জিরো ট্যাক্সে দন্ড ২০২৫ । সবকটি ঘর শূন্য হিসেবে পূর্ণ করে রিটার্ন দাখিল করা যাবে না? - Technical Alamin
সরকারি আদেশ ও তথ্য

জিরো ট্যাক্সে দন্ড ২০২৫ । সবকটি ঘর শূন্য হিসেবে পূর্ণ করে রিটার্ন দাখিল করা যাবে না?

সূচীপত্র

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল বিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ সকল পোস্টে রিটার্ন পূরণের সবকয়টি ঘর “শূণ্য” হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় মর্মে ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করা হচ্ছে। এসকল ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাঁদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন মর্মে জানা যায়-জিরো ট্যাক্স দন্ড ২০২৫ 

জিরো রিটার্ন নামে কিছু নেই? না। আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তাঁর প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে। করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোন একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বে-আইনি এবং এটি একটি ফৌজদারী অপরাধ। করদাতা কর্তৃক দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে তাঁর আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।

আয় ও ব্যয়ে শুণ্য বা জিরো জিরো দেখানোর সুযোগ নেই? না। একজন করদাতার আয়, ব্যয়, সম্পদ বা দায় সংক্রান্ত বিষয়ে রিটার্নে সঠিক ঘোষণা প্রদান করা একজন করদাতার পবিত্র নাগরিক ও আইনী দায়িত্ব। করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমান আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাঁকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শূন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোন সুযোগ আয়কর আইনে নেই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে যে, সকল সম্মানিত করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন। একইসাথে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতারনামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড হতে সুরক্ষিত
রাখবেন।

জিরো রিটার্ন বলতে কি বুঝায়? জিরো রিটার্ন বলতে সাধারণত বোঝানো হয় এমন একটি আয়কর রিটার্ন যেখানে করদাতার কোনো করযোগ্য আয় থাকে না, ফলে তাকে কোনো কর দিতে হয় না। তবে, সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, আয়কর আইনে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো সুনির্দিষ্ট বিধান নেই। একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলেও সকল প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। যদি কোনো ব্যক্তি তার আর্থিক তথ্য গোপন করে বা রিটার্ন ফরমের সব ঘর খালি রেখে জমা দেন, তবে তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

শুন্য রিটার্ন নামে জিরো জিরো রিটার্ন দাখিল নয় । এনবিআর এর এ প্রেস রিলিজ সময়োপযোগী। স্কুল-কলেজের ফরম পূরণের মতো কম্পিউটার দোকানে গিয়ে এটা করতে গেলেই ধরা খাইতে হবে। তাই যারা জানেন বুঝেন তাঁদের হেল্প নিন প্লিজ।

রিটার্ন জমায় ফাঁকি দিলে শাস্তি? হ্যাঁ। আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে। করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোন একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ।

Caption: No Zero Return

সঠিক তথ্যে রিটার্ন দাখিল ২০২৫ ।  সঠিক রিটার্নের প্রয়োজনীয়তা কি?

  1. নাগরিক দায়িত্ব: একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের উন্নয়নে অংশ নেওয়া। 
  2. আইনি বাধ্যবাধকতা: নির্দিষ্ট কিছু পেশা বা আর্থিক অবস্থার জন্য আয় না থাকলেও রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। যেমন- ট্রেড লাইসেন্স থাকলে, সরকারি বা আধা-সরকারি চাকরিজীবী হলে, গাড়ির মালিক হলে ইত্যাদি। 
  3. ভবিষ্যৎ সুবিধা: অনেক সরকারি ও বেসরকারি সুবিধা পেতে, যেমন- ব্যাংক ঋণ, সঞ্চয়পত্র কেনা, টেন্ডারে অংশ নেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র প্রয়োজন হয়। 
  4. সুতরাং, সংক্ষেপে বলতে গেলে, জিরো রিটার্ন হলো এমন একটি আয়কর রিটার্ন, যেখানে কোনো কর পরিশোধ করতে হয় না। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আপনি কোনো তথ্য ছাড়াই খালি ফরম জমা দেবেন। বরং, আপনাকে অবশ্যই আপনার সকল আয়, ব্যয় ও সম্পদের সঠিক হিসাব দিতে হবে।

নো ট্যাক্স কাদের জন্য এটি প্রযোজ্য??

যদি আপনার করযোগ্য আয়ের সীমা (বর্তমানে পুরুষের জন্য ৩,৫০,০০০ টাকা এবং নারী ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী করদাতাদের জন্য ৪,০০,০০০ টাকা) অতিক্রম না করে, তাহলে আপনাকে কর দিতে হবে না। কিন্তু টিআইএন (Taxpayer Identification Number) থাকলে এবং আইন অনুযায়ী রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক হলে, আপনাকে সব তথ্য পূরণ করে রিটার্ন জমা দিতে হবে। এই ধরনের রিটার্নকেই সাধারণত “জিরো রিটার্ন” বলা হয়ে থাকে, যদিও এর অর্থ এই নয় যে আপনি কোনো তথ্য ছাড়াই রিটার্ন জমা দেবেন।

“জিরো রিটার্ন” বলতে বোঝায় এমন একটি আয়কর রিটার্ন (Income Tax Return) যেখানে করদাতা জানান যে, সংশ্লিষ্ট করবর্ষে তার কোনো আয়ের উৎস ছিল না অথবা আয় ছিল করযোগ্য সীমার নিচে, তাই তার কর দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

সহজভাবে বললে — আপনি করদাতা হিসেবে নিবন্ধিত (TIN আছে) কিন্তু ওই বছরে আপনার আয় শূন্য বা করমুক্ত সীমার মধ্যে, তখনও আইন অনুযায়ী আপনাকে রিটার্ন জমা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি জিরো রিটার্ন জমা দেবেন।জিরো রিটার্ন দেওয়ার কারণ-আয়কর আইনে বলা আছে, TIN থাকলে প্রতি বছর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া)

 

ভবিষ্যতে ঋণ, ভিসা, টেন্ডার ইত্যাদিতে ট্যাক্স সনদ লাগতে পারে অপ্রদত্ত রিটার্নের জন্য জরিমানা বা শাস্তি এড়ানো যায়।
আপনি চাইলে আমি আপনাকে জিরো রিটার্ন অনলাইনে কিভাবে জমা দিতে হয় তার ধাপগুলোও বুঝিয়ে দিতে পারি।উদাহরণ:
ধরুন, আপনি ২০২৪-২৫ করবর্ষে কোনো ব্যবসা করেননি বা বেতন পাননি। তবুও TIN থাকলে আপনাকে ফরম পূরণ করে শূন্য আয় দেখিয়ে রিটার্ন জমা দিতে হবে — এটিই জিরো রিটার্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *