২০২৬ সালের হজে করণীয় ও অনুসরণীয় বিষয়াবলী: গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করলো ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় - Technical Alamin
Latest News

২০২৬ সালের হজে করণীয় ও অনুসরণীয় বিষয়াবলী: গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করলো ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

সূচীপত্র

ঢাকা, ৩১ আগস্ট, ২০২৫ – ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২৬ সালের হজ যাত্রীদের জন্য করণীয় ও অনুসরণীয় বিষয়াবলী সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে। হজের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে এই নির্দেশনায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। – ২০২৬ সালের হজে করণীয় ও অনুসরণীয় বিষয়াবলী

হজে যাওয়ার জন্য যোগ্য কারা? হজে গমনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকা আবশ্যক । নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিরা হজের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন । তবে, আদালত বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাদের দেশত্যাগে বাধা নেই, শুধুমাত্র তারাই হজের জন্য আবেদন করতে পারবেন ।

এছাড়াও, কিছু নির্দিষ্ট দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হজে যেতে পারবেন না । এই রোগগুলোর মধ্যে রয়েছে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার সিরোসিস, কিডনি রোগ, নিউরোলজিক্যাল ও মানসিক রোগ, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা, যক্ষ্মা এবং যারা থেরাপি নিচ্ছেন এমন ক্যান্সার রোগী । হজের তারিখ থেকে পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে ।

সরকারিভাবে হজের প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাথমিক নিবন্ধন নিয়ম কি?  সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে । আপনি হজ পোর্টাল www.hajj.gov.bd এ ইউজার তৈরি করে, কল সেন্টারে (১৬১৩৬) তথ্য প্রদানের মাধ্যমে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম, সকল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে, হজ অফিস (আশকোনা, ঢাকা) অথবা সকল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে প্রাক-নিবন্ধন করতে পারেন । এছাড়াও, গাইড হতে ইচ্ছুক ব্যক্তির কাছে বা যেকোনো কম্পিউটার সেবাদানকারী দোকানেও এই কাজটি করা সম্ভব ।

প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের আগামী ১২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় ৪,০০,০০০ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে । হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর অবশিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে ।

প্রাক-নিবন্ধনের জন্য সোনালী ব্যাংকসহ যেকোনো অনুমোদিত ব্যাংকের শাখায় ভাউচারের মাধ্যমে প্রতি হজযাত্রীর জন্য ৩০,০০০ টাকা জমা দিতে হবে । অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে হজ পোর্টাল, বিকাশ, বা সোনালী পে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এক্ষেত্রে কিছু চার্জ প্রযোজ্য হবে ।

Caption: ২০২৬ সনের হজে হজযাত্রীর করণীয় ও অনুসরণীয় বিষয়াবলী

সরকারি হজ যাত্রীদের জন্য প্রদত্ত সেবা । সরকারিভাবে হজে গমনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয় । এর মধ্যে রয়েছে:

  1. প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৫ জনের আবাসন ব্যবস্থা ।

     

  2. প্যাকেজ আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে ২/৩ সিটের রুম বা শর্ট প্যাকেজ সুবিধা ।

     

  3. সৌদি আরবে যাতায়াতের জন্য ইকোনমিক ক্লাসের বিমান টিকেট ।

     

  4. সৌদি আরবে বিনামূল্যে ঔষধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা ।

     

  5. মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা বিনামূল্যে প্রদান ।

     

  6. হজের সফর মসৃণ করতে লাব্বাইক মোবাইল অ্যাপ এবং মোবাইল রোমিং ও হজ প্রি-পেইড কার্ডের সুবিধা ।

     

  7. হজ ক্যাম্প ঢাকার ডরমিটরিতে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা ।

     

  8. হজযাত্রী ও গাইডদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ।

     

  9. দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে প্রত্যেক হজযাত্রীকে ৫ লিটার জমজম পানি সরবরাহ ।

     

  10. প্রতি ৪৬ জন হজযাত্রীর জন্য একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ গাইডের সেবা ।

হজযাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ করণীয় কি?

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের জন্য কিছু জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে । হজযাত্রীদের অবশ্যই হজ প্যাকেজ ও গাইডলাইন ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে । হজের নিয়মকানুন জানতে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক । ভ্রমণের পূর্বে টয়লেট ব্যবহারের নিয়মাবলী সম্পর্কে জেনে নিতে হবে । প্রতিটি হজযাত্রীকে কমপক্ষে ৫০ দিনের নিয়মিত সেবনের ঔষধ (ব্যবস্থাপত্রসহ) সঙ্গে রাখতে হবে । এছাড়া, একটি স্মার্টফোন, নিকটাত্মীয়ের যোগাযোগের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরও সঙ্গে রাখা জরুরি । ঢাকার হজযাত্রীদের যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে এবং ঢাকার বাইরের হজযাত্রীদের ২ দিন আগে হজ ক্যাম্পে উপস্থিত থাকতে হবে । ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে । সৌদি সরকারের সকল নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে এবং গাইডের সহায়তায় দলগতভাবে চলাচল করা আবশ্যক । আইডেন্টিটি কার্ড, সৌদি নুসুক কার্ড এবং হোটেলের ভিজিটিং কার্ড সর্বদা সাথে রাখতে হবে ।

হজ একটি কষ্টসাধ্য ইবাদত, তাই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিদের নিবন্ধন করা উচিত । মক্কা ও মদিনায় খাবারের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে । নিবন্ধন করার পর হজে যেতে না পারলে, অবহিত করার তারিখ পর্যন্ত ব্যয়িত অর্থ কেটে নেওয়া হবে । সৌদি আরবে হুইলচেয়ারের প্রয়োজন হলে নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা করতে হবে ।বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে হজ করলে, সকল আর্থিক লেনদেন এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে । এ সংক্রান্ত তথ্য হজ পোর্টালের এজেন্সি প্রোফাইলে পাওয়া যাবে । হজযাত্রীকে প্রাপ্য সেবা বিষয়ে এজেন্সির সাথে লিখিত চুক্তি করতে হবে এবং প্রয়োজনে সরাসরি এজেন্সির স্বত্বাধিকারীর সাথে কথা বলতে হবে । যেকোনো প্রয়োজনে‘১৬১৩৬’ নম্বরে কল করে হজ সংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে ।

সকল বাংলাদেশি নাগরিক সরকারিভাবে হজের নিবন্ধন করে ঝামেলাবিহীন ও নিশ্চিতভাবে হজে যেতে পারেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *