আজকের মুদ্রা বাজার ২০২৫ । বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট, ১২ অক্টোবর ২০২৫
মুদ্রা বাজার হলো বিশ্বব্যাপী স্বল্পকালীন ঋণ আদান প্রদানের একটি ক্ষেত্র। বিশ্বব্যাপী আর্থিক ক্ষেত্রের প্রয়োজনে এখান থেকেই নগদ টাকার যোগান বজায় রাখা হয়। মুদ্রা বাজার হলো এমন একটি স্থান যেখানে স্বল্পমেয়াদী দায় যেমন, সম্পত্তি পত্র, ব্যবসায়ীক দলিল এবং ব্যাঙ্কের স্বীকৃতি প্রভৃতি কেনা-বেচা হয়ে থাকে-আজকের মুদ্রা বাজার ২০২৫
আজ, ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে, রবিবার, বাংলাদেশে মুদ্রা বাজার বন্ধ থাকে। তাই ব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দিনের নির্দিষ্ট কোনো হার প্রকাশ করা হয় না। তবে, সর্বশেষ কার্যদিবসের (সাধারণত বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের) বা সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত বিনিময় হারগুলোর ভিত্তিতে একটি ধারণা দেওয়া যেতে পারে।
মুদ্রার বিনিময় হার সাধারণত ব্যাংক, খোলা বাজার (কার্ব মার্কেট) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রেফারেন্স রেট অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে। এখানে সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে কিছু প্রধান মুদ্রার বিনিময় হারের আনুমানিক চিত্র দেওয়া হলো:
বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের (আনুমানিক) টাকার রেট
গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য:
- আনুমানিক হার: উপরে দেওয়া হারগুলি ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখের জন্য আনুমানিক এবং সাম্প্রতিক বাজার তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে।
- বিনিময় হার ভিন্নতা: যেকোনো মুদ্রার বিনিময় হার স্থান, সময় এবং লেনদেনের ধরন (যেমন – নগদ, টিটি বা ক্রেডিট কার্ড পেমেন্ট) ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
- অফিসিয়াল তথ্য: সঠিক এবং নিশ্চিত হারের জন্য আপনাকে অবশ্যই আজকের তারিখে খোলা মানি এক্সচেঞ্জ বা ব্যাংকগুলোর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের রেফারেন্স রেট: বাংলাদেশ ব্যাংক সাধারণত ডলারের একটি রেফারেন্স রেট প্রকাশ করে, যা সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ১২১.৮০ টাকা এর আশেপাশে রয়েছে (যা বাজারের অন্যান্য হারের চেয়ে কিছুটা কম)।
“টাকার রেট” বলতে মূলত “মুদ্রার বিনিময় হার” (Exchange Rate) বোঝানো হয়। সহজ ভাষায়, একটি দেশের মুদ্রা অন্য একটি দেশের মুদ্রার তুলনায় কতটুকু মূল্যবান, সেটাই হলো মুদ্রার বিনিময় হার। উদাহরণস্বরূপ, যখন বলা হয় “১ মার্কিন ডলার = ১২২.৬৩ টাকা”, এর মানে হলো আপনি যদি ১ মার্কিন ডলার পেতে চান, তাহলে আপনাকে ১২২.৬৩ বাংলাদেশি টাকা খরচ করতে হবে। আবার, আপনি যদি ১ মার্কিন ডলার বিক্রি করেন, তবে আপনি ১২২.৬৩ টাকা পাবেন।
সূত্র দেখুন: বাংলাদেশ ব্যাংক
ডলারের উপর কি বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার মান নির্ভরশীল?
হ্যাঁ, মার্কিন ডলারের মান বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তবে এটি আসলে একটি দ্বিমুখী সম্পর্ক। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস অন্যান্য দেশের অর্থনীতি এবং তাদের মুদ্রার মানের উপর সরাসরি ও গভীর প্রভাব ফেলে। একইভাবে, আন্তর্জাতিক বাজার এবং অন্যান্য বড় অর্থনীতির মুদ্রার অবস্থা, যেমন ইউরো, ইয়েন বা চীনা ইউয়ানের পরিবর্তনও ডলারের মানকে প্রভাবিত করে।
এখানে কিছু মূল কারণ তুলে ধরা হলো:
১. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রিজার্ভ মুদ্রা: মার্কিন ডলার বিশ্বের প্রধান রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃত। বিশ্বের প্রায় ৯০% আন্তর্জাতিক লেনদেন ডলারে হয়ে থাকে। অধিকাংশ দেশই নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের একটি বড় অংশ ডলারে রাখে। এর ফলে ডলারের চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। যখন কোনো দেশ আমদানি করে, তখন তাকে সাধারণত ডলারে বিল পরিশোধ করতে হয়। ডলারের মান বাড়লে সেই দেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে যায় এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে।
২. আন্তর্জাতিক ঋণের মাধ্যম: বিশ্বের প্রায় ৪০% আন্তর্জাতিক ঋণ ডলারে অনুমোদিত হয়। ফলে, যখন ডলার শক্তিশালী হয়, তখন যেসব দেশের ডলারে ঋণ রয়েছে, তাদের ঋণ পরিশোধের খরচ অনেক বেড়ে যায়।
৩. তেলের মূল্য নির্ধারণ: আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের মূল্য ডলারে নির্ধারিত হয়। যখন ডলারের মান বৃদ্ধি পায়, তখন অন্যান্য দেশের জন্য তেল আমদানির খরচ বেড়ে যায়, যা তাদের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করে।
৪. মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের নীতি: মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ফেডারেল রিজার্ভ (Fed), যখন সুদের হার বাড়ায়, তখন ডলারের চাহিদা বেড়ে যায় এবং এর মান শক্তিশালী হয়। কারণ, বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ডলারে বিনিয়োগ করে উচ্চ সুদ পেতে চায়। এর ফলে অন্যান্য দেশের মুদ্রা দুর্বল হয়ে পড়ে।
ইউরোর প্রভাব:
ইউরোর প্রচলনের পর থেকে ডলারের একচ্ছত্র আধিপত্য কিছুটা কমেছে। ইউরোও একটি গুরুত্বপূর্ণ রিজার্ভ মুদ্রা এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের একটি প্রধান মাধ্যম। যদি ইউরোজোনের অর্থনীতি শক্তিশালী হয় এবং ইউরোর চাহিদা বাড়ে, তাহলে ডলারের উপর কিছুটা চাপ পড়ে।
সার্বিকভাবে বলা যায়: ডলারের মান কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে না, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এবং অন্যান্য প্রধান মুদ্রার তুলনামূলক শক্তির উপরও নির্ভরশীল। তবে এর উল্টোটাও সত্য – ডলারের অবস্থান এতই শক্তিশালী যে, এর প্রতিটি ওঠানামা বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।
বাংলাদেশের খোলা বাজারে ডলার রেট কত?
খোলা বাজার (কার্ব মার্কেট) সহ বেশিরভাগ ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ফলে দিনের নির্দিষ্ট কোনো নতুন হার প্রকাশিত হয়নি। তবে, সাম্প্রতিক কার্যদিবসগুলোর (সাধারণত বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার) তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের খোলা বাজারে (কার্ব মার্কেটে) ডলারের রেট সম্পর্কে একটি আনুমানিক ধারণা দেওয়া যেতে পারে।
সাধারণত খোলা বাজারে ডলারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে এর রেট দ্রুত ওঠানামা করে এবং তা ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত রেট থেকে বেশি থাকে।
খোলা বাজারে ডলারের আনুমানিক রেট (ক্রয় ও বিক্রয়):
- আনুমানিক রেট: এই রেটগুলো কেবল একটি আনুমানিক ধারণা এবং স্থানীয় মানি এক্সচেঞ্জ ভেদে কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।
- সর্বশেষ রেট: সবচেয়ে সঠিক হারের জন্য, বাজার চালু হওয়ার পর (সাধারণত রবিবার বা সোমবার) আপনাকে স্থানীয় খোলা বাজারের মানি এক্সচেঞ্জ বা পরিচিত সূত্র থেকে সরাসরি তথ্য নিতে হবে।
ব্যাংক রেট: এটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্তৃক ঘোষিত হারের চেয়ে সাধারণত বেশি থাকে। ব্যাংকগুলোতে ডলারের বিক্রয় হার সাধারণত ১২২.০০ থেকে ১২৩.০০ টাকা এর কাছাকাছি থাকে।

