নতুন পে-স্কেল ২০২৫ । সরকারি চাকরিতে ইতিহাস গড়ার পথে এক ধাপ?
সরকারি চাকরিতে ইতিহাস গড়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে অবশেষে নতুন পে-স্কেল আসছে—সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশাল সুখবর ২০১৫ সালের পুরোনো বেতন কাঠামো এখন অতীত হওয়ার পথে-দেশে চলমান দাম বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি আর জীবনযাত্রার খরচ বিবেচনায় নিয়ে সরকার গঠন করেছে নতুন পে কমিশন– নতুন পে-স্কেল ২০২৫
পে কমিশনের প্রধান কে? পে কমিশনের প্রধান সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান সাবেক অর্থ সচিব। রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা: মাত্র ৬ মাস। ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জীবনে আসছে আশার আলো হয়ে পে কমিশনের আবির্ভাব হয়েছে। আর নয় অবহেলা, এবার সময় ন্যায্য সম্মান ও বেতন কাঠামো নিশ্চিতের জন্য একধাপ এগিয়ে গেল।
চলতি অর্থ বছরে কি বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে? না। নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে না। তবে চলতি বাজেট চিত্র (২০২৫-২৬) কর্মকর্তা বেতন: ১৩,৪৮৩ কোটি টাকা এবং কর্মচারী বেতন: ৩০,০৪৮ কোটি টাকা। ভাতা: ৪১,১৫৩ কোটি টাকাসহ মোট বরাদ্দ: ৮৪,৬৮৪ কোটি টাকা (আগের বছরের তুলনায় ১,৭০৭ কোটি টাকা বেশি) বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
পে কমিশনের প্রধান কে এই জাকির আহমেদ খাঁন? জাকির আহমেদ খান বাংলাদেশের একজন সাবেক অর্থ সচিব। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি, ২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে, তাকে নতুন পে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে, তিনি পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং বেলজিয়ামের ভ্রিজে ইউনিভার্সিটি ব্রাসেলস থেকে এমবিএ করেছেন। সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষকতা এবং অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোতে রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বব্যাংকে বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন।
সরকারি কর্মচারীদের দাবী আদায় সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া ২০২৫ / র্মচারী নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে অন্তত ৩ জন প্রতিনিধিকে কমিশনের মূল অংশে সদস্য অথবা উপ-কমিটিতে রাখার জন্য জোর দাবী জানানো হয়েছে
অর্থ উপদেষ্টা স্পষ্ট বলেছেন—বাজেটে থাকছে বিশেষ সুবিধা, কর্মীদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করাই সরকারের অঙ্গীকার। মহার্ঘ ভাতা নিয়ে আলোচনার ঝড়ের মধ্যেই এলো এই বড় ঘোষণা এসেছে। এবার বদলে যাবে বহুদিনের জমে থাকা হতাশার চিত্র। নতুন পে-স্কেল মানেই শুধু বেতন নয়, এটি সম্মান, মূল্যায়ন আর কর্মীদের প্রাপ্য অধিকার।
Caption: Bangladesh Secretariate Staff Parishad
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ । সরকারি কর্মচারী দাবী আদায় ঐক্য পরিসদের দাবী কি?
- কমিশনের প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা ০৬ মাসের পরিবর্তে ০৩ মাসের মধ্যে পে-কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের দাবী জানান।
- পে-কমিশনের সুপারিশে বিদ্যমান ২০টি বেতন গ্রেডের স্থলে ১২টি বেতন গ্রেড প্রবর্তনের দাবী জানানো হয় ।
- বিভিন্ন দপ্তরের ৮ লক্ষ কর্মচারীর ন্যায় সচিবালয়ের কর্মচারীদের রেশন ভাতার সুপারিশসহ সমগ্র বাংলাদেশের কর্মচারীদের পূর্বের সুবাধাদি তথা নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে ৩টি টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনঃপ্রবর্তনের দাবী জানান।
- একটি বৈষম্যমুক্ত এবং প্রজাতন্ত্রের নিম্ন-বেতনভুক্ত মানবেতর জীবন-যাপনকারী কর্মচারীদের প্রতি সুবিচার বা ন্যায়সংগত বেতন কাঠামো নির্ধারণ দাবী জানান।
- স্থায়ী পে-কমিশন গঠনের জন্য সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ এবং ১৮ লক্ষ কর্মচারীর পক্ষ থেকে আরও উল্লেখ করা হয় যে, কর্মচারী নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে অন্তত ৩ জন প্রতিনিধিকে কমিশনের মূল অংশে সদস্য অথবা উপ-কমিটিতে রাখার জন্য জোর দাবী জানান।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের পরই পে কমিশনের ঘোষণা?
হ্যাঁ। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের দাবী এবং সমগ্র বাংলাদেশের ১৮ লক্ষ কর্মচারীর পক্ষ থেকে দাবীকৃত সরকারী চাকুরী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর সংশোধনীর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হওয়ায় পরিষদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং সম্মানিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়। এছাড়া উক্ত দাবী বাস্তবায়নে সাচিবিক সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিবসহ অন্যান্য সচিব মহোদয়ের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
০৬ অনেক বেশি সময় নয় কি? ৯ম জাতীয় পে-কমিশন ঘোষণার পর সংযুক্ত পরিষদের নেতৃবৃন্দ কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব মো: জাকির আহমেদ খান এর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং সমগ্র বাংলাদেশের ১৮ লক্ষ কর্মচারীর পক্ষ থেকে বর্তমান অন্তবর্তীকালী সরকার উপদেষ্ঠা মণ্ডলির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নেতৃবৃন্দ ৯ম জাতীয় পে-কমিশন ঘোষণার মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ বঞ্চিত কর্মচারীদের অসচ্ছলতা ও মানবেতর জীবন-যাপনের অবসান ঘটবে মর্মে আশা পোষণ করেন এবং ০৬ মাসের পরিবর্তে ০৩ মাসের মধ্যে পে-কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের দাবী জানান এবং পে-কমিশনের সুপারিশে বিদ্যমান ২০টি বেতন গ্রেডের স্থলে ১২টি বেতন গ্রেড প্রবর্তনের দাবী জানানো হয় ।