কিন্তু সার্ভারে উল্লেখ থাকে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে এফিডেভিড কি লাগবেই?

জি। অবশ্যই এফিডেভিট লাগবেই। ঠিকানা বা অন্যান্য তথ্য ঠিক থাকবে। পিতা মাতার নামও ঠিক থাকবে শুধু নিজের নাম এবং ধর্ম পরিবর্তন হবে। স্থায়ী ঠিকানা বা বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রয়োজন পড়বে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সনদ এবং বিদ্যুৎ বিলের কপি এবং ট্যাক্স টোকেন বা ভূমি করের রশিদ থাকলে যুক্ত করে ঠিকানা পরিবর্তন করা যাবে। তাছাড়া যদি উক্ত স্থায়ী ঠিকানার অবস্থান পরিবর্তন হয় তবে ভোটার এলাকাও পরিবর্তন করা যাবে।

ধর্ম পরিবর্তনে মৌখিক ঘোষণা দিলেই কি হয়? শুধু মৌখিক ঘোষণা দিলেই হয় না, বরং আইনি কাগজপত্রের মাধ্যমে সকলকে জানিয়ে তারপর ধর্মান্তর সম্পন্ন হয়। আমি পটভূমিতেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যে, ধর্ম এমন একটা বিষয় যা ধরা যায় না, দেখাও যায় না। যার ফলে কেউ যদি ধর্ম পরিবর্তন করে সেই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তার মুখের কথার ভিত্তিতেই সেটি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই তাকে ঘোষণা দিয়ে আইনি কাগজ পত্রের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করতে হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে ধর্ম পরিবর্তন করার যে বিষয়টি আমরা সচরাচর দেখে থাকি সেটি হচ্ছে নোটারি পাবলিকের সামনে নিজের এক্সিস্টিং বা বর্তমান পরিচয় প্রকাশ করে তা থেকে নতুন যে পরিচয়ে পরিচিত হতে চায় সেই পরিচয়টি প্রকাশ করে এফিডেভিটের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ভবিষ্যতের নতুন নাম পরিচয় ঘোষণা করতে হয়।

Service.nidw.gov bd/nid-pub । জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন এবং তথ্য পরিবর্তন কি এক জিনিস?