ঈদ কত তারিখে 2023 – বাংলাদেশে এ বছর ঈদ উদযাপিত হবে কত তা আগে থেকেই নির্ধারিত– কোরবানির ঈদ কবে?
ঈদ উল ফিতরের কত দিন পরে ঈদ উল আযহা উদযাপিত হয়? – হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। ইসলামি চান্দ্র পঞ্জিকায়, ঈদুল আযহা জ্বিলহজ্জের ১০ তারিখে পড়ে। আন্তর্জাতিক (গ্রেগরীয়) পঞ্জিকায় তারিখ প্রতি বছর ভিন্ন হয়, সাধারণত এক বছর থেকে আরেক বছর ১০ বা ১১ দিন করে কমতে থাকে। ঈদের তারিখ স্থানীয়ভাবে জ্বিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।
সারা বিশ্বের মুসলিমরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি উদ্যাপন করে। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহার কুরবানি চলে। হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সর্বোচ্চ ৭০ দিন হতে পারে।
সাধারণত আমাদের দেশে কুরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে ১ ভাগ গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে ১ ভাগ আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে এবং ১ ভাগ নিজেদের খাওয়ার জন্য রাখা হয়। তবে মাংস বিতরণের কোন সুস্পষ্ট হুকুম নেই কারণ কুরবানির হুকুম পশু জবেহ্ হওয়ার দ্বারা পালন হয়ে যায়। কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ দান করে দেয়ার নির্দেশ রয়েছে।
ঈদুল আজহা ২০২৩ ঠিক কত তারিখে অনুষ্ঠিত হবে? / পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুসারে ঈদ উল আযহা উদযাপিত হবে
ঈদের দিন শুরু হয় ঈদের নামাজের জন্য গোছল করে এবং নতুন কাপড় পরিধান করে। সকল মুসলিম ছেলেদের জন্য এই ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করা ওয়াজিব এবং মহিলাদের জন্য এই নামাজ সুন্নাত।
Caption: EID Ul Azha is celebrated by muslims of Bangladesh every year with festive look.
বাংলাদেশের মুসলিমরা সাধারণত গরু ও ছাগল কুরবানি পাশাপাশি আর কি দিয়ে থাকেন?
- এছাড়া কেউ কেউ ভেড়া, মহিষ, উট, দুম্বাও কোরবানি দিয়ে থাকেন।
- ২০১৯ সালে বাংলাদেশে কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ১ কোটি ১০ লক্ষ আর বাংলাদেশে কোরবানির উপযোগী পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৮ লক্ষ।
- ২০১৮ সালে বাংলাদেশে কোরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৫ লাখ।
- এক ব্যক্তি একটি গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা কুরবানি করতে পারেন।
- তবে গরু, মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭ ভাগে কুরবানি করা যায় অর্থাৎ ২, ৩, ৫ বা ৭ ব্যক্তি একটি গরু কুরবানিতে শরিক হতে পারেন।
- কুরবানির ছাগলের বয়স কমপক্ষে ১ বছর হতে হবে।
- গরু ও মহিষের বয়স কমপক্ষে ২ বছর হতে হবে।
- নিজ হাতে কুরবানি করা ভাল।
- কুরবানি প্রাণীর দক্ষিণ দিকে রেখে কিবলামুখী করে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করতে হয়।
কোরবানী দেওয়া কি বাধ্যতামূলক?
না– ইসলামী শরীয়া মোতাবেক আপনি যদি কোরবানী দেওয়ার আওতায়ভূক্ত হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য কোরবানী বাধ্যতামূলক। আর যদি আপনি ঋণগ্রস্থ হউন বা কোরবানি দেওয়ার সামর্থ আপনার না থাকে তবে আপনার জন্য কোরবানি ওয়াজিব নয়। নারী যদি সামর্থ্যবান বা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন, তাঁর পক্ষেও কোরবানি ওয়াজিব। শিশুদের ওপর কোরবানিসহ কোনো ফরজ ওয়াজিব প্রযোজ্য নয়। হিজড়ারা মূলত নারী বা পুরুষ। তাই তাঁরাও প্রাপ্তবয়স্ক এবং সামর্থ্যবান হলে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতের মতো কোরবানিও ওয়াজিব হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার কুরবানির সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু সে কুরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে (আত-তারগিব ওয়া আত-তারহিবঃ ২/১৫৫)। সামর্থ্যবান ব্যক্তির সংজ্ঞাও ইসলামি শরীয়াতে দেয়া হয়েছে। ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে যে ব্যক্তি ‘নেসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন, তাঁর ওপরেই কুরবানি ওয়াজিব হবে। উল্লেখ্য, এই নেসাব পরিমাণ সম্পদ তাঁর কাছে এক বছর থাকা ওয়াজিব নয়। বরং কুরবানির তিন দিনের মধ্যে যে কোনো দিন থাকলেই কুরবানি ওয়াজিব হবে (রদ্দুল মুহতারঃ ৬/৩১২)।
সৌদি আরবে কবে ঈদ হবে?
ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ গণনা করেছেন জ্যোতির্বিদরা। তাদের গণনা অনুযায়ী, বিশ্বের অনেক দেশে ১৯ জুনকে জিলহজ মাসের প্রথম দিন হিসেবে ধরা হবে। ফলে আশা করা হচ্ছে, সৌদি আরবে আরাফাহর দিন পড়বে ২৭ জুন এবং মধ্যপ্রাচ্যে ঈদুল আজহার প্রথম দিন পড়বে ২৮ জুন ২০২৩। এই হিসেবে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে বাংলাদেশে ঈদ হতে পারে ২৯ জুন ২০২৩ (বৃহস্পতিবার)।
মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যানবাহনের চাপ ও ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে ঈদের ছুটি ২৮ জুনের পরিবর্তে ২৭ জুন থেকে শুরুর সুপারিশ করেছে মন্ত্রিসভা কমিটি। তা অনুমোদন পেলে ২৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কোরবানির ঈদের ছুটি থাকবে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা।’