জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে নতুন নির্দেশনা ২০২৫ । ৭ বিষয়ে সাময়িক স্থগিতাদেশ, সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালু?
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও চূড়ান্তকরণের গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের কিছু ক্ষেত্রে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেছে। তবে, এই সময়ে নতুন ভোটার নিবন্ধন এবং এনআইডি সংশোধনের আবেদন গ্রহণসহ অন্যান্য কাজ সীমিত পরিসরে চালু থাকছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে চূড়ান্ত করার স্বার্থে এনআইডি সংশোধনের সাতটি বিষয় আপাতত বিবেচনা করা হবে না। যদিও এই সময়ের মধ্যে সংশোধনের আবেদনগুলো নিয়ম অনুযায়ী গ্রহিত ও প্রসেস করা হবে, কিন্তু সেগুলোর ফলাফল বা অনুমোদন এখনই দেওয়া হবে না।
🚫 যেসব সংশোধন আপাতত স্থগিত
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত যে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এনআইডি সংশোধনের ফল প্রকাশ স্থগিত থাকবে, সেগুলো হলো:
১. নিজ নাম/জন্মতারিখ পরিবর্তন: নামের আমূল পরিবর্তন বা জন্মতারিখ সংশোধনের আবেদন।
২. পিতা/মাতার নাম সংশোধন: পিতা বা মাতার নামের তথ্য সংশোধন।
৩. ঠিকানা পরিবর্তন: ভোটার এলাকা স্থানান্তর বা মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ঠিকানা পরিবর্তন (এটি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে)।
৪. স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধন/সংযোজন/বিয়োজন: বৈবাহিক অবস্থার পরিবর্তনজনিত সংশোধন।
৫. শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য পরিবর্তন।
৬. রক্তের গ্রুপ পরিবর্তন।
৭. ধর্ম পরিবর্তনজনিত কারণে নাম পরিবর্তন।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জানিয়েছেন, এই স্থগিতাদেশের প্রধান উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনকেন্দ্রিক তালিকায় যেন কোনো ব্যক্তি দুই জায়গায় ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না হন, তা নিশ্চিত করা এবং নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা।
✅ যেসব কার্যক্রম চলমান থাকবে
স্থগিতাদেশের মধ্যেও নাগরিকদের সুবিধার্থে সীমিত পরিসরে নিম্নলিখিত কার্যক্রমগুলো স্বাভাবিকভাবে চালু রয়েছে:
নতুন ভোটার নিবন্ধন: যারা নতুন ভোটার হতে চান, তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে।
সংশোধনের আবেদন গ্রহণ: উপরে উল্লিখিত সাতটি বিষয়সহ যেকোনো প্রকার এনআইডি সংশোধনের আবেদন অনলাইনে গ্রহণ করা হবে এবং সেগুলো প্রসেস করার কাজও চলতে থাকবে।
অন্যান্য কার্যক্রম: নতুন এনআইডি ইস্যু এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে।
⏳ ফলাফলের সময়সীমা
ইসি জানিয়েছে, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর অর্থাৎ, নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো শেষ হলে স্থগিত থাকা সংশোধনের আবেদনগুলোর ফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হবে।
এর আগে, ২৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ বিকেল ৪টার আগে যেসব সংশোধনের ফল প্রস্তুত হয়েছিল, আবেদনকারীরা সেগুলো হাতে পেয়ে যাবেন। তবে, এর পরে আসা আবেদনগুলোর অনুমোদন এখন দেওয়া হচ্ছে না।
এই সিদ্ধান্ত নাগরিকদের সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি করলেও একটি স্বচ্ছ ও নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য এটি অপরিহার্য বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। নাগরিকরা এখন অনলাইনে আবেদন জমা দিতে পারলেও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত।

অনলাইন আবেদনও কি সীমিত থাকবে?
না, অনলাইন আবেদন সীমিত থাকবে না। আপনার পূর্বে বিশ্লেষণ করা তথ্যানুযায়ী, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের জন্য অনলাইন আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চালু থাকবে।
🔍 মূল বিষয়গুলো:
আবেদন গ্রহণ: আপনি স্বাভাবিকভাবেই আপনার সংশোধনের আবেদন অনলাইনে জমা দিতে পারবেন। আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
কার্যক্রমের সীমিতকরণ: সীমিতকরণ বা স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র ৭টি নির্দিষ্ট প্রকার সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদনের ফল প্রকাশে জারি করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াকরণ: নির্বাচন কমিশন এই সময়ের মধ্যে আপনার আবেদনগুলো গ্রহণ করে অভ্যন্তরীণভাবে প্রসেস করার কাজ চালিয়ে যাবে।
ফলাফল প্রকাশ: ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর বা নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ শেষ হলে একসঙ্গে স্থগিত থাকা আবেদনগুলোর ফল প্রকাশ করা হবে।
সংক্ষেপে, আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু সংশোধনের চূড়ান্ত কার্ড বা অনুমোদন পেতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।

