প্রাথমিকের দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ প্রক্রিয়া ২০২৫ । আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুযায়ী ডিউটি করতে হবে?
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরীদের আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। দপ্তরী কাম প্রহরী পদটি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া। এই পদের কর্মীদের সেবামূল্য চুক্তিভিত্তিক নির্ধারিত হয় এবং এটি কোনো সরকারি বেতনভুক্ত চাকরি বা পদ নয়– প্রাথমিকের দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ প্রক্রিয়া ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাহলে দপ্তরী ও নিরাপত্তা প্রহরী সংকট থাকবে না? না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী পদটি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল সংগ্রহের জন্য নীতিমালা রয়েছে। দপ্তরী কাম প্রহরীরা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান এবং তাদের সেবামূল্যও চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। এই পদটি সরকারি বেতনভুক্ত বা নিয়মিত চাকরি নয়, তাই তাদের কাজের ধরন এবং সেবামূল্য আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। দপ্তরী কাম প্রহরীদের বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ, যেমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ইত্যাদি আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুযায়ী পালন করতে হয়। এই পদটি যেহেতু আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে, তাই এটি সাধারণত একটি অস্থায়ী পদ এবং এর স্থায়ীকরণের কোনো সুযোগ নেই।
গার্ডও কি এ নীতিমালায় সুযোগ সুবিধা পাবে? হ্যাঁ। আউটসোর্সিং নীতিমালা বলতে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজ বা সেবা নিজেদের জনবল দিয়ে না করে, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে করিয়ে নেয়া সংক্রান্ত নিয়মকানুনকে বোঝায়। বাংলাদেশে আউটসোর্সিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা রয়েছে, যা সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ এবং জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই নীতিমালায় আউটসোর্সিংয়ের সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য, নিয়মকানুন, সেবামূল্য নির্ধারণ, কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। আউটসোর্সিং নীতিমালা (Outsourcing Policy) মূলত সরকারি ব্যয় সাশ্রয় এবং একই সাথে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। আউটসোর্সিং বলতে বোঝায়, কোনো সরকারি দপ্তর বা সংস্থা তাদের প্রয়োজনীয় কাজ বা সেবা (যেমন- পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা, ডেটা এন্ট্রি ইত্যাদি) নিজেদের জনবল দিয়ে না করে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করিয়ে নেয়া। এই নীতিমালার প্রধান উদ্দেশ্য হল সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সরকারি অর্থ সাশ্রয় করা এবং একই সাথে মানসম্মত সেবা গ্রহণ করা। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেবা গ্রহণ এবং জনবল নিয়োগের জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এতে দরপত্র আহ্বান, যোগ্য প্রার্থী বাছাই, চুক্তি সম্পাদন এবং সেবার মান পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে।
উৎসব ভাতাও পায় এরা? হ্যাঁ। আউটসোর্সিং সেবার মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। সাধারণত বাজার দর, কাজের প্রকৃতি এবং সেবাদানকারীর অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যারা কাজ করে, তাদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা যেমন- উৎসব ভাতা, নির্দিষ্ট হারে সম্মানী ইত্যাদি প্রদান করা হতে পারে। আউটসোর্সিং নীতিমালাতে আরও কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেমন- চুক্তি বাতিলকরণ, বিরোধ নিষ্পত্তি, ইত্যাদি।
আউটসোর্সিং কর্মীদের ডিউটি ৮ ঘন্টা নির্ধারিত থাকবে / অতিরিক্ত কর্মঘন্টার জন্য পাইবে পারিশ্রমিক
বার্ষিক ছুটিও থাকবে? হ্যাঁ। পাশাপাশি সেবা কর্মীদের বার্ষিক ১৫ দিনের ছুটি ও মৌলিক কাজ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। একইসাথে প্রতিটি সেবা কর্মীকে প্রতিবছর দুইটি নতুন ইউনিফর্ম প্রদান করা হবে। নারী সেবা কর্মীগণ ৪৫ (পয়তাল্লিশ) দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রাপ্য হবেন।
Caption: Outsourcing Nitimala New 2025 pdf
আউটসোর্সিং কর্মীদের পেনশন ব্যবস্থা ২০২৫ । মাসিক সেবামূল্য কর্মকালীন মাসের পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন পাবে?
- ১৫ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ ও ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত সেবা কর্মীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের পক্ষ হতে নববর্ষের উপহার হিসেবে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা, ২০২৫ জারি করা হয়েছে।
- এই নীতিমালায় সরকার দৈনন্দিন কাজে গতিশীলতা আনয়ন, স্বল্প সময়ে সেবা গ্রহণ, স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা এবং মানসম্পন্ন সেবা ক্রয়ের পাশাপাশি সেবা কর্মীদেরকে কাজে উৎসাহিত করা লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছে।
- এর মধ্যে ০৫টি ক্যাটাগরির সেবা ও ০৩টি বিশেষ সেবার জনপ্রতি মাসিক সেবামূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া সেবাকর্মীগণ দুটি উৎসব প্রণোদনা হিসাবে এক (০১) মাসের সমপরিমাণ সেবামূল্যের অর্ধেক (৫০%) হারে এবং বৈশাখী প্রণোদনা হিসাবে মাসিক সেবামূল্যের এক-পঞ্চমাংশ (২০%) হারে প্রণোদনা সেবামূল্য প্রাপ্য হবেন।
- একইসাথে সেবা কর্মীদের বার্ষিক ১৫ দিনের ছুটি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ খাত হতে সেবাকর্মীকে প্রতিষ্ঠানের মৌলিক কাজ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
- সেবাকর্মীগণ প্রতি অর্থবছরে দুই সেট ইউনিফর্ম (Uniform) পাবেন এবং সেবাকর্মীগণ ইউনিফর্ম পরিধানপূর্বক দায়িত্ব পালন করবেন। যেসব কাজ নারী সেবাকর্মী সংশ্লিষ্ট সেসব কাজে নারী সেবাকর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে এবং নারী সেবা কর্মীগণ ৪৫ (পয়তাল্লিশ) দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রাপ্য হবেন।
- জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত সর্বজনীন পেনশন সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে পেনশন সুবিধা গ্রহণ করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় ক্রয়কৃত সেবামূল্য সেবাকর্মীর নিজ নামীয় ব্যাংক হিসাব/MFS (Mobile Financial Service) এর মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রদেয় হবে।
- সবোর্পরি, সেবা কর্মীগণ তাঁর মাসিক সেবামূল্য কর্মকালীন মাসের পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রদান নিশ্চিত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সংগৃহীত সেবাকর্মীর মাসিক সেবামূল্য ও প্রণোদনা অর্থ বিভাগ কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। সেবা ক্রয়কারী কর্তৃক ঘোষিত নির্ধারিত সেবাঘণ্টা, সেবাকর্মীর সেবা সময় হিসাবে বিবেচিত হবে।
- তবে সেবা ক্রয়কারীর চাহিদা মোতাবেক অতিরিক্ত সময় সেবাদানে নিয়োজিত থাকার প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের সম্মতিসাপেক্ষে চুক্তি মোতাবেক অতিরিক্ত সেবামূল্য প্রদেয় হবে।
আউটসোর্সিং চাকরি কি সরকারি হয়?
আউটসোর্সিং চাকরি সম্পূর্ণ অস্থায়ী চাকরি এবং যে কোন সময় কর্তৃপক্ষ চাকরি প্রত্যাহার বা চাকরি হতে অপসারণ করতে পারেন। এসব চাকরি সরকারি হয় না, এসব চাকরির নিয়োগ বিধিতে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা হয় যে, এটি সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। কোনকালেই এসব কর্মচারী চাকরি স্থায়ীকরণ বা রাজস্বখাতে অন্তর্ভূক্তের আবেদন করতে পারবে না।
https://bdservicerules.info/outsourcing-service-upgrading-bangladesh/