ইএফটি'র সুবিধা কি?

Eft এর মাধ্যমে বেতন । ইএফটি তে বেতন- ভাতাদি গ্রহনের সুবিধা ২০২৩

বাংলাদেশ সরকার মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে চলতি বছরই সরকারি সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা ইএফটি EFT = Electronic Fund Transfer সিস্টেমের মাধ্যমে প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকারি দপ্তরগুলোতে বেতন ইএফটিকরণের কার্যক্রম চলছে জোড়ালোভাবেই। পূর্বে সরকারি বেতন ভাতাদি ক্যাশ বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে সম্পন্ন হতো বর্তমানে কিছু বিল ব্যাংক ট্রান্সফার বা ক্যাশের মাধ্যমে হলেও ভবিষ্যতে সরকারি বিল সংক্রান্ত কার্যক্রম আইবাস++ এর মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। Eft এর মাধ্যমে বেতন

ইএফটি মানে ইলেক্ট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার। যা বাংলাদেশ ব্যাংকে এ্যাডভাইস পাঠানোর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টে প্রেরণ করার মাধ্যমে সম্পদান করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ইএফটি রিসিভ করলে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট হয়। এটি মূলত বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মিশনের একটি অংশমাত্র। যার মাধ্যমে অনেক ত্রুটিবিচ্যুতি ও দুর্ণীতি দূর হবে আশা করা যাচ্ছে।

EFT বা ইএফটি’র কিছু সুবিধা ২০২৩

  1. সহজেই আপনার অনলাইন ব্যাংক একাউন্টে বেতন ভাতাদি, বোনাস জমা হয়ে যাবে। একাউন্টে জমা হবার আগের দিন আপনাকে আপনার প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে EFT ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বাংলাদেশ ব্যাংকে এ্যাডভাইস পাঠানোর ব্যাপারটি। ফলে ব্যাংক কর্তাদের বেতন পোস্টিং দেওয়ার দীর্ঘসূত্রিতার ঝামেলা আর থাকছে না।
  2. ইএফটির ফলে আপনি ১০ টাকার রেভিনিউ কিনে আর প্রতিমাসে বেতন প্রাপ্তির রশিদ কলামে বা ফর্মে লাগিয়ে স্বাক্ষর দেওয়ার ঝামেলা নেই। ইএফটিতে রেভিনিউ বাবদ ১০ টাকা অটো কেটে রাখা হচ্ছে। ফলে পোস্ট অফিস হতে ১০ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্প ১২ বা ১৫ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে না।
  3. আপনি যখন ইএফটি ফরম পূরণ করেছিলেন সেখানে আপনি সন্তানদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করেছেন। ফলে সন্তানের শিক্ষা ভাতার জন প্রতি ৫০০/- টাকা তার বয়স ৫ বছর হলেই অটো শুরু হবে এবং সন্তানের বয়স ২৩ বছর হয়ে গেলে অটোমেটিক এই শিক্ষাভাতা বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে কোনও আর্থিক অনিয়মে পড়বেন না। তবে সর্বোচ্চ দুইজন সন্তানের শিক্ষা ভাতা পাবেন। এ কাজটি মূলত আইবাস++ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
  4. EFT ফরম পূরণকালে আপনি আপনার এসএসসির সনদের ফটোকপি ও আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও দিয়েছিলেন। এতে এগুলো দেখে আপনার জন্ম তারিখ পূরণ করা হয়েছে। যার ফলে আপনি কবে কোন সালের কত তারিখে অবসরে যাবেন তা ibas++ এ অনলাইনে এবং প্রিন্ট কপিতে এসে গেছে। যার ফলে আপনি চাকুরী থেকে অবসরে যাবার অর্থাৎ পিআরএল সময় হলেই বেতন প্রাপ্তি বন্ধ হবে এবং পিআরএল বিল দাখিল করতে হবে।
  5. আইবাস++ এ কল্যাণে পেনশন কার্যক্রম শেষ হলেই পরের মাস থেকেই ইএফটিতে মাসিক পেনশন পেতে থাকবেন। ফলে এতে করে হয়রাণী ও দুর্ণীতি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতিমাসে ব্যাংক হিসাবে পেনশন চলে আসবে। প্রতি ১১ মাসে লাইফ ভেরিফিকেশন এখন অনলাইনেই করা যায়।
  6. ইএফটি ফরম পূরণকালেই নমিনীর নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে দেওয়ায় একসাথে অনেকগুলো তথ্য যুক্ত করে দেওয়ায় পরবর্তীতে অনেক ঝামেলা কমে গেছে এবং জিপিএফ চাঁদা কর্তনের নম্বরও নমিনীও এই ইএফটি ফরমে অন্তর্ভূক্ত করায় এটাও অনলাইনে সম্পদানের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জিপিএফ হিসাব ও জিপিএফ স্লিপ পাওয়া সহজ হচ্ছে। আইবাস++ এবং Cafopfm তে জিপিএফ তথ্য দেখা যায়। GPF Balance Check BD । অনলাইনে জিপিএফ ব্যালেন্স চেক
  7. ইএফটিতে বেতন প্রদানের ফলে সরকার প্রদত্ত গৃহঋণ গ্রহনে আর ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হবে না। গৃহ ঋণের অন্যতম একটি শর্ত ছিলো অটোমোশন পদ্ধতিতে বেতন ভাতা গ্রহনকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী। যদিও কর্মকর্তাগণ এ ঋণ পেলেও কর্মচারীগণ গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালার সুফল পাচ্ছেন না।
  8. আগে যে পদ্ধতিতে বেতন দেয়া হতো তা নির্দিষ্ট একটি ব্যাংকের শাখায় আপনাকে একাউন্ট করে নিতে হতো কারণ উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস ওই শাখায়ই বেতন বিল প্রেরণ করত। এখন ইএফটির কারণে আপনি যে কোনও ব্যাংকের যে কোনও শাখা হতে ইএফটিতে বেতন পেতে পারেন এবং যে কোন সময় তা তুলতে পারবেন। যে ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর আপনি ইএফটি ফরমে পূরণ করেছেন তাতেই আপনার বেতন ভাতাদি ইএফটিতে পৌঁছে যাচ্ছে। তবে আপনি ইচ্ছে করলে পরবর্তীতে কোনও প্রয়োজনে হিসাবরক্ষণ অফিসের মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট বা ব্যাংক পরিবর্তন করিয়ে নিতে পারবেন।

গ্রাহক বা সরকারি কর্মচারীগণ এবং পেনশনারগণ এখনও পর্যন্ত ইএফটি বিষয়টি নিয়ে পরিস্কার ধারণ পোষণা করছে না। ইএফটি ম্যাসেজ পাওয়ার পরই সরকারি কর্মচারী বা পেনশনার ব্যাংক টাকা তোলার জন্য গিয়ে হাজির কিন্তু ব্যাংকে টাকা আসেনি। অসংখ্য গ্রাহক এভাবে ব্যাংকে চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে ফেরত আসেন হিসাবে টাকা না থাকার কারণেই এমনটি হচ্ছে। আপনার মোবাইলে ইএফটি EFT ম্যাসেজ “Advice with reference no. EFVA…………….. for the Salary for the month of June (Pre) 2020 of Tk 0000000 has been transmitted today to Bangladesh Bank. The amount will be credited to your Bank Account by next working day. – CAO/ DCA /DAO/UAO ………..” এমন ম্যাসেজ পাওয়া মানেই কিন্তু আপনার ব্যাংক হিসাবে টাকা এসেছে বা একাউন্টে টাকা জমা হয়েছে এমনটি নয়। ব্যাংক হতে একাউন্ট ক্রেডিট হওয়ার মেসেজ পেতে হবে যেখানে “Your Account 4430****5678 has been credited from Dhaka Br. for BDT 43678.02 on 02 June 2022 12.02 PM. A/C Bal BDT 202375.04” এমন মেসেজ আসতে হবে।

তাই নিশ্চিত হউন যে ব্যাংক হিসাবে ক্রেডিট হওয়ার মেসেজ ব্যাংক হতে পেয়েছেন কিনা। ব্যাংক মেসেজ এ ক্রেডিট এমাউন্ট এবং একাউন্ট ব্যালেন্স উল্লেখ রয়েছে কিনা।

EFT হলে BILL STATUS দেখাবে “EFT File Transmitted”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *