একা একাই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধণ – অনেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন করতে চান। কেউ কেউ দালালেরও সহযোগিতা নিয়ে থাকে। আমি বলবো আপনার হাতে সময় থাকতে আপনি নিজেই চেষ্টা করুন দেখবেন কোন রকম অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ছাড়াই আপনি আপনার স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন করতে পারবেন। আসুন এনআইডি সংশোধন করার প্রসেসটা জেনে নিই।

ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফরম-২ যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাচন অফিস এ হেল্প ডেস্ক এ রিকুয়েস্ট করলে তারা প্রিন্ট করে দিতে পারে। এই স্থায়ী ঠিকানা সংশোধনের আবেদনটি সাধারনত খ-ক্যাটাগরিতে পড়ে। অর্থাৎ জেলা নির্বাচন অফিসার আবেদনটি অনুমোদন করবেন। তাই কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হতে পারে।

আপনার সমস্যাটি ভদ্রভাবে উপজেলা নির্বাচন অফিসার স্যারকে বুঝিয়ে বলুন। অভদ্র ব্যাবহার বা মাথা গরম করবেন না, হিতে বিপরীত হতে পারে। আপনি যদি সঠিক ডকুমেন্ট যুক্ত করতে পারেন এবং যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেন তাহলে কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন কোন ব্যাপারই হবে না। ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফরম-২ ডাউনলোড করুন

স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনে অনলাইন আবেদন করা যাবে না / ঠিকানা পরিবর্তনে আপনাকে অবশ্যই অফলাইনে বা ম্যানুয়াল আবেদন করতে হবে।

আপনি যদি শুধু ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চান তবে নিচের ফরমটি সংগ্রহ করে নিন।

এক ভোটার এলাকা হইতে অন্য ভোটার এলাকায় ভোটার স্থানান্তরের আবেদন পত্র: ডাউনলোড

স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনে যে স্টেপগুলো অনুসরণীয় কি?

ধাপ-১ । বাংলাদেশ এনআইডি পোর্টাল https://services.nidw.gov.bd/nid-pub থেকে আপনার প্রোফাইল এ ঠিকানা তে দেখুন আপনি কোন ঠিকানায় ভোটার। মানে আপনি বর্তমান ঠিকানায় ভোটার নাকি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার। সহজ কথায় আপনার প্রোফাইল এ বর্তমান ঠিকানার পাশে “এই ঠিকানায় ভোটার” লেখা আছে নাকি স্থায়ী ঠিকানার পাশে “এই ঠিকানায় ভোটার” লেখা আছে। যদি বর্তমান ঠিকানায় ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ধাপ-২ তে চলে যান। কিন্তু যদি আপনি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে একই ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তরের মাধ্যমে বর্তমান ঠিকানায় ভোটার করতে হবে। এই কাজটি আপনাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে করতে হবে।

ধাপ-২। বিকাশ, রকেট বা অন্য যেসব মাধ্যমে NID CORRECTION FEE জমা নেওয়া হয়, তার মাধ্যমে OTHER INFO CORRECTION এর জন্য ফি জমা দিতে হবে। এরপর উপজেলা নির্বাচন অফিসে CMS SOFTWARE এর মাধ্যমে OTHER INFO CORRECTION এর আবেদন এন্ট্রি করতে হবে। আবেদনের সাথে ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফরম-২, জন্ম নিবন্ধন সনদ, চেয়ারম্যান বা মেয়রের নাগরিকত্ব সনদ সংযুক্ত করবেন (যা ফর্মে উল্লেখ রয়েছে)ভোটার রেজিস্ট্রেশন ফরম-২ যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাচন অফিস এ হেল্প ডেস্ক এ রিকুয়েস্ট করলে তারা প্রিন্ট করে দিতে পারে।

একই সাথে দু’স্থানের ভোটার হওয়া যায় কি?

যায়। এ কাজটি কেউ কেউ করেছেনও বটে। কিন্তু এটি দন্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধটি করে আপনি হয়তো এতোদিন পার পেয়ে গেছেন কিন্তু অনলাইনে এখন ম্যাপিং ও ডুপ্লিকেট আইডি ফাইন্ডিং কাজ চলমান রয়েছে। তাই দুটো আইডি থাকলে তা নির্ণয় করা যাচ্ছে এবং নির্ণয় হলে একটি Invalid করে দেওয়া হচ্ছে। ইনভ্যালিড এনআইডি দিয়ে কোন কাজই অনলাইনে করতে পারবেন না। যেমন আপনি যদি সরকারি চাকরি পান তবে ফিক্সেশন হবে না। যদি লোনের আবেদন করেন তবে লোন পাস হবে না। এরকম অনেক কাজই ঐ এনআইডি দিয়ে করতে পারবেন না। তাই যদি আপনার দুটি এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে থাকে তবে যথাশীঘ্রই স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে একটি ফেরত দিয়ে বন্ধ করে নিন। ধন্যবাদ

জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এর ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তনের পদ্ধতিঃ জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করার জন্য আপনি যেই এলাকার ভোটার, সেই এলাকার সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে সংশোধন ফরম-২ এ আবেদন করতে হবে। ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করার জন্য সরকারি ফি বাবদ ২৩০/- মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। এই ফি বিকাশ/রকেট এর মাধ্যমে NID Info Correction এপ্লিকেশন টাইপে জমা দেয়া যাবে। উল্লেখ্য যে, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সংক্রান্ত ফি এখন আর চালানের মাধ্যমে জমা দেয়া যায় না।

আপনার আবেদনের পরে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে সরাসরি আপনার ছবি তোলা হবে ও স্বাক্ষর নেয়া হবে এবং তা অনুমোদনের জন্য সার্ভারে প্রেরন করা হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন সংক্রান্ত আবেদন “খ” ক্যাটাগরির বিধায় তা সাধারণত সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিসার অনুমোদন করে থাকেন। ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন আবেদন অনুমোদন হলে আপনাকে তা এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে এবং আপনি অনলাইন থেকে NID কার্ডের কপি ডাউনলোড করতে পারবেন অথবা সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস থেকে নতুন ছবি সংবলিত লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। উল্লেখ যে, পূর্বে ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন আবেদন অনুমোদন হলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানোর সুযোগ না থাকলেও বর্তমানে এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।