আজকের মুদ্রা বাজার ২০২৫ । বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট, ০৮ অক্টোবর ২০২৫ - Technical Alamin
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা

আজকের মুদ্রা বাজার ২০২৫ । বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

মুদ্রা বাজার হলো বিশ্বব্যাপী স্বল্পকালীন ঋণ আদান প্রদানের একটি ক্ষেত্র। বিশ্বব্যাপী আর্থিক ক্ষেত্রের প্রয়োজনে এখান থেকেই নগদ টাকার যোগান বজায় রাখা হয়। মুদ্রা বাজার হলো এমন একটি স্থান যেখানে স্বল্পমেয়াদী দায় যেমন, সম্পত্তি পত্র, ব্যবসায়ীক দলিল এবং ব্যাঙ্কের স্বীকৃতি প্রভৃতি কেনা-বেচা হয়ে থাকে-আজকের মুদ্রা বাজার ২০২৫

০৮ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের মুদ্রা বাজার অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার (BDT) বিনিময় হার নিচে দেওয়া হলো। এই হারগুলো সাধারণত খোলা বাজার (Open Market) বা বিনিময় হাউসের (Money Exchange) হারকে নির্দেশ করে এবং ব্যাংক হার থেকে ভিন্ন হতে পারে।

এই হারগুলি ১ একক বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্য (অর্থাৎ, আপনি ১ ডলার বা ১ রিয়াল দিয়ে কত টাকা পাবেন) প্রকাশ করে।

আজকের মুদ্রা বাজার: ০৮ অক্টোবর ২০২৫

বৈদেশিক মুদ্রা১ এককের বিনিময় মূল্য (বাংলাদেশি টাকা ৳) (আনুমানিক)
ইউএস ডলার (USD)১২১.৭৬ ৳
ইউরো (EUR)১৪৪.০৫ ৳
ব্রিটিশ পাউন্ড (GBP)১৬৫.৯৮ ৳
সৌদি রিয়াল (SAR)৩২.৪৭ ৳
কুয়েতি দিনার (KWD)৩৯৮.৮৭ ৳
দুবাই দেরহাম (AED)৩৩.১৯ ৳
কাতারি রিয়াল (QAR)৩৩.৩৮ ৳
বাহরাইন দিনার (BHD)৩২৩.৬৭ ৳
ওমানি রিয়াল (OMR)৩১৫.০৭ ৳
মালয়েশিয়ান রিংগিত (MYR)২৮.৯২ ৳
সিঙ্গাপুর ডলার (SGD)৯৪.৮৬ ৳
ভারতীয় রুপি (INR)১.৪১ ৳
জাপানি ইয়েন (JPY)০.৭৬ ৳
অস্ট্রেলিয়ান ডলার (AUD)৭৫.১১ ৳
কানাডিয়ান ডলার (CAD)৮৪.৫৫ ৳

গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য:

  • এই বিনিময় হারগুলো সাধারণত রেমিট্যান্স (Remittance) বা নগদ লেনদেন (Cash Transactions)-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
  • বিভিন্ন ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জ বা বাজারের ওপর ভিত্তি করে প্রকৃত বিনিময় হারে সামান্য তারতম্য দেখা যেতে পারে।
  • বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত আন্তঃব্যাংক হার (Interbank Rate) এবং গ্রাহক হার (Customer Rate) ভিন্ন হয়।
  • ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনছে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

“টাকার রেট” বলতে মূলত “মুদ্রার বিনিময় হার” (Exchange Rate) বোঝানো হয়। সহজ ভাষায়, একটি দেশের মুদ্রা অন্য একটি দেশের মুদ্রার তুলনায় কতটুকু মূল্যবান, সেটাই হলো মুদ্রার বিনিময় হার। উদাহরণস্বরূপ, যখন বলা হয় “১ মার্কিন ডলার = ১২২.৬৩ টাকা”, এর মানে হলো আপনি যদি ১ মার্কিন ডলার পেতে চান, তাহলে আপনাকে ১২২.৬৩ বাংলাদেশি টাকা খরচ করতে হবে। আবার, আপনি যদি ১ মার্কিন ডলার বিক্রি করেন, তবে আপনি ১২২.৬৩ টাকা পাবেন।

সূত্র দেখুন: বাংলাদেশ ব্যাংক

ডলারের উপর কি বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার মান নির্ভরশীল?

হ্যাঁ, মার্কিন ডলারের মান বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তবে এটি আসলে একটি দ্বিমুখী সম্পর্ক। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস অন্যান্য দেশের অর্থনীতি এবং তাদের মুদ্রার মানের উপর সরাসরি ও গভীর প্রভাব ফেলে। একইভাবে, আন্তর্জাতিক বাজার এবং অন্যান্য বড় অর্থনীতির মুদ্রার অবস্থা, যেমন ইউরো, ইয়েন বা চীনা ইউয়ানের পরিবর্তনও ডলারের মানকে প্রভাবিত করে।

​এখানে কিছু মূল কারণ তুলে ধরা হলো:

​১. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রিজার্ভ মুদ্রা: মার্কিন ডলার বিশ্বের প্রধান রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃত। বিশ্বের প্রায় ৯০% আন্তর্জাতিক লেনদেন ডলারে হয়ে থাকে। অধিকাংশ দেশই নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের একটি বড় অংশ ডলারে রাখে। এর ফলে ডলারের চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। যখন কোনো দেশ আমদানি করে, তখন তাকে সাধারণত ডলারে বিল পরিশোধ করতে হয়। ডলারের মান বাড়লে সেই দেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে যায় এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে।

​২. আন্তর্জাতিক ঋণের মাধ্যম: বিশ্বের প্রায় ৪০% আন্তর্জাতিক ঋণ ডলারে অনুমোদিত হয়। ফলে, যখন ডলার শক্তিশালী হয়, তখন যেসব দেশের ডলারে ঋণ রয়েছে, তাদের ঋণ পরিশোধের খরচ অনেক বেড়ে যায়।

​৩. তেলের মূল্য নির্ধারণ: আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের মূল্য ডলারে নির্ধারিত হয়। যখন ডলারের মান বৃদ্ধি পায়, তখন অন্যান্য দেশের জন্য তেল আমদানির খরচ বেড়ে যায়, যা তাদের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করে।

​৪. মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের নীতি: মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ফেডারেল রিজার্ভ (Fed), যখন সুদের হার বাড়ায়, তখন ডলারের চাহিদা বেড়ে যায় এবং এর মান শক্তিশালী হয়। কারণ, বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ডলারে বিনিয়োগ করে উচ্চ সুদ পেতে চায়। এর ফলে অন্যান্য দেশের মুদ্রা দুর্বল হয়ে পড়ে।

ইউরোর প্রভাব:

ইউরোর প্রচলনের পর থেকে ডলারের একচ্ছত্র আধিপত্য কিছুটা কমেছে। ইউরোও একটি গুরুত্বপূর্ণ রিজার্ভ মুদ্রা এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের একটি প্রধান মাধ্যম। যদি ইউরোজোনের অর্থনীতি শক্তিশালী হয় এবং ইউরোর চাহিদা বাড়ে, তাহলে ডলারের উপর কিছুটা চাপ পড়ে।

সার্বিকভাবে বলা যায়: ডলারের মান কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে না, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এবং অন্যান্য প্রধান মুদ্রার তুলনামূলক শক্তির উপরও নির্ভরশীল। তবে এর উল্টোটাও সত্য – ডলারের অবস্থান এতই শক্তিশালী যে, এর প্রতিটি ওঠানামা বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *