বেতার রাজস্ব ও স্বায়ত্তশাসনের পার্থক্য ২০২৫ । বেতারে স্বায়ত্তশাসন আসলে কর্মচারীদের কি অসুবিধা হবে?
বিটিভি, বেতার ও বাসসের সমন্বয়ে সুষ্ঠু নতুন প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা বা জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা নামকরণ করা যেতে পারে। এই নতুন প্রতিষ্ঠানের তিনটি বিভাগ থাকবে- টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ। প্রতিটি বিভাগের প্রধান হিসাবে একজন করে পরিচালক থাকবেন এবং নতুন একীভূত সম্প্রচার সংস্থার প্রধান হবেন একজন মহাপরিচালক–বেতার রাজস্ব ও স্বায়ত্তশাসনের পার্থক্য ২০২৫
মাসিক পেনশন কি পাবেন? হ্যাঁ। বর্তমান জনবলের মধ্যে রেডিও ও বিটিভিতে কেউ যদি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে না থাকতে চান, তাহলে তাদের অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে আত্তীকরণ করা হবে। যারা একীভূত সম্প্রচার সংস্থায় চাকরিতে থাকবেন, তাদের সরকারি চাকরির সব সুবিধাদি অপরিবর্তিত থাকবে। কেউ স্বেচ্ছায় চাকরির অবসায়ন চাইলে তিনি নিয়মানুযায়ী সমস্ত পাওনা পাবেন।
অন্য অফিসে চলে যাওয়া যাবে? হ্যাঁ। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার অধীনে চাকরি অব্যাহত রাখা বা সরকারের অন্য কোনো দপ্তরে আত্তীকরণের সুযোগ দেওয়া। একীভূত নতুন সম্প্রচার সংস্থার অবকাঠামোর আধুনিকায়নে এককালীন বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা। সরকার বর্তমানে যেভাবে অর্থায়ন করছে, ঠিক সেভাবেই এই নতুন প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা নিজস্ব আয়ের পথও বের করবে।
সরকার পরিচালনা করবে না? একটি স্বাধীন পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। পর্ষদের চেয়ারম্যান সার্বক্ষণিক এবং তার বেতন-ভাতা পর্ষদ ঠিক করবে। পরিচালনা পর্ষদ নতুন সংস্থার নিয়োগবিধি এবং নীতিমালা প্রণয়ন করবে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা তিন বছরের জন্য মনোনীত হবেন। তবে একজন দুইবারের বেশি তার পদে থাকতে পারবেন না। সরকার আর নিয়ন্ত্রণ করবে না।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলি স্বাধীন বা স্বশাসিত। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলি সরকার অনুমোদিত হলেও নিজস্ব পরিচালনা পর্ষদ বা বোর্ডের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
রাজস্ব ও স্বায়ত্তশাসনের মধ্যে পার্থক্য হলো, রাজস্বের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানের তহবিল সরকারি, অন্যদিকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল নিজস্ব। সরকারি প্রতিষ্ঠানের তহবিল সম্পূর্ণ বা প্রধানত সরকারি। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল নিজস্ব।সরকারি প্রতিষ্ঠানের নীতি, বাজেট, জনবল নিয়োগসহ সব সিদ্ধান্ত সরকার নিয়ে থাকে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পরিচালনা পর্ষদ বা বোর্ডের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলি স্বাধীন বা স্বশাসিত।
Caption: Betar Autonomous pdf
বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা পরিচালনা পর্ষদের গঠন: পরিচালনা পর্ষদ হবে ৯ সদস্যের। তাদের মধ্যে থাকবেন: সম্প্রচারমাধ্যমে পরিচালনা/নেতৃত্ব দেওয়া দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন;
- সাংবাদিকতায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন।
- শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিজগতে শীর্ষস্থানীয় একজন।
- শিক্ষাবিদ একজন।
- নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি একজন।
- একজন অর্থনীতিবিদ।
- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব/অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি।
- অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব/অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি ।
- বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থার মহাপরিচালক যিনি এই পর্ষদের সদস্য সচিব হিসেবে যুক্ত থাকবেন। সরকার মহাপরিচালক নিয়োগ দেবেন; কিন্তু তিনি পরিচালনা পর্ষদের কাছে জবাবদিহি করবেন।
- সদস্যদের মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী ও একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হবেন।
- এ সদস্যরাই তাদের মধ্যে থেকে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন / সভাপতি নির্বাচন করবেন।
- মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং সংস্থার মহাপরিচালক চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হবেন।
- এই পরিচালনা পর্যদই সম্পাদকীয় নীতিমালা ঠিক করবে। পর্ষদই আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার অধিকারী
হবে। - পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা তিন বছরের জন্য মনোনীত হবেন। তবে একজন দুইবারের বেশি তার পদে থাকতে পারবেন না।
সরকারি কি প্রতি বছর বাজেট দেয়?
হ্যাঁ। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হলো ওইসব প্রতিষ্ঠান গুলো, যেগুলো সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হয়, তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানের জন্য, নিজেদের আইন তৈরি করার অধিকার আছে এবং নিজেদের মতো করে নিজেদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে, যে পরিচালনার ভিতর সরকার বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান হস্তক্ষেপ করে না। যেমন -বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হলো ওইসব প্রতিষ্ঠান যে প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হয় না। কোন ব্যক্তি মালিকানা কিংবা কোন সংস্থার মালিকানায় পরিচালিত হয়, এবং ব্যক্তিগত অথবা কোন সংস্থার অর্থায়নে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। কিন্তু সকল সংস্থাকেই দেশের সরকারের কিছু মৌলিক রুল বা নিয়ম-কানুন মানতে হয়।