মাটিতে খাবার লবন প্রয়োগ মারাত্মক ক্ষতিকর।
ফসলের অধিক ফলনের অন্যান্য সার ব্যবহারের পাশাপাশি জমিতে খাওয়ার লবন প্রয়োগ করা মোটেও ঠিক নয়। যা ফসল উৎপাদনে কোন উপকার করে না বরং মারাত্মক ক্ষতি করে। খাওয়ার লবন সোডিয়াম এবং ক্লোরিন দ্বারা গঠিত। মাটিতে এগুলির পরিমান বাড়লে বিষাক্ততা দেখা দেয়। খাওয়ার লবন জমিতে দিলে সাময়িক কিছু ভাল ফলাফল দেখা গেলেও তা জমির ফসল উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং জমিকে অনুর্বর করে তোলে। মাটিতে খাওয়ার লবন প্রয়োগ করলে যে সকল ক্ষতি হয় তা হলো-
১। লবনাক্ততা মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয়। মাটিতে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান থাকলেও গাছ তা ব্যবহার করতে পারেনা। গাছে টিএসপি বা ডিএপি সার বা এমওটি সার ব্যবহার করলেও লবন প্রয়োগের জন্য কোন উপকার হয় না;
২। এছাড়াও গাছ মাটি থেকে পানি গ্রহণ না করতে পেরে দুর্বল হয়ে পড়ে কারণ লবনের সোডিয়াম ও ক্লোরিন গাছের পানি নেয়ার অভিশ্রবণ প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়;
৩। খাওয়ার লবনের কারণে কচি শিকড়ের মুখ পুরে যায়। কারণ লবন মাটিতে ক্ষারীয় অবস্থা সৃষ্টি করে। ফলে শিকড় দিয়ে গাছ পুষ্টি নিতে পারে না ফলে গাছের রোগ সৃষ্টি হয়। এছাড়া কপি শিকড়ের মুখ পুড়ে যাওয়ার কারণে গাছের শিকড়ের বিস্তার কমে যায় এবং গাছ হলুদ হয়ে যায়;
৪। মাটির উপকারী অনুজীব নষ্ট হয়, যার ফলে মাটি তার স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। ফলে গাছের বিভিন্নভাবে ক্ষতি হয়ে থাকে;
৫। গাছের ভিতরের প্রয়োজনীয় উপকারী রস শিকড় মাটিতে চলে যায়। কারণ লবন প্রয়োগ করলে গাছের মধ্যেকার রসের ঘনত্বের চেয়ে মাটির মধ্যকার পানির ঘনত্ব বেড়ে যায় ফলে গাছের রস মাটিতে পানিতে চলে আসে। ফলে গাছ দুর্বল হয়ে মারা যায়;
৬। বীজের অংকুররোদগম ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। লবনাক্ত মাটিতে গাছের কচি অংকুর বের হতে পারে না ফলে উৎপাদন ও ফরম উভয়ে কমে যায়;
৭। এছাড়া খাওয়ার লবন প্রয়োগের কারণে মাটিতে গঠন ভেঙ্গে যায়। ফলে সঠিক মাত্রায় মাটিতে পানি ও বাতাস থাকতে পারেনা। আর পানি ও বাতাস পরিমাণ মত না থাকলে গাছের শিকড় সঠিকভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারে না, ফলে গাছ সহজে পানি গ্রহণ করতে পারে না।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস বা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিন। এছাড়াও যে কোন মোবাইল হতে ১৬১২৩ নম্বরে ফোন করে প্রতিদিন ৭.০০ টা হতে রাত ৯.০০ টা পর্যন্ত সরাসরি কৃষি বিষয়ক তথ্য জানুন। এই সেবা শুক্রবার ও অন্যান্য ছুটির দিন বন্ধ থাকে।
সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী