কৃষি ও অকৃষি জমি সুরক্ষা আইন ২০২৪ । সরকারের অনুমতি ব্যতীত কৃষি জমির আবাসিক ব্যবহারে ২ বছর কারাদন্ড?
ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন, ২০২৪ কৃষি ও অকৃষি জমি রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে– কৃষি ও অকৃষি জমি সুরক্ষা আইন ২০২৪
জমি বা ভূমি জোনিং হচ্ছে? হ্যাঁ। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন বাড়ি-ঘর তৈরি, উন্নয়নমূলক কার্য শিল্প কারখানা স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক কারণে প্রতিনিয়তই ভূমির প্রকৃতি ও শ্রেণিগত ব্যবহারের পরিবর্তন হইতেছে, দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি জমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড় ও জলাশয় বিনষ্ট হইয়া খাদ্য শস্য উৎপাদনের নিমিত্ত কৃষিজমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাইতেছে এবং পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়িতেছে; যেহেতু ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করিয়া পরিকল্পিত জোনিং এর মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় অনুশাসন নিশ্চিত করা দরকার। যেহেতু, অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন, আবাসন, বাড়ি-ঘর তৈরী, উন্নয়নমূলক কার্য, শিল্প-কারখানা এবং রাস্তাঘাট নির্মাণরোধ করিয়া ভূমির শ্রেণি বা প্রকৃতি ধরিয়া রাখিয়া পরিবেশ রক্ষা ও খাদ্য শস্য উৎপাদন অব্যাহত রাখিবার উদ্দেশ্যে কৃষিভূমি, জলাভূমি, টিলা, পাহাড় ও জলাশয়ের পরিবর্তে কৃষিজমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড়, নদী, খালবিল ও জলাশয় সুরক্ষাসহ ভূমির পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
কৃষি জমি কোনগুলো? উপজেলার অধিক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলার অধিক্ষেত্রে কালেক্টর, বিভাগীয় অধিক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনার, সমগ্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভূমি আপীল বোর্ড এবং সর্বোপরী ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি ম্যানেজমেন্ট করে থাকে। ব্যক্তি অর্থে যে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, কোম্পানি, অংশীদারি কারবার, ফার্ম, সমিতি বা সংঘও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে এবং অকৃষি ভূমি অর্থ দেশের ৪টি মেট্রোপলিটন এলাকা, সকল পৌর এলাকা এবং সকল থানা সদর বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী শহরাঞ্চল হিসাবে বিবেচিত হইবে। এই সকল এলাকাভূক্ত কৃষিযোগ্য খাসজমি ও অকৃষি খাসজমি হিসাবে বিবেচিত হইবে। ইহার বাহিরে অবস্থিত কৃষিযোগ্য জমি বাদে অন্যান্য সকল জমি অকৃষি খাসজমি হিসাবে বিবেচিত হইবে।
তিন ফসলি জমি বলতে কি বুঝায়? কৃষি ভূমি অর্থ- চাষযোগ্য ভূমি যাহা চাষ করা হয় অথবা চাষ না করিয়া ফেলিয়া রাখা হয় অথবা মাঠ ফসল, উদ্যান ফসল অথবা প্রাণিপালন কার্যে ব্যবহৃত হয়। কৃষি ভূমির ফসলের প্রকার’ বলিতে, (অ) ‘এক ফসলী’ অর্থ- যে জমিতে বছর জুড়ে (বৈশাখ-চৈত্র) ফসল চাষ করা হয়। (আ) ‘দুই ফসলী’ অর্থ- যে জমিতে বছর জুড়ে (বৈশাখ-চৈত্র) দুটি ফসল চাষের চর্চা করা হয় । (ই) ‘তিন ফসলী’ অর্থ- যে জমিতে বছর জুড়ে (বৈশাখ-চৈত্র) তিনটি ফসল চাষের চর্চা করা হয়।
কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন ২০২৪ । কৃষি জমি অকৃষি কাজে ব্যবহার নীতিমালা । ফসলি জমির মাটি কাটা আইনের খসড়া প্রকাশিত হয়েছে
‘পাহাড় ও টিলা’ অর্থ- বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ২(চ) ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট পার্শ্ববর্তী সমতল ভূ-পৃষ্ট হইতে উঁচু মাটি অথবা মাটি ও পাথর অথবা পাথর অথবা মাটি ও কাঁকড় অথবা অন্য কোন কঠিন পদার্থ সমন্বয়ে গঠিত স্তুপ বা স্থান এবং সরকারি রেকর্ডপত্রে পাহাড় বা টিলা হিসাবে উল্লিখিত ভূমি।
কোনো ব্যক্তি এই আইনের ১০ ও ১১ ধারা অথবা এই আইনের অধিনে প্রণীত বিধিমালা অমান্য বা লঙ্ঘন করিলে উক্তরুপ কার্যক্রম হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
Caption: Full pdf Download Link
ভূমি জোনিং এর শ্রেণিবিন্যাস ২০২৪ । ভূমি জোনিং এর উদ্দেশ্যে ভূমিকে নিম্নবর্ণিত শ্রেণিতে বিভক্ত করা যাইবে
- ক) আবাদি
- খ) আবাসিক
- গ) বাণিজ্যিক
- ঘ) জলাভূমি ঙ) নদী
- চ) বন
- ছ) পাহাড়
- জ) রাস্তা
- ছ) শিল্প
- ঝ) ধর্মীয় স্থান
জমি বা ভূমি জোনিং বলতে কি বুঝায়?
ভূমি জোনিং ম্যাপ- আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, একটি সুনির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ধারণকৃত ইমেজ বিশ্লেষণ ও প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করিয়া ভূমির ব্যবহারভিত্তিক জোন নির্ধারণ করতঃ সরকার ডিজিটাল ভূমি ব্যবহার জোনিং ম্যাপ (Land use Zoning Map) প্রণয়ন করিবে এবং ভূমির ব্যবহারভিত্তিক বৈশিষ্ট্য, অবস্থান ও ভূমিরূপ বিবেচনা করিয়া বিদ্যমান ভূমিকে বিভিন্ন অঞ্চলে সীমারেখা দ্বারা চিহ্নিত করিয়া ভূমিকে প্রয়োজনীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করিবে এবং জোনিং ম্যাপ ও বিবরণ গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করিবে। বাংলাদেশের সকল ভূমির জোনিং করিতে হইবে এবং ভূমি জোনিং ম্যাপ ভূমি মন্ত্রণালয় অনুমোদন করিবে।
চাইলে জমি ভরাট করা যাবে না? না। কৃষি ভূমি ব্যতিত অন্যান্য জমির সুরক্ষা এই আইনের মাধ্যমে সকল কৃষিভূমি সুরক্ষা করিতে হইবে এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিত উহার ব্যবহার ভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা যাইবে না, অধিকন্তু তিন বা তদুর্ধ ফসলী জমিকে কোনো অবস্থাতেই কৃষি ব্যতিত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাইবে না। এক বা দুই ফসলি জমিকেও কৃষিভূমি হিসাবেই ব্যবহার করিতে হইবে; তবে উন্নয়ন প্রকল্প বা শিল্প কারখানা স্থাপন বা অন্য কোনো বিশেষ প্রয়োজনে সরকার প্রধানের অনুমতিক্রমে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাইবে। তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা ৫(১) এ বর্ণিত বন, জলাভূমি,নদী, পাহাড় শ্রেণীসমূহ এবং সাগর ও উপকূলীয় অঞ্চলের ভূমি সরকার প্রধানের অনুমোদন ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাইবে না।
ভূমি জরিপ কখন হবে ২০২৩ । বিডিএস জরিপ কি বাতিল নাকি চলছে?