প্রকাশিত হলো ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি নীতিমালা: জেনে নিন আবেদনের যোগ্যতা ও পরীক্ষার নিয়ম
দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজ/ইউনিটে ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য ‘জাতীয় নীতিমালা’ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমএন্ডডিসি)। ২৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে এই নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
নীতিমালায় আবেদনের যোগ্যতা, ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি, নম্বর বন্টন এবং মেধা তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
আবেদনের মূল যোগ্যতা (দেশীয় শিক্ষার্থীদের জন্য):
- আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমান, উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮.৫০ পয়েন্ট থাকতে হবে।
- তবে, এককভাবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ পয়েন্টের কম থাকলে আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
- এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে (Biology) কমপক্ষে জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্ট থাকতে হবে।
- শিক্ষাবর্ষের শর্ত: ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে ২০২৪ সাল অথবা ২০২৫ সালে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। তবে, ২০২২ সালের পূর্বে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদনের যোগ্য বিবেচিত হবে না।
ভর্তি পরীক্ষা ও নম্বর বন্টন:
দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজের জন্য একই সঙ্গে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে জাতীয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
- পরীক্ষার মোট নম্বর: জাতীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত ১০০ নম্বর এবং এসএসসি ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ভিত্তিতে নির্ধারিত ১০০ নম্বর, মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে।
- লিখিত পরীক্ষার মান: লিখিত পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের।
- লিখিত পরীক্ষার সময়: পরীক্ষার সময়কাল ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
- পাস নম্বর: লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০। ৪০ নম্বরের কম পেলে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে না।
- নেগেটিভ মার্কিং: লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
| বিষয় | নম্বর |
| জীববিজ্ঞান (Biology) | ৩০ |
| রসায়ন (Chemistry) | ২৫ |
| পদার্থবিজ্ঞান (Physics) | ১৫ |
| ইংরেজি (English) | ১৫ |
| সাধারণ জ্ঞান, প্রবণতা ও মানবিক গুণাবলী মূল্যায়ন | ১৫ |
| মোট | ১০০ |
মেধা তালিকা নির্ণয় পদ্ধতি:
ভর্তির জন্য মেধা তালিকা নিম্নলিখিত সূত্র অনুযায়ী তৈরি করা হবে:
১. সদ্য উত্তীর্ণ (২০২৫ সালে এইচএসসি পাস) প্রার্থীদের জন্য:
(এসএসসি জিপিএ x ৮) + (এইচএসসি জিপিএ x ১২) + (ভর্তি পরীক্ষার নম্বর)
২. পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষে (২০২৪ সালে এইচএসসি পাস) উত্তীর্ণ প্রার্থীদের জন্য:
মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩ নম্বর কর্তন করা হবে।
৩. পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজ/ইউনিটে ভর্তিকৃত প্রার্থীদের জন্য:
মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকায় অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির নিয়ম:
- সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া (৩য় মাইগ্রেশনসহ) সম্পন্ন হওয়ার পর বেসরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
- বেসরকারি কলেজে ভর্তির জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদেরকে অনলাইনে পুনরায় আবেদন দাখিল করতে হবে এবং পছন্দের কলেজগুলির পছন্দক্রম বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হবে।
বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির সময় নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে ১ (এক) লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি এর অবশিষ্ট অর্থ ঐচ্ছিক মাইগ্রেশন পরবর্তী সময়ে প্রদান করা যাবে।

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির জাতীয় নীতিমালা
দেশে কতগুলো এমবিবিএস ভার্সিটি আছে?
এমবিবিএস (MBBS) ডিগ্রি প্রদান করা হয় মূলত মেডিকেল কলেজগুলো থেকে, যা সাধারণত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকে অথবা নিজেরাই বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কাজ করে (যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)। তবে, বেশিরভাগ মেডিকেল কলেজই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি) অথবা কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের (যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) অধিভুক্ত।
২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ১০০টির বেশি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে:
- সরকারি মেডিকেল কলেজ: প্রায় ৩৭টি।
- বেসরকারি মেডিকেল কলেজ: প্রায় ৬৭টি।
এই সংখ্যাগুলো সময়ে সময়ে সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে, কারণ নতুন কলেজ স্থাপন বা পুরনো কলেজের স্বীকৃতি বাতিল হতে পারে। এই মেডিকেল কলেজগুলোই এমবিবিএস ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।

