কুরআনে নামাজ কায়েম নিয়ে মতামত ২০২৩ । কুরআনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার নির্দেশ রয়েছে কিনা?
নামাজ আদায় করার কথা কোরআনে বারবার বলা হয়েছে- এটি সন্দিহার থাকলে আপনি পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন – ফরজের পাশাপাশি কেন সুন্নত নামাজ পড়বেন জেনে নিন – নামাজ এবং কোরআন
নামাজ কায়েম কর মানে কি? –নামাজ একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদত যা নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায় করতে হয়। পদ্ধতিগুলো- রুকু, সেজদা, দাঁড়ানো, বসাসহ পুরো কর্ম বাস্তবে দেখে শিক্ষা গ্রহণ করে সঠিক নিয়ম মেনেই পালন করতে হবে। মনগড়া কর্ম গ্রহণযোগ্য নয়। নামাজ বান্দা ও আল্লাহর মাঝে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার অন্যতম সেতুবন্ধন। নামাজ কায়েম মানেই নামাজ পড়া বা আদায় করাকেই মূলত বুঝানো হয়েছে।
৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে কোথায় বলা হয়েছে? নামাজ বলতে আমরা আল্লাহর উদ্দেশে নিজেদের সমর্পণকে বুঝি। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ বা অবশ্যকর্তব্য। এই পাঁচ ওয়াক্ত হলো ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব ও ইশা। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কেমন করে আমাদের জন্য এল, সে কথা বুখারি শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে
নামাজ কি প্রথমে দুই ওয়াক্ত ছিল? ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মাদ (সাঃ) ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন এবং অব্যবহিত পরে আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল ও সন্ধ্যায় দৈনিক দুই ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের জন্য ফরজ (আবশ্যিক) হওয়ার নির্দেশনা লাভ করেন। তিনি ৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে সকাল, সন্ধ্যা ও দুপুরে দৈনিক তিন ওয়াক্ত নামাজের আদেশ লাভ করেন। ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে রজব তারিখে মিরাজের সময় পাঁচওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, এ সময় যোহর, আসর ও ইশা ২ রাকাত পড়ার বিধান ছিল। ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে আল্লাহর তরফ থেকে ২ রাকাত বিশিষ্ট যুহর, আসর ও ইশাকে ৪ রাকাতে উন্নীত করার আদেশ দেয়া হয়।[৯]
নামাজ সম্পর্কে কুরআনের আয়াত আরবী । আল-কোরআনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েমের নির্দেশ আছে কি
ফরজ নামাজে কোনও কমতি দেখা গেলে আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের বলবেন, ‘দেখ, আমার বান্দার কোনও নফল (নামাজ) আছে কি না।’ অতএব তার নফল নামাজ দ্বারা ফরজ নামাজের ঘাটতি পূরণ করা হবে। তারপর অন্য আমলের হিসাব গ্রহণ করা হবে।’ -(সুনানে আবু দাউদ, ৭৭০, তিরমিজি, ৩৩৭, ইবনে মাজাহ, ১১৭) । নামাজ পড়া নিয়ে একবার নয় বারংবার বলা হয়েছে।
Caption: Kalerkantho
৫ ওয়াক্ত নামাজ কিভাবে এলো । প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত ফরম করা হয়েছিল?
- ইবনে হায্ম ও আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেছেন যে ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তারপর আল্লাহ আমার উম্মতের ওপর ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিলেন।
- আমি সেটা নিয়ে ফিরে আসি। মুসা (আ.)-কে পার হওয়ার সময় তিনি বললেন, আল্লাহ আপনার উম্মতের ওপর কী ফরজ করেছেন? আমি বললাম, ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন।
- তিনি বললেন, আপনি আপনার পালনকর্তার কাছে ফিরে যান, আপনার উম্মত তো এতটা পালন করতে পারবে না। আমি তখন ফিরে গেলাম।
- আল্লাহ তাআলা কিছুটা কমিয়ে দিলেন।
- আমি মুসা (আ.)-কে পার হওয়ার সময় বললাম, কিছুটা অংশ (আল্লাহ) কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেন, আপনি আবার আপনার রবের কাছে ফিরে যান।
- কারণ আপনার উম্মত এটুকুও আদায় করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম।
- তখন আরও কিছু অংশ কমিয়ে দেওয়া হলো। আবারও মুসা (আ.)-এর কাছে গেলাম।
- এবারও তিনি বললেন, আপনি আবার আপনার প্রতিপালকের কাছে যান। কারণ আপনার উম্মত এও আদায় করতে পারবে না। তখন আমি আবার গেলাম।
- তখন আল্লাহ বললেন, এই পাঁচটিই (পূণ্যের হিসাবে) ৫০ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোনো রদবদল হয় না।
ফজরের নামাজের সময় কাল কিভাবে আসলো?
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সূর্য ওঠার আগে এক রাকাআত (ফরজ নামাজ) পেল, সে ফজরের নামাজ পেল। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। আসর নামাযের সর্বনিম্ন সময়কাল:যে ব্যক্তি সূর্য ডোবার আগে আসরের এক রাকাআত নামাজ পেল,সে-ও আসরের নামাজ পেল।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। রহমান রহীম আল্লাহ কত মেহেরবাণ। যিনি স্বীয় বান্দার এক রাকাত নামাযের শ্রমও যাতে বিফল না যায় তার জন্য এমন রহমপূর্ণ মাসায়িল।
সুন্নত নামাজ না পড়লে কি হবে? ফরজ নামাজ আদায়ে তাই সবার যত্নশীল হওয়া উচিত। এর পাশাপাশি প্রত্যেক নামাজের আগে পরের সুন্নত নামাজগুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা উচিত। কারণ, সুন্নত নামাজ আদায় করা ফরজ না হলেও এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সুন্নত নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, কেয়ামতের দিন কারও ফরজ নামাজে ঘাটতি থাকলে, এ নামাজ দ্বারা আল্লাহ তায়ালা সেই ঘাটতি পূরণ করবেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সবার আগে যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে, তা হল নামাজ। নামাজ ঠিক হলে সে পরিত্রাণ ও সফলতা লাভ করবে। নইলে (নামাজ ঠিক না হলে) ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ’ -(সুনানে আবু দাউদ, ৭৭০, তিরমিজি, ৩৩৭, ইবনে মাজাহ, ১১৭)