প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির রায় ২০২৫ । প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে তাদের পদোন্নতি হচ্ছিল না কেন? - Technical Alamin
সরকারি আদেশ ও তথ্য

প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির রায় ২০২৫ । প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে তাদের পদোন্নতি হচ্ছিল না কেন?

সূচীপত্র

প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১-এর রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত দুই কর্মচারীকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। গত ২৬ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে– প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির রায় ২০২৫

যাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে-পদোন্নতিপ্রাপ্তরা হলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী মো: জিয়াউল হক ও মো: জিয়াউল ইসলাম। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই দুই কর্মচারী প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১, ঢাকায় তাদের দায়ের করা মামলার (মামলা নং ১০/২০২১) রায়ে জয়ী হওয়ায় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদেরকে এই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই দুই কর্মচারী প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১, ঢাকায় তাদের দায়ের করা মামলার (মামলা নং ১০/২০২১) রায়ে জয়ী হওয়ায় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদেরকে এই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

পদোন্নতির কারণ কি? ২০১৩ সালের উচ্চমান সহকারী, হিসাবরক্ষক, ক্যাশিয়ার, ও স্টোর কিপার পদে নিয়োগের জন্য জারিকৃত বিজ্ঞপ্তির আলোকে তাদের উচ্চমান সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে তাদের পদোন্নতি হচ্ছিল না। পরবর্তীতে তারা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১, ঢাকায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেই এই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এই পদোন্নতির মাধ্যমে মো: জিয়াউল হক ও মো: জিয়াউল ইসলামকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে গণ্য করা হবে।

পদোন্নতি পেতে আদালতে যেতে হয় কেন? যখন কোনো দপ্তরের পদোন্নতি সংক্রান্ত নিয়মাবলীতে অস্পষ্টতা থাকে বা নিয়মগুলো পুরোনো হয়, তখন পদোন্নতি প্রক্রিয়া থমকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য কর্মীরা পদোন্নতি পান না, কারণ কর্তৃপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে আইনি সহায়তা নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না।অনেক সময় পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার নিয়ম মানা হয় না। যে ব্যক্তি বেশিদিন ধরে কাজ করছেন এবং জ্যেষ্ঠ, তাকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুন কাউকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর ফলে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা মনে করেন তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। তারা ন্যায়বিচার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পদোন্নতির জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে বা সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় নেয়। এতে কর্মচারীরা আর্থিকভাবে এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই প্রশাসনিক অবহেলার কারণেও অনেকে আদালতের সাহায্য নিতে বাধ্য হন।

অফিস সহকারী পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে উচ্চমান সহকারী হওয়া সম্ভব। এরপর, উচ্চমান সহকারী পদ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া যায়। কিছু ক্ষেত্রে, প্রধান সহকারী ও উচ্চমান সহকারী উভয় পদ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

কখনও কখনও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ ওঠে। যদি কোনো কর্মচারী মনে করেন যে লিঙ্গ, ধর্ম, বা অন্য কোনো কারণে তাকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, তাহলে তিনি আইনি প্রতিকার চাইতে পারেন। আদালত এই ধরনের মামলাগুলো পর্যালোচনা করে নিশ্চিত করে যে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা। আদালত যখন কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে রায় দেয়, তখন সেই রায় মানা বাধ্যতামূলক হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হয়।

Caption: UDO to Administration Officer

উচ্চমান সহকারী পদের পরবর্তী পদোন্নতির স্তর সাধারণত প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা সুপারভাইজার। তবে এই পদোন্নতির ঊর্ধ্বক্রম ও নিয়মাবলী বিভিন্ন দপ্তরে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত, সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর বা অন্যান্য দপ্তরের নিজস্ব নিয়োগবিধি এবং পদোন্নতি নীতিমালার ওপর এটি নির্ভর করে।

  1. সাধারণত, উচ্চমান সহকারী পদ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয়। যেমন:

     

  2. নির্দিষ্ট সময়কাল চাকরি: সাধারণত, উচ্চমান সহকারী পদে অন্তত ৫ থেকে ৭ বছর চাকরি করার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।

     

  3. জ্যেষ্ঠতা: পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার নিয়ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরোনো কর্মচারীরা সাধারণত অগ্রাধিকার পান।

     

  4. নিয়োগবিধি: প্রতিটি দপ্তরের নিজস্ব নিয়োগবিধি থাকে, যা পদোন্নতির প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, এবং অন্যান্য শর্তাবলী নির্ধারণ করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা কর বিভাগের মতো কিছু দপ্তরে পদোন্নতির নিয়মাবলি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে।

     

  5. যদি কোনো কর্মচারী মনে করেন যে তিনি পদোন্নতির যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পদোন্নতি পাচ্ছেন না, তাহলে তিনি আইনি প্রতিকার চাইতে পারেন, যেমনটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ঘটেছে। এটি প্রমাণ করে যে, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলেও অনেক সময় প্রশাসনিক জটিলতার কারণে পদোন্নতি পেতে দেরি হতে পারে।

     

  6. সার্বিকভাবে বলা যায়, উচ্চমান সহকারীর পদোন্নতির ঊর্ধ্বক্রম মূলত প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং এই প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিজস্ব নিয়মাবলী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

উচ্চমান সহকারী পদ হতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছিল না কেন?

পদোন্নতি সংক্রান্ত কিছু প্রশাসনিক জটিলতা এবং নিয়ম-সংক্রান্ত কিছু অসঙ্গতির কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারীদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দিতে বিলম্ব হয়েছে। নিয়োগবিধির অসঙ্গতি উচ্চমান সহকারী থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য সুনির্দিষ্ট এবং সুস্পষ্ট কোনো বিধিমালা ছিল না। এ কারণে পদোন্নতি প্রক্রিয়া প্রায়শই আটকে থাকত। প্রশাসনিক জটিলতা পদোন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরতে থাকে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটায়। মামলার রায় যেহেতু সাধারণ প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় পদোন্নতি হচ্ছিল না, তাই কিছু কর্মচারী প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১-এর রায়ের পরই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পদোন্নতি দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেয়। এই সমস্যার সমাধান করতে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায়কে বিবেচনায় নিয়ে পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটেছে।

উচ্চমান সহকারী থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির ধাপ। এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনো জটিলতা দেখা দেয় (যেমন, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন বা প্রশাসনিক অবহেলা), তাহলে অনেক সময় কর্মচারীরা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-এর শরণাপন্ন হন। ট্রাইব্যুনালের রায় পেলে দপ্তরের জন্য সেই রায় কার্যকর করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।

১. পদ: উচ্চমান সহকারী

যোগ্যতা:

নির্দিষ্ট সময়কাল চাকরি (সাধারণত ৫-৭ বছর)।

জ্যেষ্ঠতা তালিকায় নাম থাকা।

২. প্রশাসনিক প্রক্রিয়া:

পদোন্নতি কমিটি: সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পদোন্নতি কমিটি কর্মচারীর জ্যেষ্ঠতা, কর্মদক্ষতা এবং যোগ্যতার মূল্যায়ন করে।

সুপারিশ: কমিটি যোগ্য কর্মচারীর নাম পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করে।

৩. পদোন্নতি আদেশ:

চূড়ান্ত অনুমোদন: মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পদোন্নতির আদেশ জারি করে।

প্রজ্ঞাপন: গেজেট আকারে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে পদোন্নতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।

৪. পদ: প্রশাসনিক কর্মকর্তা

নতুন দায়িত্ব: পদোন্নতির পর একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন, যেমন:

 

ফাইল ব্যবস্থাপনা ও তদারকি।

অধীনস্থ কর্মীদের কাজ তদারকি।

দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *