বিধবা ভাতা ২০২৫ । ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন, যোগ্যতা ও প্রাপ্তি সম্ভাবনা কবে?
সরকার দুস্থ ও অসহায় বিধবা নারীদের জন্য ‘বিধবা ভাতা’ কর্মসূচি পরিচালনা করছে, যার অধীনে প্রতি মাসে ৬৫০ টাকা (২০২৫ সাল অনুযায়ী) প্রদান করা হয়। এটি তিন মাস অন্তর ভাতাভোগীর নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ভাতা পাওয়ার সুযোগ থাকলেও, কিছু বিষয় সম্পর্কে নাগরিকদের স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি।
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া ও সময়সীমা:
বিধবা ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয় dss.bhata.gov.bd/online-application ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। তবে, বর্তমানে এই অপশনটি বন্ধ আছে। সাধারণত প্রতি বছর আগস্ট, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া খুলে দেওয়া হয়। এটি সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল এবং খুলে দেওয়ার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে বা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পেজে আপডেট পাওয়া যাবে। কিভাবে আবেদন করতে হবে সে সংক্রান্ত ভিডিও নির্দেশনাও পাওয়া যাবে।
আবেদন করতে যা যা প্রয়োজন:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি): আবেদনকারীর নিজস্ব এনআইডি কার্ড লাগবে।
- মোবাইল নম্বর: ভাতাভোগীর নিজস্ব এনআইডি দিয়ে নিবন্ধিত সিমের মোবাইল নম্বর দিতে হবে।
- অ্যাকাউন্ট নম্বর: বিকাশ, নগদ, রকেট, ব্যাংক এশিয়া সহ কিছু সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করা যাবে। যে অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হবে, সেখানেই ভাতার টাকা আসবে। জানুয়ারি ২০২৬ থেকে অন্য কারো নামে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর বা অ্যাকাউন্ট নম্বরে ভাতা আসবে না। ভাতাভোগীর নিজস্ব এনআইডি দিয়ে সিম কিনে, সেই সিমে ভাতাভোগীর নামে অ্যাকাউন্ট খুলে তা দিতে হবে।
কারা বিধবা ভাতার যোগ্য?
বিধবা ভাতার জন্য যোগ্য হতে হলে নিম্নলিখিত শর্তাবলী পূরণ করতে হবে:
- বয়স: ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স হতে হবে।
- বার্ষিক আয়: বার্ষিক গড় আয় ১০,০০০ টাকার কম হতে হবে।
- জমির পরিমাণ: ৫ শতাংশের কম জমি থাকতে হবে।
- অগ্রাধিকার: সবচেয়ে গরীব ও অসহায় বিধবারা অগ্রাধিকার পাবেন।
ভাতা পাওয়ার সম্ভাবনা:
বিধবা ভাতা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার চেয়েও বিধবা ভাতা পাওয়া কঠিন। বাংলাদেশের যেকোনো ভাতার মধ্যে বিধবা ভাতা হওয়া সবচেয়ে দুরূহ, কারণ এর জন্য বরাদ্দ কম এবং আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক বেশি।
আবেদন করার পর করণীয়:
আবেদন করার পর ভাতাভোগীকে আর কিছু করতে হবে না। যদি ভাতা মঞ্জুর হয়, তবে সরাসরি অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসবে, যা দেখে বোঝা যাবে ভাতা চালু হয়েছে।
ঘুষ এবং বিলম্ব:
- ঘুষ: বিধবা ভাতার জন্য কোনো ঘুষ লাগে না।
- বিলম্ব: বরাদ্দ কম এবং আবেদন বেশি হওয়ায় ভাতা পেতে দেরি হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু করার থাকে না।
নাগরিকদের দায়িত্ব:
- অত্যন্ত গরীব ও অসহায় বিধবা ভাতা পাওয়ার উপযোগী কেউ থাকলে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবহিত করুন।
- আপনার পরিচিত কোনো ভাতাভোগী মারা গেলে দ্রুত অফিসকে জানান।
- যদি কোনো গরীব ও অসহায় ব্যক্তি ভাতা না পেয়ে থাকেন এবং দৃশ্যমান ধনী কোনো ব্যক্তি ভাতা পান, তবে অনুগ্রহ করে অফিসকে জানান।
ভাতার টাকা সুরক্ষিত:
ভাতার টাকা সরাসরি আপনার অ্যাকাউন্টে আসে, তাই অন্য কেউ আপনার টাকা তুলে নিতে পারে না। তবে, যদি অন্য কারো নামে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়, তবে সেই ব্যক্তি টাকা মেরে দিতে পারে। এক্ষেত্রে নিশ্চিত হওয়ার জন্য অফিসে গিয়ে খোঁজ খবর নিতে হবে।


