বাংলাদেশে ই ড্রাইভিং লাইসেন্স রূপান্তর প্রক্রিয়া ২০২৫ । ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে জরুরি পূর্বশর্ত কি? - Technical Alamin
BRTA Information

বাংলাদেশে ই ড্রাইভিং লাইসেন্স রূপান্তর প্রক্রিয়া ২০২৫ । ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে জরুরি পূর্বশর্ত কি?

এখন থেকে অনলাইনে ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স অনুমোদনের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মানতে হবে। কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এই শর্তগুলো প্রকাশ করেছে। আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত ও নির্ভুল করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আবেদনের প্রধান পূর্বশর্তগুলো হলো:

১. বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স: শুধুমাত্র যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ রয়েছে সেই সকল ইউজারই এই প্যানেল থেকে ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্সধারীরা আবেদন করতে পারবেন না।

২. নতুন সিস্টেমে আবেদন না থাকা: কেবলমাত্র যাদের নতুন সিস্টেমে কোনো আবেদন জমা দেওয়া নেই, সেই সকল ইউজার এই প্যানেল ব্যবহার করে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

৩. জাতীয় পরিচয় পত্র (NID) ভেরিফিকেশন: আবেদনকারীর ইউজার প্রোফাইলটি অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র ভেরিফাইড হতে হবে। যদি প্রোফাইলটি যাচাই করা না থাকে, তাহলে ইউজাররা প্রোফাইলে তাদের নামের পাশে থাকা ‘রিফ্রেশ’ বাটনটি ক্লিক করে সহজে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে পারবেন।

এই শর্তগুলো মেনে আবেদন করলে ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও মসৃণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আবেদন করার আগে ব্যবহারকারীদের নিজেদের প্রোফাইল এবং লাইসেন্সের মেয়াদ ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

Click here to Convert E Driving Licence

ই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার আবেদন প্রক্রিয়া কি?

ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের একটি ডিজিটাল বা সফট কপি, যা কিউআর কোড (QR Code) সম্বলিত এবং বৈধ হিসেবে স্বীকৃত। ড্রাইভিং টেস্টে পাস করার পর নির্দিষ্ট ফি জমা দিলেই এই ই-লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায়।

বাংলাদেশে ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন প্রক্রিয়াটি সাধারণত বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল (BSP) এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে কাজ করতে হয়, যার মধ্যে প্রথমে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স পেতে হয় এবং তারপর পরীক্ষা দিতে হয়।

ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার আবেদন প্রক্রিয়া (সংক্ষেপে)

ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে আপনাকে মূলত ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। প্রক্রিয়াটিকে কয়েকটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে:

১. শিক্ষানবিশ (লার্নার) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন

  • ইউজার নিবন্ধন ও লগইন: প্রথমে বিআরটিএ সেবা বাতায়ন (BSP) পোর্টালে (যেমন: bsp.brta.gov.bd) নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র (NID) ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একটি ইউজার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে বা লগইন করতে হবে।
  • আবেদন ফরম পূরণ: প্রয়োজনীয় তথ্য, যেমন—ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড: আবেদনকারীর ছবি, রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক দেওয়া মেডিক্যাল সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং ইউটিলিটি বিলের কপি (যদি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হয়) আপলোড করতে হবে।
  • ফি পরিশোধ: ১টি ক্যাটাগরির জন্য (যেমন: শুধু কার) বা ২টির জন্য (যেমন: কার ও মোটরসাইকেল) নির্ধারিত ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে।
  • লার্নার লাইসেন্স সংগ্রহ: আবেদন অনুমোদিত হলে সিস্টেম থেকেই শিক্ষানবিশ লাইসেন্সটি প্রিন্ট করে নেওয়া যাবে।

২. ড্রাইভিং দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

  • প্রশিক্ষণ: লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার পর সাধারণত ২/৩ মাস ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিতে হয়।
  • পরীক্ষা: নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট (মাঠে পরীক্ষা)-এ অংশগ্রহণ করতে হবে। এ সময় লার্নার লাইসেন্স (মূল কপি) সঙ্গে রাখতে হয়।
  • ফলাফল: পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ফলাফল অনলাইনে আপলোড করা হয় এবং আবেদনকারীকে SMS-এর মাধ্যমে জানানো হয়।

৩. স্মার্ট কার্ড ও ই-লাইসেন্সের জন্য আবেদন

লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আপনি স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

  • লাইসেন্সের জন্য আবেদন: উত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত ফর্মে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
  • ফি পরিশোধ: স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফি (অপেশাদার বা পেশাদারভেদে ভিন্ন) এবং ডাক বিভাগের মাধ্যমে বিতরণের জন্য অতিরিক্ত ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে।
  • বায়োমেট্রিক্স প্রদান: গ্রাহকের ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর এবং আঙ্গুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক্স) গ্রহণের জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখে বিআরটিএ অফিসে যেতে হবে।
  • ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি: সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার এবং ফি জমা দেওয়ার পর সাধারণত ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সটি অনলাইন পোর্টালে বা অ্যাপে পাওয়া যায়। এটি কিউআর কোড সম্বলিত একটি সফট কপি, যা দিয়ে আপনি সাময়িকভাবে গাড়ি চালাতে পারবেন।
  • স্মার্ট কার্ড বিতরণ: ই-লাইসেন্স পাওয়ার কিছুদিন পর স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে সেটি ডাকযোগে আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত আপনার স্মার্ট কার্ড লাইসেন্সের একটি ডিজিটাল প্রতিলিপি। এটি দিয়ে স্মার্ট কার্ড না পাওয়া পর্যন্ত আপনি বৈধভাবে গাড়ি চালাতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর আগে আপনার ইউজার প্রোফাইল যেন জাতীয় পরিচয়পত্র দ্বারা ভেরিফাইড থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *