জমি জমা নিয়ে জেলা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল কোন রায় দিলে হাইকোর্টে আপীল করতে হতো-গেজেট প্রকাশিত হওয়ায় এখন জেলা ট্রাব্যুনালেই আপীল করা যাবে – District Land Survey Appeal Tribunal
এখন কি জেলায়ই আপীল করা যাবে? হ্যাঁ। অবশেষে বহুল প্রতিক্ষার পর দৌড়াদৌড়ির অবসান ঘটল। আপনার জেলায় ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইবুনাল গঠিত হয়েছে। এখন থেকে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের রায়-ডিক্রি ও আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট যাওয়ার প্রয়োজন নাই। আপনার নিজ নিজ জেলাতেই এখন সেবা নিতে পারবেন। বিচারপ্রার্থী জনগণের বিপুল ভোগান্তির অবসান ঘটল।
ভূমি মামলা রায় বা ডিক্রি কি? ডিক্রি হলো আদালতের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত যা চূড়ান্তভাবে মোকদ্দমা বিতর্কিত সমগ্র বা যেকোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষসমূহের অধিকার নির্ধারণ করে। রায় হলো ডিক্রি বা আদেশের যুক্তি হিসেবে বিচারক’ যে বর্ণনা প্রদান করে। অর্থাৎ রায়, ডিক্রি ও আদেশ উভয় ক্ষেত্রেই হতে পারে।
গেজেট জারি হয়েছে কি? হ্যাঁ। এস. আর. ও. নং ২৫৫-আইন/২০২৩।— State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1951) এর section 145B এর sub-section ( 1 ) ও ( 2 ) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নবর্ণিত টেবিলের কলাম (২) এ উল্লিখিত ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালসমূহ প্রতিষ্ঠা করিল এবং উক্ত ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালসমূহের বিপরীতে কলাম (৩) এ উল্লিখিত জেলা সংশ্লিষ্ট আপিল ট্রাইব্যুনালের স্থানীয় অধিক্ষেত্র হিসাবে নির্ধারণ করিল।
Land Survey Apeal Tribunal District Wise / জেলা ভিত্তিক ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইব্যুনাল থাকলেও আপীল ট্র্রাইব্যুনাল ছিল না
জমিজমার মালিকানা নিয়ে প্রতিকারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এখতিয়ারাধীন দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে হবে। মামলার মূল্যমান চার লাখ টাকার কম হলে সহকারী জজ আদালতে এবং চার লাখের বেশি হলে অসীম এখতিয়ার পর্যন্ত যুগ্ম জেলা জজ আদালতে প্রতিকার চাইতে হবে। আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা দায়ের করতে হবে
Caption: Full PDF Download Link
ভূমি বা জমি নিয়ে মামলা । ঠিক কি কারণে ভূমি বা জমিজমা নিয়ে মামলা করতে হয়?
- পারিবারিক বিরোধ– জমিজমা নিয়ে সবচেয়ে বেশি মামলা দায়ের হয় পরিবারের সদস্য এবং শরিকদের বিরুদ্ধে। এ ধরণের বিরোধের পেছনে প্রধান কারণ থাকে জমির বণ্টন সংক্রান্ত বিবাদ।
- জমির স্বল্পতা এবং চাহিদা বৃদ্ধি- সাধারণ অর্থে যেহেতু জমির পরিমাণ বাড়ছে না, কিন্তু মানুষ বাড়ছে, ফলে ক্রমেই জমির চাহিদা বাড়ছে। এর মানে হচ্ছে, উত্তরাধিকার সূত্রে যারা জমির মালিকানা দাবিদার, তাদের সংখ্যা বাড়ছে।
- সীমানা নির্ধারণ- জমিজমা নিয়ে বিবাদের আরেকটি বড় কারণ সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি। আর এক্ষেত্রে অভিযোগ আসে বেশিরভাগ সময় নিকটতম প্রতিবেশীর কাছ থেকে।
- জমি দখল- শহর-গ্রাম নির্বিশেষে বেআইনিভাবে জবরদখল করে একজনের জমি দখল করে নেয়া একটি বড় সমস্যা। এ থেকে মামলামোকদ্দমা তো বটেই, আরো নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটে।
- ভূমি জরিপে বা রেকর্ডে তথ্য বিভ্রাট – জমির তথ্যাদি রেকর্ড করার সময় ভুল তথ্য বা কারো অনুপস্থিতির ফলে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা দেখা দেয়। দেখা যায়, জমি একজনের কিন্তু রেকর্ড হয়েছে আরেকজনের নামে। কোন ক্ষেত্রে মালিকের নাম ও জমির পরিমাণ ভুল উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও আবার জমির দাগ নাম্বারও ভুলভাবে রেকর্ড করা হয়েছে।
- সচেতনতার অভাব- জমির রেজিস্ট্রেশন, মালিকানার হালনাগাদ তথ্য যাচাই, নামজারিসহ বিভিন্ন সুবিধা সহজ করার জন্য সরকার কয়েকটি সেবা অনলাইনে দেয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে। জমি নিয়ে জালিয়াতি, দুর্নীতি বন্ধের লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে ভূমি তথ্য ব্যাংক, এর মাধ্যমে ভূমি মালিকের সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করে দেখা যায়।
জমির মামলার রায়ের আপিল কোথায় করতে হয়?
যদি ডিক্রি বা আদেশ প্রদানকারী আদালত যুগ্ম জেলা জজ (৫ কোটি টাকার অধিক মোকদ্দমার ক্ষেত্রে), অতিরিক্ত জেলা জজ এবং জেলা জজ হয় তাহলে আপিল করতে হবে ডিক্রি বা আদেশের তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করতে হয়। বর্তমানে এখন জেলা ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালেই আপীল করতে পারবেন। এখন সাধারণের দৌড়ঝাপ কম পাড়তে হবে।
One comment