ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর ভ্যাট ২০২৫ । কখন পন্যের উপর ভ্যাট যোগ করে বিক্রি করতে হবে না?
পন্য বিক্রয়কারী বা ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর এবং যারা কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রয় করেন তাদের বিক্রয়ের ধরণের উপর নির্ভর করবে তার ভ্যাট হার কত হবে-ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর ভ্যাট ২০২৫
পন্য কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি করলে কমিশনের উপর ১৫% ভ্যাট দিলেই হবে? হ্যাঁ। শুধুমাত্র বিক্রয়ের উপর কমিশনের ভিত্তিতে (যে মূল্যে মূসক ৬.৩ তে ক্রয় সেই মূল্যে বিক্রয়): যে মূল্য দিয়ে ক্রয় সেই মূল্যেই কোন প্রকার মূল্য সংযোজন ব্যতীত সরবরাহ করা হলে (শুধুমাত্র কমিশনের ভিত্তিতে)তার সরবরাহকৃত পণ্যের উপর আর কোন ভ্যাট দিতে হবে না কেননা তার ক্রয় পর্যায়েই তার পর্যায়ে কমিশনের বা সংযোজনের পরিমাণ যোগ করে উক্ত মূল্যের উপর ভ্যাট পরিশোধিত হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে যে কমিশন তিনি উক্ত সরবরাহ বাবদ পাবেন তার উপর অন্যান্য বিবিধ সেবা হিসাবে ১৫% হারে সেবার ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে।
পন্য ক্রয় করার পর কমিশন বা মূল্য সংযোজন করার পর সংযোজিত মূল্যে বিক্রয় করলে ভ্যাট? ক্রয় করার পর যদি কোন প্রকার মূল্য সংযোজন করে বিক্রয় করা হয় (কমিশন বা অন্যান্য) অর্থাৎ যে মূল্যে ক্রয় করা হয় সেই একই মূল্যে যদি বিক্রয় করা না হয় সেক্ষেত্রে উক্ত সরবরাহের উপর আইনের তৃতীয় তফসিল মোতাবেক সাধারণ ভ্যাট হার হবে ৫% যদি প্রথম তফসিলের মাধ্যমে অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্য না হয় বা এসআরও ১৭২/১৯ এর মাধ্যমে ব্যবসায়ী পর্যায়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্য না হয়। এক্ষেত্রে উক্ত ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর বা ব্যবসায়ী যদি রেয়াতি পদ্ধতিতে আদর্শ হারে (১৫%) ভ্যাট দিতে চান তাহলে আইনে কোন বাঁধা নেই। রেয়াতি পদ্ধতিতে ভ্যাট দেয়ার সুবিধা হলো এক্ষেত্রে তার প্রকৃত কমিশন বা মূল্য সংযোজনের উপরই কেবল পরিশোধ করতে হয় বিধায় ভ্যাটের বোঝা কম হয় এবং পণ্যের মূল্যও সাধারণের নাগালের মধ্যে রাখা সম্ভব হয়।
সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বা এমআরপি (MRP) মূল্যে বিক্রয় (পণ্যের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা থাকলে) করলে ভ্যাট? মূলত ভোক্তার নিকট যে মূল্যে পণ্য বা সেবা সরবরাহ করা হয় সেই মূল্যের উপর ভ্যাট পরিশোধ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারলেই হবে অর্থাৎ ভোক্তা যে মূল্যে ক্রয় করবেন সেই মূল্য পর্যন্ত যত প্রকার মূল্য সংযোজন হবে সেই সংযোজনসহ সর্বমোট মূল্যের উপর ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে হবে। ধরা যাক ঔষধের ভ্যাট। ঔষধের ক্ষেত্রে বিক্রয় বা ব্যবসায়ী পর্যায়ের নির্ধারিত ভ্যাট উৎপাদন পর্যায়ে পরিশোধ করা হয় বিধায় ফার্মেসি থেকে নতুন করে কোন ভ্যাট আদায় করার প্রয়োজন নেই, কেননা এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী পর্যায়ের ভ্যাট আদায় করা হয়েছে এবং কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের ভিত্তিতে কমিশনে পণ্য বিক্রয় করে থাকে।
বিক্রয় মূলত তিন ধরণের হয়ে থাকে, যথা: (১) শুধুমাত্র বিক্রয়ের উপর কমিশনের ভিত্তিতে (যে মূল্যে মূসক ৬.৩ তে ক্রয় সেই মূল্যে বিক্রয়) এবং (২) ক্রয় করার পর কমিশন বা মূল্য সংযোজন করার পর সংযোজিত মূল্যে বিক্রয় এবং (৩) সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বা এমআরপি (MRP) মূল্যে বিক্রয় (পণ্যের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা থাকলে ভ্যাট কেমন হবে জানুন।
খাবার পানির ক্ষেত্রে ভ্যাট? মিনারেল ওয়াটারের বিষয়টি ধরা যাক। কোন কোম্পানি যদি মিনারেল ওয়াটারের ব্যাবসায়ী ভ্যাটসহ সকল ভ্যাট উৎপাদন পর্যায়ে পরিশোধ করে সরবরাহ করেন এবং ব্যবসায়ী যে মূল্যে ক্রয় করলেন সেই মূল্যেই বিক্রয় করনে সেক্ষেত্রে বিক্রয় পর্যায়ে তার উপর আর কোন ভ্যাট আদায় করার প্রয়োজন নাই। কিন্তু ক্রয় মূল্য আর বিক্রয় মূল্য যদি আলাদা হয় অর্থাৎ যে মূল্য দিয়ে ক্রয় করা হয়েছে তার সাথে কমিশন বা অন্য কোন চার্জ বা মূল্য সংযোজন করে বিক্রয় করা হয়েছে সেক্ষেত্রে তৃতীয় তফসিল মোতাবেক ব্যবসায়ী ভ্যাট হবে ৫% কিন্তু কেউ চাইলে রেয়াতি পদ্ধতিতে দিতে পারবেন।
Caption: VAT Question and Answer pdf
রেয়াত পদ্ধতিতে ভ্যাট ২০২৫ । রেয়াতি পদ্ধতিতে ভ্যাট পরিশোধ করতে হলে তাকে আইন মোতবেক কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে।
- যেমন: মূসক ৬.১ ও ৬.২ এ ক্রয় বিক্রয়ের তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে এবং দাখিলপত্রের সাথে রেয়াতের স্বপক্ষে ধারা ৪৬ মোতাবেক দলিলাদি দাখিল করতে হবে।
- এসব না করে কেউ সংযোজিত মূল্য বা কমিশনের উপর রেয়তি পদ্ধতিতে হিসাব করে শুধুমাত্র সংযোজনের উপর ১৫% ভ্যাট পরিশোধ করতে পারবেন না সেক্ষেত্রে রেয়াত যথাযথ হয়েছে প্রমাণ করা যাবে না বিধায় অনেক জটিলতার সৃষ্টি হবে।
- উক্ত ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটরের সরবরাহকৃত পণ্য বা সেবা যদি সাধারণ আদেশ-১৭/১৯ (টার্ণওভার নির্বিশেষে মূসক আরোপযোগ্য) বা আইনের ২য় তফসিলের পণ্য (সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য) না হয় সেক্ষেত্রে তিনি টার্ণওভার সুবিধাপ্রাপ্ত হতে কোন আইনগত বাঁধা নেই।
তেল বা জ্বালানি ক্ষেত্রে ভ্যাট কিভাবে পরিশোধিত হয়?
পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের ক্ষেত্রে ক্রেতাকে সরাসরি ভ্যাট পরিশোধ করতে হয় না। একইভাবে কোন কোম্পানি যদি তার পণ্যের উপর উৎপাদন পর্যায়ে সকল স্তরের ভ্যাট পরিশোধ সাপেক্ষে খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেন এবং তার ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর যদি কোন মূল্য সংযোজন না করে কোম্পানির নিকট হতে যে মূল্য দিয়ে ক্রয় করেন সেই মূল্যেই অথবা কোম্পানি নিজস্ব শো রুমে বিক্রয় পর্যায়সহ সকল পর্যায়ের মূসক পরিশোধ করে বিক্রয় করেন সেক্ষেত্রে উক্ত পণ্যের উপর আর ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট হবে পরিশোধ করতে হবে না। এক্ষেত্রে কোম্পানি বিভিন্ন পলিসি নির্ধারণ করতে পারেন। যেমন: হিরো হোন্ডা কোম্পানি তার উৎপাদন পর্যায়ের মূল্যের উপর ভ্যাট পরিশোধের পর বিক্রয় পর্যায়ের মূল্য সংযোজন (কমিশন) যোগ করে তার উপর ৫% ভ্যাটসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে কমিশন এবং ভ্যাট আলাদা করে দেয়ায় ভ্যাট আদায়ে কোন প্রকার জটিলতা তৈরী হচ্ছে না।