সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ক্রয় সীমা ২০২৩ । স্বামী - স্ত্রী যৌথ নামে ০১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে?

সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ক্রয় সীমা ২০২৪ । স্বামী – স্ত্রী যৌথ নামে ০১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে?

বাংলাদেশে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের নিয়ম ও প্রক্রিয়া জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনার ন্যূনতম অর্থ সঞ্চয় থাকে – সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ক্রয় সীমা ২০২৪

সঞ্চয়পত্র কি ডিপিএস? না। –সঞ্চয়পত্র সেভিংস সার্টিফিকেট বা সেভিংস ইন্সট্রুমেন্টস নামেও পরিচিত। সঞ্চয়পত্র হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিচালিত একটি বিনিয়োগ প্রকল্প যা হতে সময়ে সময়ে (মাসিক/ত্রৈমাসিক/মেয়াদান্তে) মুনাফা এবং মেয়াদান্তে আসল পরিশোধ করা হয়ে থাকে। সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিক্ষিপ্তভাবে থাকা জনগণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একত্রিতকরণের ফলে সরকারের ঘাটতি বাজেট অর্থায়নে সহায়ক হয়। এছাড়াও, দেশের স্বল্প আয়ের জনগণের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি, দেশের বিশেষ জনগোষ্ঠী যেমন- মহিলা, বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আনয়ন, বৈদেশিক নির্ভরতা হ্রাস এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সঞ্চয়পত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে ৷

সঞ্চয়পত্র কত রকমের হয়? ৪ রকমের হয়ে থাকে। ১। পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, মেয়াদ- ৫(পাঁচ) বছর; ২। পরিবার সঞ্চয়পত্র, মেয়াদ- ৫ (পাঁচ) বছর ; ৩। তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, মেয়াদ- ৩ (তিন) বছর ও ৪। পেনশনার সঞ্চয়পত্র, মেয়াদ- ৫(পাঁচ) বছর । বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অফিস (সদরঘাট ও ময়মনসিংহ অফিস ব্যতীত), শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ব্যতীত সকল তফসিলি ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনস্থ সকল সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং ডাকঘরসমূহে ( Post Office) হতে ৪টি প্রতিষ্ঠান হতে সঞ্চয়পত্র কিনতে পাওয়া যায়।

সঞ্চয়পত্র কিনতে কি কি কাগজপত্র লাগে? ক) ক্রেতা ও নমিনি প্রত্যেকের ০২ (দুই) কপি করে পাসপোর্ট আকারের সত্যায়িত ছবি (নমিনির ছবি ক্রেতা কর্তৃক সত্যায়িত); খ) ক্রেতা ও নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (নমিনি নাবালক হলে তার জন্মনিবন্ধন এবং প্রত্যয়নকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি); গ) ক্রেতা(গণ)-এর E-TIN সার্টিফিকেটের কপি (বিনিয়োগের পরিমাণ ১.০০ (এক) লক্ষ টাকার বেশী হলে) ; ঘ) গ্রাহকের নিজ ব্যাংক হিসাবের (যে হিসাবে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও আসল EFT-এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা করা হবে) MICR চেক এবং MICR সাদা চেকের কপি (একক নামে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে একক নামের ব্যাংক হিসাবের চেক অথবা যুগ্ম নামে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে যুগ্ম নামের ব্যাংক হিসাবের চেক) এবং ঙ) পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুরণকৃত প্রাপ্ত আনুতোষিক ও ভবিষ্য তহবিলের সনদপত্র এবং PPO (Pension Payment Order) / EPPO (Electronic Pension Payment Order)-এর ফটোকপি অথবা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদনকৃত পিএসপি-২ ফরম। এছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে টিআইএন সার্টিফিকেট অথবা রিটার্ণ দাখিল করতে হবে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

নগদে সর্বোচ্চ ১.০০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায় এবং ১.০০ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতার নিজ হিসাবের চেক ব্যবহার করতে হবে। তবে ক্রেতা চাইলে যেকোনো অঙ্কের সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য নিজ হিসাবের চেক ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রাসঙ্গিক বিধিব্যবস্থাদির সংক্ষিপ্ত সরলীকৃত বর্ণনাঃ অনুসরণীয় মুল নির্দেশনার জন্য অথবা কোন মতপার্থক্য/বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র বিধিমালা (১৯৭৭, সংশোধিত- ২০১৫), পরিবার সঞ্চয়পত্র নীতিমালা (২০০৯, সংশোধিত-২০১৫), পেনশনার সঞ্চয়পত্র নীতিমালা (২০০৪, সংশোধিত-২০১৫) এবং সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন/সার্কুলার/সার্কুলার লেটার দ্রষ্টব্য।

ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক

সঞ্চয়পত্র ক্রয় যোগ্যতা । আপনি চাইলেই কি ৪ ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন?

  • ০৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র- প্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিক একক বা যুগ্ম নামে।আয়কর বিধিমালা ১৯৮৪ (অংশ-২)-এর বিধি ৪৯-এর উপ-বিধি (২) এ সংজ্ঞায়িত স্বীকৃত ভবিষ্যত তহবিল এবং ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ সালের ১৯ নং আইন) অনুযায়ী পরিচালিত স্বীকৃত ভবিষ্যত তহবিল এবং আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৬ষ্ঠ তফসিল এর পার্ট-এ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী মৎস্য খামার, হাঁস- মুরগীর খামার, পেলিটেড পোলট্রি ফিডস্ উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপণন, গবাদি পশুর খামার, দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, উদ্যান খামার প্রকল্প, রেশম গুটিপোকা পালনের খামার, ছত্রাক উৎপাদন এবং ফল ও লতা পাতার চাষ হতে অর্জিত আয়-যা সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনার কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত ।
  • পরিবার সঞ্চয়পত্র-  ১৮(আঠার) বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের যে কোন বাংলাদেশী নারী, ৬৫(পয়ষট্টি) বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক। প্রাপ্ত বয়স্ক শারীরিক প্রতিবন্ধী বাংলাদেশী নাগরিক । তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিবন্ধীতার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।
  • তিন মাস মুনাফা সঞ্চয়পত্র – প্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিক একক বা যুগ্ম নামে । অটিস্টিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা যে সকল প্রতিষ্ঠান অটিস্টিকদের সহায়তায় কাজ করে। তবে শর্ত থাকে যে, মুনাফার অর্থ অটিস্টিকদের সহায়তা কাজে ব্যয় হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজ সেবা অফিস হতে প্রত্যয়নকৃত হতে হবে।
  • পেনশনার সঞ্চয়পত্র- সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পিআরএল ভোগরত/ অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী; সুপ্রীম কোর্টের পিআরএল ভোগরত/ অবসরপ্রাপ্ত মাননীয় বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর পিআরএল ভোগরত/ অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং উল্লিখিত ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভূক্ত মৃত চাকুরীজীবীদের পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী/স্ত্রী/সন্তানগণ।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র কি দের কোটি টাকার কেনা যায়?

একক নামে কেউ কিনতে না চাইলে যৌথ নামে কিনতে পারেন এক কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। তবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকের ক্ষেত্রে এই ঊর্ধ্বসীমা ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ, একক নামে কেউ ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। আর যৌথ নামে কিনতে পারবেন ১ কোটি টাকার। প্রতিটি সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফরম যথাযথভাবে পূরণ এবং স্বাক্ষরপূর্বক যেকোন ইস্যু অফিসে দাখিল করতে হবে। সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের আবেদন ফরম যেকোন ইস্যু অফিস থেকে বিনামূল্যে পাওয়া যায় অথবা ওয়েব সাইট থেকে Download করে তা সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে ব্যবহার করা যাবে।

সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের সর্বোচ্চ সীমা ২০২৩ । একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কত টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *