ডিজিটাল হলো রোড ট্যাক্স টোকেন ২০২৫ । কিউআর কোড সম্বলিত 'ই-ট্যাক্স টোকেন' ব্যবহারে বিআরটিএ'র প্রজ্ঞাপন জারি? - Technical Alamin
BRTA Information

ডিজিটাল হলো রোড ট্যাক্স টোকেন ২০২৫ । কিউআর কোড সম্বলিত ‘ই-ট্যাক্স টোকেন’ ব্যবহারে বিআরটিএ’র প্রজ্ঞাপন জারি?

সূচীপত্র

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মোটরযানের নির্ধারিত রোড ট্যাক্স পরিশোধের পরিপ্রেক্ষিতে QR কোড সম্বলিত ই-ট্যাক্স টোকেন প্রদান করছে। মোটরযান মালিক/চালকগণ মুদ্রিত ট্যাক্স টোকেন সনদের ন্যায় ই-ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করে বা স্মার্ট মোবাইল ফোনে প্রদর্শন করে মোটরযান চালনার সময় ব্যবহার করতে পারবেন। ই-ট্যাক্স টোকেন প্রদত্ত QR কোড দ্বারা বিআরটিএ-এর সিস্টেম/অ্যাপস থেকে মোটরযানের ট্যাক্স টোকেন এবং সম্পর্কিত তথ্যাদি যাচাই করা যাবে। – ডিজিটাল হলো রোড ট্যাক্স টোকেন ২০২৫

দীর্ঘদিনের প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে মোটরযানের রোড ট্যাক্স পরিশোধের পর এবার কিউআর (QR) কোড সম্বলিত ‘ই-ট্যাক্স টোকেন’ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ সংস্থাপন শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (১০ আশ্বিন ১৪৩২) তারিখে জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে যে, বিআরটিএ কর্তৃক মোটরযানের নির্ধারিত রোড ট্যাক্স পরিশোধের পর মালিকদের কিউআর কোড সম্বলিত ই-ট্যাক্স টোকেন প্রদান করা হবে।

মোবাইলে প্রদর্শন করেই ব্যবহার করা যাবে ই-টোকেন:

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মোটরযানের মালিক বা চালকগণ পূর্বের মুদ্রিত ট্যাক্স টোকেন সনদের মতোই এই ই-ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো— তারা এই টোকেনের সফট কপি স্মার্ট মোবাইল ফোনে প্রদর্শন করেও মোটরযান চালানোর সময় ব্যবহার করতে পারবেন।

যাচাই প্রক্রিয়া হবে ডিজিটাল- ই-ট্যাক্স টোকেনটিকে আরও সুরক্ষিত এবং যাচাইযোগ্য করতে এতে কিউআর কোড যুক্ত করা হয়েছে। এই কিউআর কোড ব্যবহার করে বিআরটিএ-এর সিস্টেম বা অ্যাপসের মাধ্যমে মোটরযানের ট্যাক্স টোকেনের বৈধতা ও অন্যান্য সম্পর্কিত তথ্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা যাবে। এর ফলে রাস্তায় দায়িত্ব পালনকারী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে টোকেনের বৈধতা যাচাই করা আরও সহজ হবে এবং জালিয়াতির সুযোগ কমবে।

ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ এটি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএ (BRTA) কর্তৃক জারি করা হয়। কর পরিশোধের প্রমাণ মোটরযানের মালিককে প্রতি বছর বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সরকার নির্ধারিত রোড ট্যাক্স (Road Tax) বা সড়ক কর পরিশোধ করতে হয়। এই কর পরিশোধের পরই ট্যাক্স টোকেন বা সনদ দেওয়া হয়।

বৈধতা এটি সাধারণত এক বছরের জন্য বৈধ থাকে এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এটি নবায়ন করতে হয়। কর নির্ধারণ গাড়ির ধরনের (মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, বাস, ট্রাক ইত্যাদি), ইঞ্জিন ক্ষমতা (সিসি-তে পরিমাপ), সিট সংখ্যা বা ওজন বহন ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে এই করের পরিমাণ নির্ধারিত হয়। আইনি বাধ্যবাধকতা মোটরযান চালানোর সময় ট্যাক্স টোকেন (বা এখনকার ই-ট্যাক্স টোকেন) সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। এটি না থাকলে বা মেয়াদোত্তীর্ণ হলে আইন অনুযায়ী জরিমানা হতে পারে। ট্যাক্স টোকেন (Tax Token) হলো মোটরযান চালানোর জন্য একটি অপরিহার্য সরকারি সনদ বা প্রমাণপত্র, যা নির্দেশ করে যে গাড়িটির নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রযোজ্য ‘রোড ট্যাক্স’ বা সড়ক কর পরিশোধ করা হয়েছে। সহজ কথায়, এটি একটি গাড়ির বৈধতা নিশ্চিত করার জন্য অর্থ প্রদানের রসিদস্বরূপ।

Caption: BRTA Order

ট্যাক্স টোকেনের হার্ড কপি বহন করতে হবে না? না, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এখন ট্যাক্স টোকেনের হার্ড কপি বা মুদ্রিত সনদ বহন করা বাধ্যতামূলক নয়।

  1. বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্তৃক জারি করা প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে: “মোটরযান মালিক/চালকগণ মুদ্রিত ট্যাক্স টোকেন সনদের ন্যায় ই-ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করে বা স্মার্ট মোবাইল ফোনে প্রদর্শন করে মোটরযান চালনার সময় ব্যবহার করতে পারবেন।” 
  2. অর্থাৎ, আপনি মুদ্রিত (হার্ড কপি) সনদের পরিবর্তে আপনার স্মার্টফোনে ই-ট্যাক্স টোকেনটি প্রদর্শন করেই মোটরযান চালাতে পারবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিউআর কোড স্ক্যান করে সহজেই এর বৈধতা যাচাই করতে পারবে। 
  3. তবে আপনি যদি মনে করেন, আপনার জন্য হার্ড কপি বহন করাই সুবিধাজনক, তবে আপনি মুদ্রিত কপিও ব্যবহার করতে পারবেন। মূল বিষয়টি হলো ট্যাক্স টোকেনটি এখন ডিজিটালি বৈধ

অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ?

প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সহকারী সচিব মোঃ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিব (স্বরাষ্ট্র, জননিরাপত্তা), সচিব (অর্থ বিভাগ), চেয়ারম্যান (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বিআরটিএ), বিভাগীয় কমিশনার এবং অতিরিক্ত আইজিপি (হাইওয়ে পুলিশ) সহ মোট ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। সরকারের এই ডিজিটাল উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন মোটরযান মালিকদের কাগজের টোকেন সংরক্ষণের ঝক্কি কমবে, তেমনি অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং টোকেন জালিয়াতি রোধ হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে। দেশের সড়ক পরিবহন খাতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটালাইজেশন পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ই-ট্যাক্স টোকেন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

পূর্বে ট্যাক্স টোকেন কাগজে মুদ্রিত সনদ হিসেবে দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে কিউআর (QR) কোড সম্বলিত ই-ট্যাক্স টোকেন দেওয়া হচ্ছে। এর সুবিধাগুলো হলোডিজিটাল ব্যবহার: আপনি এখন হার্ড কপির পরিবর্তে স্মার্ট মোবাইল ফোনে ই-ট্যাক্স টোকেন প্রদর্শন করেই মোটরযান চালাতে পারবেন।সহজ যাচাই: ই-ট্যাক্স টোকেনে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করে বিআরটিএ-এর সিস্টেম/অ্যাপসের মাধ্যমে যেকোনো মুহূর্তে টোকেনটির বৈধতা দ্রুত যাচাই করা যায়।
স্বচ্ছতা: এটি জালিয়াতি রোধ করতে এবং সরকারের রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে সাহায্য করে।মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সনদ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতোই ট্যাক্স টোকেন একটি অত্যাবশ্যকীয় আইনি নথি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *