১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ২০২৫ । সয়াবিন তেলের মূল্য বাড়িয়ে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে?
১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯৫ টাকা (বোতলজাত) এবং ১৭৭ টাকা (খোলা) নির্ধারণ করা হয়েছে। হ্যাঁ, সয়াবিন তেলের মূল্য বাড়িয়ে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৪ অক্টোবর, ২০২৫ (মঙ্গলবার) থেকে এই নতুন মূল্য কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই মূল্য সমন্বয় করেছে।
নতুন দাম (১৪ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে কার্যকর):
- ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল: ১৯৫ টাকা (আগের দাম ছিল ১৮৯ টাকা, অর্থাৎ ৬ টাকা বৃদ্ধি)।
- ১ লিটার খোলা সয়াবিন তেল: ১৭৭ টাকা (আগের দাম ছিল ১৬৯ টাকা, অর্থাৎ ৮ টাকা বৃদ্ধি)।
- ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল: ৯৪৫ টাকা (আগের দাম ছিল ৯২০ টাকা, অর্থাৎ ২৫ টাকা বৃদ্ধি)।
- ১ লিটার খোলা পাম তেল: ১৬৩ টাকা (আগের দাম ছিল ১৫০ টাকা, অর্থাৎ ১৩ টাকা বৃদ্ধি)।
সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ কি?
বাংলাদেশ মূলত অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি করে। ব্যবসায়ীদের প্রধান যুক্তি হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে দাম সমন্বয় করতে হচ্ছে। রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেই এই মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
২. ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া (Depreciation of Taka against US Dollar):
- আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল আমদানির জন্য ডলার প্রয়োজন হয়। ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বা টাকার মান কমে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায়। এর ফলে স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, যদিও বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা কমলেও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে তার সুবিধা ভোক্তা পায় না।
৩. আমদানি শুল্ক ও রাজস্ব সংক্রান্ত কারণ (Import Duty and Revenue Issues):
- কখনো কখনো সরকার ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক-কর অব্যাহতি বা হ্রাস করে, যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তুলে নেওয়া হলে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করাও দাম বাড়ার একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
৪. লজিস্টিকস ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি (Increase in Logistics and Transportation Costs):
- বিশ্বব্যাপী পরিবহন খরচ, বিশেষত শিপিং খরচ বেড়ে গেলে আমদানিকৃত পণ্যের মোট খরচ বাড়ে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপর বর্তায়।
৫. বাজার কারসাজি ও সরবরাহ ঘাটতি (Market Manipulation and Supply Shortage – অভিযোগ):
- অনেক সময় আন্তর্জাতিক বাজারের দামের প্রভাবের চেয়েও দেশের বাজারে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি হয় বলে অভিযোগ ওঠে। কখনো ব্যবসায়ীরা মুনাফার জন্য কৃত্রিমভাবে সরবরাহ ঘাটতি তৈরি করেন বা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করেন।
সারসংক্ষেপ: বর্তমানে (২০২৫ সালের অক্টোবর) মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মূল্য সমন্বয়-কে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে কার্যকর হওয়া নতুন দামের (২০২৫ সালের অক্টোবর) সাথে প্রতিবেশী কিছু দেশের একটি পুরোনো তুলনামূলক চিত্র নিচে দেওয়া হলো। মনে রাখবেন, এই অন্য দেশগুলোর দামের তথ্য সাম্প্রতিক নয়, বরং বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে তৈরি করা একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে পাওয়া:
গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: উপরে দেওয়া পাকিস্তান, ভারত ও নেপালের দামগুলি হলো বাংলাদেশ সরকারের (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি পুরোনো (২০২২ সালের এপ্রিলের) রিপোর্টের ভিত্তিতে, যা আন্তর্জাতিক বাজারদরের ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারের দ্রুত পরিবর্তনশীলতার কারণে, এই দেশগুলোতে ২০২৫ সালের অক্টোবরে সয়াবিন তেলের বর্তমান দাম ভিন্ন হতে পারে। তুলনার সময় দেশের স্থানীয় শুল্ক, পরিবহন খরচ এবং ডলারের বিপরীতে টাকার বর্তমান বিনিময় হার বিবেচনা করা হয়নি।
সাধারণত, সরকার ও ব্যবসায়ীরা দাবি করে থাকেন যে আন্তর্জাতিক বাজারের দামের কারণে মূল্যবৃদ্ধি হলেও, বাংলাদেশের দাম প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এখনও কম বা কাছাকাছি থাকে।

