জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫ । পে স্কেলের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সংযুক্তির মাধ্যমে নতুন কর্মকর্তা পদায়ন? - Technical Alamin
Latest News

জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫ । পে স্কেলের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সংযুক্তির মাধ্যমে নতুন কর্মকর্তা পদায়ন?

সূচীপত্র

২০২৫ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ সরকার ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করেছে। এই কমিশন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের কাজ করছে এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। কমিশনের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সংযুক্তির মাধ্যমে নতুন কর্মকর্তা পদায়নের কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়নি, তবে কমিশনকে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে– জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫

পে কমিশনে কত সদস্যের কমিটি কাজ করছে? সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান-কে সভাপতি করে ২৩ সদস্যের একটি জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর অধীনে, প্রজাতন্ত্রের সকল শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করাই এই কমিশনের মূল কাজ। কমিশনকে প্রথম সভা আয়োজনের তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

পে স্কেলের কার্যক্রম ত্বরান্বিত হচ্ছে? বর্তমান প্রেক্ষাপটে, জাতীয় বেতন কমিশনকে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, যা পে স্কেল ঘোষণার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে, এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করতে সংযুক্তির মাধ্যমে নতুন কর্মকর্তা পদায়নের কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বা তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। এটি একটি সাধারণ আলোচনা বা অনুমান হতে পারে, যা সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। জাতীয় বেতন কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কাজ করছে এবং এটি ত্বরান্বিত করতে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তবে, সংযুক্তির মাধ্যমে কর্মকর্তা পদায়নের বিষয়টি এখনও একটি আলোচিত প্রস্তাবনা হিসেবেই রয়েছে এবং এর বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

কাজ কি দ্রুতগতিতে চলছে? হ্যাঁ। ২০২৫ সালের জন্য গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন এর কার্যক্রম দ্রুত করার লক্ষ্যে নতুন করে কোনো কর্মকর্তা পদায়নের খবর পাওয়া যায়নি। তবে, কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপনেই কিছু সদস্যকে পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিল। রকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে ২৩ সদস্যের ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করা হয়েছে। এই কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জাকির আহমেদ খান পূর্ণকালীন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. মোসলেম উদ্দীন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিমকে কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন সচিব অথবা অতিরিক্ত সচিব।

সর্বনিম্ন ৩৫,০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১,৪০,০০০ টাকা মূল বেতনের মধ্যে ১:৪ অনুপাত বজায় রাখা হয়েছে, যা সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে। প্রতিটি গ্রেডে মূল বেতন বৃদ্ধির হার নির্ধারণ করে এই কাঠামোকে পূর্ণাঙ্গভাবে সাজানো যেতে পারে, যা বর্তমান বেতন স্কেলের চেয়ে উন্নত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বীমা চালুর কথা বলেছেন? হ্যাঁ।  কমিশন ইতোমধ্যেই পুরোদমে কাজ শুরু করেছে এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আশা করছে। কমিশন তার সুপারিশ প্রণয়নে যেসব বিষয় বিবেচনা করছে তার মধ্যে রয়েছে- একটি পরিবারের জীবনযাত্রার ব্যয়, মূল্যস্ফীতির সাথে বেতন সমন্বয়ের পদ্ধতি, বিশেষায়িত চাকরির জন্য আলাদা বেতন কাঠামো এবং স্বাস্থ্য বীমা চালু করা ইত্যাদি। বেতন কমিশনের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. আ. মান্নানকে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এটি বেতন কমিশনের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে পারে।

 

Caption: New Member Added

১২টি গ্রেডের প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো ২০২৫ । সর্বনিম্ন ৩৫,০০০ টাকা মূল বেতনে ১২ গ্রেডের একটি বেতন কাঠামো তৈরি করতে, সর্বোচ্চ বেতন ১,৪০,০০০ টাকা ধরে একটি ১:৪ অনুপাত অনুসরণ করে প্রতি গ্রেডে বেতন বাড়ানো যেতে পারে। নিচে একটি প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো দেওয়া হলো, যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য কমানোর দাবির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ

  1. ৩৫,০০০
  2. ৪১,০০০ (এই অনুপাতে প্রতি ধাপে বেতন বৃদ্ধি পাবে)
  3. ৪৭,০০০
  4. ৫৩,০০০
  5. ৫৯,০০০
  6. ৬৫,০০০
  7. ৭১,০০০
  8. ৭৭,০০০
  9. ৮৩,০০০
  10. ৮৯,০০০
  11. ৯৫,০০০
  12. ১,৪০,০০০

সর্বনিম্ন বেতন কেন ৩৫ হাজার টাকা হওয়া উচিত?

রকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য নতুন পে কমিশন গঠিত হয়েছে। এই কমিশনকে আগামী ৩১ অক্টোবর এর মধ্যে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ৩০০টি ইউনিটসহ বিভিন্ন কর্মচারী ফেডারেশন সর্বনিম্ন মূল বেতন ৩৫,০০০ টাকা করার জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছে। তাদের এই দাবির পেছনে বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ রয়েছে। ২০১৫ সালে সর্বশেষ পে স্কেল দেওয়া হয়েছিল, যেখানে সর্বনিম্ন মূল বেতন ছিল ৮২৫০ টাকা। সে অনুযায়ী ২০২০ সালে নতুন পে স্কেল হওয়ার কথা ছিল এবং তখন বেতন দ্বিগুণ হয়ে কমপক্ষে ১৬,৫০০ টাকা হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। এরপর ২০২৫ সালে বর্তমান পে কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাই, যদি এই নিয়ম মেনে চলা হয়, তাহলে ২০২০ সালের ১৬,৫০০ টাকা এবং ২০২৫ সালের দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩২,৫০০ টাকা সর্বনিম্ন বেতন হওয়া উচিত। এখন এই অঙ্কের সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং বাজারের চাহিদার দিক বিবেচনা করে ৩৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা যুক্তিসঙ্গত। মূল্যস্ফীতিজনিত চাপ, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেলে সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন। আগামী ২০২৫ সালে নতুন বেতন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে এ দাবি জোরালো হচ্ছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি: সরকারি কর্মচারীরা বলছেন, বর্তমান বাজারে চাল, ডাল, তেলসহ সব নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। ফলে তাদের সীমিত আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। কর্মচারীদের মতে, মূল্যস্ফীতির হার অনুযায়ী তাদের বেতন বাড়ছে না। এর ফলে তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে।

জীবনযাত্রার মান রক্ষা: তারা বলছেন, দেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে একটি পরিবারের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখার জন্য সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা করা জরুরি।সরকার নতুন বেতন কমিশন গঠন করেছে এবং তাদের কাছে সরকারি কর্মচারীদের সকল দাবি-দাওয়া বিবেচনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কমিশন দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি এবং সরকারি তহবিলের সক্ষমতা বিবেচনা করে সুপারিশ করবে।অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হলে বাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দিতে পারে। তবে, তারা এও বলছেন যে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে সরকারি কর্মচারীদের বেতন সমন্বয় করা জরুরি।
সরকারের জন্য নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো – বিপুল সংখ্যক কর্মচারীর বেতন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা।সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো তাদের দাবি আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করার ইঙ্গিত দিয়েছে। অন্যদিকে, সরকার বেতন কমিশনের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করবে এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *