গুজব ও ভিউ বানিজ্যের যুগে আপনাকে সঠিক সংবাদ খুজে বের করতে হবে- সব কিছুর তো প্রজ্ঞাপন হয় না – মিউটেশন প্রক্রিয়া বাতিল গুজব ২০২৪
এখন কি নামজারি বা মিউটেশন করতে হবে না? হবে। সম্প্রতি অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে কিছু ব্যক্তি নামজারি প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে মর্মে বিভিন্ন তথ্য কিংবা ভিডিও কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করা হচ্ছে। এতে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের বর্তমান ভূমি আইন ব্যবস্থাপনায় নামজারি প্রক্রিয়া বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। অবশ্যই প্রতিটি ক্ষেত্রে নামজারি করতে হবে।
মিউটেশন নিয়ে কি নতুন আইন জারি হয়েছে? না। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর ১৪৩ (গ) ধারায় খতিয়ান সংশোধনের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা আছে, “ধারা ৮৯ এর অধীন নোটিশ প্রাপ্তির পর, রাজস্ব কর্মকর্তা খতিয়ানে নামজারির জন্য একটি নথি খুলিবেন এবং নামজারির জন্য জোতের সহ-অংশীদারগণের প্রতি নোটিশ জারি করিবেন”। প্রজাস্বত্ত্ব বিধিমালা ১৯৫৫-এর ৮, ৯ এবং ২৩ ধারাতেও নামজারির কথা বলা হয়েছে। তাই আইন যেহেতু বাতিল হয়নি তাই নামজারি বা খারিজ করতে হবে।
নামজারি বাতিল হলে মালিকানা পরিবর্তন হবে কিভাবে? নামজারি বাতিল হয়নি। ক্রয়সূত্রে মালিকানা ছাড়াও পৈত্রিক বা ওয়ারিশসূত্রে মালিকানা, আদালতের ডিগ্রী সূত্রে মালিকানা আসে তাই নামজারি বাতিল হলে এসব মালিকানা কিভাবে পরিবর্তিত হবে? নামজারি প্রক্রিয়া বহাল আছে এবং থাকবে সরকারি ভাবে সেটি অবগত করা হয়েছে। গুজবে কান দিবেন না, মিথ্যা প্রচারণা আপনাকেই খুজে বের করতে হবে। মিথ্যা বা গুজব তথ্য শেয়ার করা হতে বিরত থাকুন।
দলিল নিবন্ধনেই নামজারি / মিউটেশন প্রক্রিয়া বাতিল হওয়ার সুযোগ নেই
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে অনলাইন নামজারি সিস্টেমে “অনলাইনে আবেদন করুন” এবং “আবেদন ট্র্যাকিং” নামে দুটি অংশ রয়েছে। বাম পাশে “অনলাইনে আবেদন করুন” অংশের নীচে “নামজারি আবেদনের জন্য ক্লিক করুন” লেখায় ক্লিক করলে আবেদন ফর্ম আসবে। নির্ভুলভাবে সেই ফরম পূরণ এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে আবেদন জানাতে হবে। দলিল রেজিস্ট্রেশন এবং মিউটেশন ওয়েবসাইট যুক্তকরণের মাধ্যমে যাচাই প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।
Caption: Info Source
খারিজ বা মিউটেশনের প্রয়োজনীয়তা ২০২৪ । নামজারি বা মিউটেশন কি, কেন করতে হয়?
- নামজারি বা মিউটেশন হচ্ছে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মালিকানা পরিবর্তন করা।
- কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন বৈধ পন্থায় ভূমি/জমির মালিকানা অর্জন করার পর তা নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করে সরকারি রেকর্ড সংশোধন করে তার নামে রেকর্ড আপটুডেট (হালনাগাদ) করাকেই নামজারি বলা হয়।
- কোন ব্যক্তির নামজারি সম্পন্ন হলে তাকে একটি খতিয়ান দেয়া হয় যেখানে তার অর্জিত জমির একখানি সংক্ষিপ্ত হিসাব বিবরণী উল্লেখ থাকে।
- দুইটি জরিপ কার্যক্রমের মধ্যবর্তী সময়ে রেকর্ড সংশোধন করা হয় নামজারির মাধ্যমে।
- জমির মালিকানা প্রমাণের অন্যতম প্রধান শর্ত সরকারি রেকর্ডে/খতিয়ানে নাম থাকা।
মিউটেশন বা খারিজ নাকি এখন আরও সহজ?
হ্যাঁ। সরকার জনগণের সুবিধার্থে ও ভোগান্তি কমাতে নামজারি প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। জমি ক্রয় কিংবা অন্যকোনোভাবে মালিকানা পরিবর্তন পরবর্তী ভূমি নিবন্ধনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে “রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ”-এর মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী গত ২৯ মার্চ ২০২৩ তারিখে রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় নামজারি প্রক্রিয়া কার্যক্রম শুরু করেন। বর্তমানে দেশের ১৭টি উপজেলায় এই কার্যক্রম চলমান। দেশব্যাপী রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে।