সরকারি ছুটির মধ্যে শুধুমাত্র অর্জিত ছুটি জমা হতে থাকে এবং চাকরি শেষে ১৮ মাসের ছুটি ঐ সময়ের বেসিক অনুসারে বিক্রি করা যায় – সরকারি কর্মচারীদের ছুটির হিসাব ২০২৪
যে ছুটিগুলো কোন কর্মচারী বেশি ব্যবহার করে থাকে-পূর্ণ বেতনে ছুটি, অর্ধ বেতনে ছুটি, বিনা বেতনে অস্বাভাবিক ছুটি, বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি, সংগরোধ ছুটি (Quarantine Leave), প্রসূতি ছুটি (Maternity Leave), অধ্যয়ন ছুটি (Study Leave) এবং নৈমিত্তিক ছুটি (Casual Leave)। এখানে কিছু ছুটি আছে যা সার্ভিসবুকে ছুটির হিসাব হতে বাদ যায় না।
অবসরকালীন ছুটি কি বিয়োগ হয়? হ্যাঁ। ১৮ মাসের ছুটি বিক্রি বাবদ ছুটি বিয়োগ করে অবশিষ্ট ছুটি হতে ১২ মাস পিআরএল ছুটি হিসেবে মঞ্জুর করা হয়। যদি ছুটি জমা না থাকে তবে আপনি ১৮ মাসের মূল বেতনের সমপরিমান এককালীন টাকাও পাবেন না এবং পিআরএল ছুটিও ভোগ করতে পারবেন না। তাই ছুটি বিক্রি ও পিআরএল সহ মোট ৩০ মাসে ছুটি সমগ্র চাকরি জীবনে জমা থাকতে হয়।
কোন কর্মচারীকে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি ও অধ্যয়ন ছুটি ব্যতীত অন্যবিধ ছুটি মঞ্জুর করতে পারেন এবং ইহা বন্ধের দিনের সাথে সংযুক্ত করেও প্রদান করা যেতে পারে। পূর্ণ বেতনে ছুটি: (১) প্রত্যেক কর্মচারী তৎকর্তৃক দায়িত্ব পালনে অতিবাহিত কার্যদিবসের ১/১১ হারে পূর্ণ বেতনে ছুটি অর্জন করবেন এবং পূর্ণ বেতনে প্রাপ্য এককালীন ছুটির পরিমাণ চার মাসের অধিক হবে না। (৩) এর পূর্ব অনুমোদন নিয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি ও অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করতে পারেন। (২) অর্জিত ছুটির পরিমাণ চার মাসের অধিক হলে, তাহা ছুটির হিসাবের অন্য খাতে জমা দেখানো হবে, ইহা হতে ডাক্তারী সার্টিফিকেট উপস্থাপন সাপেক্ষে অথবা বাংলাদেশের বাইরে ধর্মীয় সফর, অধ্যয়ন বা অবকাশ ও চিত্তবিনোদনের জন্য পূর্ণ বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যেতে পারে।
অর্ধ বেতনে ছুটি –(১) প্রত্যেক কর্মচারী তৎকর্তৃক দায়িত্ব পালনে অতিবাহিত কার্য দিবসের ১/১১ হারে অর্ধ বেতনে অর্জন করিবেন এবং এইরূপ ছুটি জমা হওয়ার কোন সীমা থাকিবে না। (২) অর্ধ-বেতনে দুই দিনের ছুটির পরিবর্তে, ডাক্তারী সার্টিফিকেট দাখিল সাপেক্ষে, এক দিনের পূর্ণ বেতনে ছুটির হারে গড় বেতনে ছুটিতে সর্বোচ্চ বার মাস পর্যন্ত পূর্ণ বেতনে ছুটিতে রূপান্তরিত করা যাইতে পারে।
অর্জিত জমাকৃত ছুটি ছাড়া আর কি কি ছুটি আছে? প্রাপ্যতাবিহীন ছুটি- ১) ডাক্তারী সার্টিফিকেট দ্বারা সমর্থিত হইলে, কোন কর্মচারীকে তাহার সমগ্র চাকুরী জীবনে সর্বোচ্চ বার মাস পর্যন্ত এবং অন্য কোন কারণে হইলে, তিন মাস পর্যন্ত অর্ধ বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে। (২) যখন কোন কর্মচারী তাহার ছুটি পাওনা হওয়ার পূর্বেই প্রাপ্যতাবিহীন ছুটি ভোগ করিয়া ফিরিয়া আসেন তখন তিনি পূর্বেই যে ছুটি ভোগ করিয়াছেন সেই ছুটি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত নূতনভাবে গড় অর্ধ বেতনে কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন না।
অসাধারণ ছুটি কি? (১) যখন কোন কর্মচারীর অন্য কোন ছুটি পাওনা না থাকে বা অন্য প্রকার কোন ছুটি পাওনা থাকে অথচ সংশিলষ্ট কর্মচারী লিখিতভাবে অস্বাভাবিক ছুটির জন্য আবেদন করেন তখন তাহাকে অসাধারণ ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে। (২) অসাধারণ ছুটির মেয়াদ একবারে তিন মাসের অধিক হইবে না, তবে নিম্ন বর্ণিত ক্ষেত্রে উক্ত ছুটির মেয়াদ বর্ধিত করা যাইতে পারে, (ক) যে ক্ষেত্রে সংশিলষ্ট কর্মচারী এই শর্তে বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণের অনুমতি প্রাপ্ত হন যে, উক্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরে পাঁচ বৎসরের জন্য তিনি এ চাকুরী করিবেন, অথবা (খ) যে ক্ষেত্রে সংশিলষ্ট কর্মচারী চিকিৎসাধীন থাকেন; অথবা (গ) যে ক্ষেত্রে এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কর্মচারী তাহার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে কর্তব্যে যোগদান করিতে অসমর্থ। (৩) ছুটি মঞ্জুর করার ক্ষমতা সম্পন্ন কর্তৃপক্ষ কোন কর্মচারীর বিনা ছুটিতে অনুপস্থিতির সময়কে ভূতাপেক্ষ কার্যকরতাসহ অসাধারণ ছুটিতে রূপান্তরিত করিতে পারেন।
বিশেষ অক্ষতাজনিত ছুটি: (১) কোন কর্মচারী তাঁহার যথাযথ কর্তব্য পালনকালে বা উহা পালনের পরিণতিতে অথবা তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত থাকিবার কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হইয়া অক্ষম হইলে, তাঁহাকে বিশেষ অক্ষমতা ছুটি মঞ্জুর করিতে পারে। (২) যে অক্ষমতার কারণে অক্ষমতাজনিত ছুটি চাওয়া হয় সেই অক্ষমতা তিন মাসের মধ্যে প্রকাশ না পাইলে এবং যে ব্যক্তি অক্ষম হন, সেই ব্যক্তি অনুরূপ অক্ষমতার কারণে অবিলম্বে …………. কে অবহিত না করিলে, বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা হইবে না। (৩) যে মেয়াদের জন্য বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি প্রয়োজনীয় বলিয়া চিকিৎসা পরিষদ প্রত্যায়ন করিবে সেই মেয়াদের জন্য বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা হইবে, এবং চিকিৎসা পরিষদের প্রত্যায়ন ব্যতিরেকে তাহা বর্ধিত করা হইবে না; এবং উক্ত ছুটি কোন ক্রমেই ২৪ মাসের অধিক হইবে না। (৪) বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি অন্য যে কোন ছুটির সংগে সংযুক্ত করা যাইতে পারে। (৫) যদি একই ধরণের অবস্থায় পরবর্তীকালে কোন সময় অক্ষমতা বৃদ্ধি পায় বা উহার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তাহা হইলে একাধিকবার বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে, তবে অনুরূপ ছুটির পরিমাণ ২৪ মাসের অধিক হইবে না এবং তাহা যে কোন একটি অক্ষমতার কারণে মঞ্জুর করা যাইবে। (৬) শুধুমাত্র আনুতোষিকের এবং যে ক্ষেত্রে অবসর ভাতা প্রাপ্য হয় সেক্ষেত্রে অবসর ভাতার ব্যাপারে চাকুরী হিসাব করিবার সময় বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি কর্তব্য পালনের সময় হিসাবে গণনা করা হইবে এবং ইহা ছুটির হিসাব হইতে বিয়োজন করা হইবে না। (৭) বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটিকালীন বেতন হইবে নিম্নরূপ যথাঃ (ক) উপরিউক্ত উপ-প্রবিধান (৫) এর অধীনে মঞ্জুরকৃত ছুটির মেয়াদসহ যে কোন মেয়াদের ছুটির প্রথম চার মাসের জন্য পূর্ণ বেতন; এবং (খ) এইরূপ কোন ছুটির অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য অর্ধ বেতন। (৮) এই প্রবিধানের অন্যান্য বিধানসমূহের প্রযোজ্যতা এমন কর্মচারীর ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত করা যাইতে পারে যিনি তাহার যথাযথ কর্তব্য পালনকালে বা উহা পালনের পরিণতিতে অথবা তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত থাকিবার কারণে, দুর্ঘটনাবশতঃ আঘাতপ্রাপ্ত হইয়াছেন অথবা যিনি নির্দিষ্ট কোন কর্তব্য পালনকালে তাঁহার পদের স্বাভাবিক ঝুকি বহির্ভূত অসুস্থতা বা জখম বাড়াইয়া তোলার সম্ভাবনা থাকে এইরূপ অসুস্থতার দরচণ অক্ষম হইয়াছেন।
জমাকৃত ছুটির হিসাব কিভাবে করে? / অর্জিত ছুটির হিসাব করার নিয়ম
সঙ্গরোধ ছুটি কি? (১) কোন কর্মচারীর পরিবারে বা গৃহে সংক্রামক ব্যধি থাকার কারণে যদি আদেশ দ্বারা তাহাকে অফিসে উপস্থিত না হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় তবে যে সময়ের জন্য উক্তরূপ নির্দেশ কার্যকর থাকে সেই সময়কাল হইবে সঙ্গরোধ ছুটি। (২) অফিস প্রধান কোন চিকিৎসক কর্মকর্তা বা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তার সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে অনুর্ধ ২১ দিন অথবা অস্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ দিনের জন্য সঙ্গরোধ ছুটি মঞ্জুর করিতে পারেন। (৩) সংগরোধের জন্য প্রয়োজনীয় উপ-প্রবিধান (২) এ উলেলখিত মেয়াদের অতিরিক্ত ছুটি প্রয়োজন হইলে উহা সাধারণ ছুটি হিসাবে গণ্য হইবে। (৪) এই প্রবিধানমালা অনুযায়ী প্রাপ্য সর্বাধিক ছুটি সাপেক্ষে, প্রয়োজন হইলে অন্যবিধ ছুটির সহিত সংগরোধ ছুটিও মঞ্জুর করা যাইতে পারে। (৫) সংগরোধ ছুটিতে থাকাকালে কোন কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব পালনে অনুপস্থিত বলিয়া গণ্য করা হইবে না এবং যখন কোন কর্মচারী নিজেই সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হন, তখন তাহাকে এইরূপ কোন ছুটি দেওয়া যাইবে না।
Caption: Details of Govt. leave Download
ছুটির হিসাব করার নিয়ম ২০২৪ । উপরের ছুটি হিসাবটি ঠিক কিভাবে বের করা হয়েছে তা দেখে নিব
- প্রথমে বর্তমান সময় ০৩/০৫/২০২৩ তারিখ হতে যোগদানের তারিখ ৩১/০৭/২০১৭ বিয়োগ করে কর্মকাল বের করা হয়েছে।
- মোট কর্মকালকে ২০৯৭ দিনে রূপান্তর করা হয়েছে। ৩০ দিনে মাস ধরে হিসাব করবেন।
- ১৫ দিন -একটি শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি বাদ দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিন বাদ দিলে থাকে ২০৮২ দিন। ১১ দিয়ে ভাগ করে ১৭৪ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি বের করতে হবে।
- আরও ছুটি ভোগ করে থাকলে তা বাদ যাবে। আরও ভাল হয়, এক শ্রান্তি বিনোদন ছুটি হতে অন্য শ্রান্তি বিনোদন ছুটি পর্যন্ত হিসাব করে সকল ছুটি বাদ দেওয়া হলে।
- এখন ২০৮২ দিনকে মাসে রূপান্তর করলে ৫ মাস ২৪ দিন দাঁড়ায় গড় বেতনে অর্জিত ছুটি জমা।
- এখন অর্ধ গড় বেতনে ছুটির ক্ষেত্রে ১২ দিয়ে ২০৯৭ কে ভাল করতে হবে। চিত্রে যদিও একই ছুটি দুই জায়গা হয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই অর্জিত ছুটি কম বের হয়েছে। এখানে ১৭৫ দিন বের হবে।
- ১৭৫ দিনের সাথে ১ দিন যোগ করে ১৭৬ দিনকে মাসে রূপান্তর করলে ৫ মাস ২৬ দিন দাঁড়ায়।
প্রসূতি ছুটি কি ছুটি হতে বিয়োগ হয়?
না। কোন কর্মচারীকে পূর্ণ বেতনে সর্বাধিক তিন মাস পর্যন্ত প্রসূতি ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে এবং উহা তাহার পাওনা ছুটির হিসাব হইতে বাদ দেওয়া যাইবে না। প্রসূতি ছুটি মঞ্জুরীর অনুরোধ কোন নিবন্ধিত চিকিৎসক কর্তৃক সমর্থিত হইলে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের বিবেচনা মতে কর্মচারীর প্রাপ্য অন্য যে কোন ছুটির সহিত একত্রে বা সম্প্রসারিত করিয়া মঞ্জুর করা যাইতে পারে। এ চাকুরী জীবনে কোন কর্মচারীকে দুইবারের অধিক প্রসূতি ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে না।
অধ্যয়ন ছুটি নিলে কি বেতন পাওয়া যায়? এ তাহার চাকুরীর জন্য সহায়ক এইরূপ বৈজ্ঞানিক, কারিগরি বা অনুরূপ সমস্যাদি অধ্যয়ন অথবা বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ গ্রহণের জন্য কোন কর্মচারীকে অর্ধ বেতনে অনধিক বার মাস অধ্যয়নের জন্য ছুটি মঞ্জুর করিতে পারেন, যাহা তাহার ছুটির হিসাব হইতে বাদ দেওয়া হইবে না। যে ক্ষেত্রে কোন কর্মচারীকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করা হয় এবং তিনি পরবর্তীকালে দেখিতে পান যে, মঞ্জুরীকৃত ছুটির মেয়াদ তাহার শিক্ষা কোর্স ও পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় মেয়াদ অপেক্ষা কম, সে ক্ষেত্রে সময়ের স্বল্পতা পূরণকল্পে তাহাকে অনধিক এক বৎসরের জন্য উক্ত অধ্যয়ন ছুটির মেয়াদ বর্ধিত করিতে পারেন। পূর্ণ বেতনে বা অর্ধ বেতনে ছুটি বা বিনা বেতনে অসাধারণ ছুটির সহিত একত্রে অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে, তবে এইরূপ মঞ্জুরকৃত ছুটি কোনক্রমেই একত্রে মোট দুই বৎসরের অধিক হইবে না।