Online Birth Registration Rules । প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম কি?
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য আপনাকে কোন জটিলতার মধ্যেই পড়তে হবে না। আপনি সিমপ্লি bdris.gov.bd এই ওয়েবসাইটে গিয়ে নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন লিংকে ক্লিক করলেই একটি ফরম আসবে ধীরে ধীরে আপনি ফরমটি পূরন করবেন।
ফরম পূরণ করে অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে দাখিল করবেন। অনলাইনে আবেদন দাখিলের পর সেটি প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যুক্ত করে স্বাক্ষর করে ইউনিয়ন পরিষদ/ইউএনও/রেজিস্টার জেনারেল বরাবর দাখিল করবেন নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে। অতপর ৫-৭ কর্মদিবসের মধ্যে আপনার আবেদনটি অনুমোদন হবে। ব্যাস কাজ শেষ। আবেদন কিভাবে করতে হয় তা না জানলে এখান থেকে দেখে নিন। জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ২০২৩
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম
কোনভাবেই আপনি কোন দালালের মাধ্যমে আবেদন করবেন না। অনলাইনে আপনার মোবাইল দিয়ে বা ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ দিয়ে সহজেই আপনি নিজেই আবেদন করতে পারবেন। একটু সাহস করে বসুন পেরে যাবেন। যদি আবেদন অনলাইনে নিজের করতে সমস্যা হয় তবে কোন কম্পিউটারের দোকানে যান অথবা কিছু পোস্ট পড়ে নিন বা ভিডিও দেখে নিন কিভাবে আবেদন করে। এখানে এ সংক্রান্ত অনেক পোস্ট রয়েছে এবং পোস্টের নিচে ভিডিও রয়েছ। ভয় না পেয়ে আমি বলবো নিজেই ট্রাই করুন।
প্রথমে আপনি আপনার বাবা-মায়ের এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন দিবেন। মনে রাখবেন ২০০১ সালের পরে আপনার জন্ম হলে আপনার পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর অবশ্যই ইনপুট দিতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য এবং ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য আপনাকে ইনপুট দিতে হবে মাত্র। জন্ম তারিখ প্রমানের জন্য এসএসসি বা জেএসসি বা যে কোন পাবলিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট আপলোড করতে হবে এবং ঠিকানার জন্য ভূমি কর, ইউটিলিটি বিল বা পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।
কাগজপত্র আপলোডের ক্ষেত্রে একটি ঝামেলা আছে তা হলো ফাইল সাইজ ১০০ কেভি এর উপরে হওয়া যাবে না। আমাদের মোবাইল বা স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করার সময় ক্যামেরার বা স্ক্যানারের রেজুলেশন কমিয়ে নিতে হবে। আপনি চাইলে অনলাইনে, পেইন্ট সফটওয়্যার বা ফটোশপ ব্যবহার করে ফাইল সাইজ কম্প্রেস করে কমিয়ে নিতে পারবেন। compressjpeg.com এই ওয়েবসাইটে গিয়ে ফাইল সাইজ কমিয়ে নিতে পারবেন সহজেই।
জন্ম নিবন্ধনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ২০২৪
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন ২০২৪
জন্ম নিবন্ধনের জন্য আপনি সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ বা নিবন্ধকের কার্যালয়ে গিয়েও জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধন ম্যানুয়াল পদ্ধতি সময় সাপেক্ষ এবং নিবন্ধকের কার্যালয়ের উপর নির্ভর করতে হয়। আমার মতে সঠিক ও নির্ভুল জন্ম নিবন্ধন সনদ পেতে আপনি অনলাইনেই আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে আপনি সমস্ত তথ্য ইনপুট দিবেন নিজে নিজে চেক করে এবং কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র হার্ড কপির ভিত্তিতে অনুমোদন করবে। এক্ষেত্রে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন। নিবন্ধক কার্যালয়ের জন্য আপনার জন্ম স্থান বা স্থায়ী ঠিকানার বিভাগ, জেলা, প্রভৃতি ধাপ পার হয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত নির্বাচন করতে হবে। অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরম প্রথমে বাংলায় (ইউনিকোড) ও পরবর্তীতে ইংরেজিতে পূরণের পর প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করুন। সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন পত্রটি সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে স্থানান্তিরত হয়ে যাবে, আবেদনকারীর আর কোন সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। অতঃপর পরবর্তী ধাপে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করলে আবেদন পত্রের মুদ্রিত কপি পাবেন। সনদের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে উক্ত আবেদন পত্রে নির্দেশিত প্রত্যয়ন সংগ্রহ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপিসহ নিবন্ধক অফিসে যোগাযোগ করুন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড
জন্ম নিবন্ধন ডাউনলোড কথাটি শুনলেই মনে হয় হুবহু জন্ম নিবন্ধন কপি ডাউনলোড করা যাবে মূলত ব্যাপারটি সে রকম নয়। অনলাই জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। অনলাইন কপি মূলত ফিজিক্যাল জন্ম নিবন্ধন সনদ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অনলাইন কপি আপনি প্রিন্ট করে ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। অনেক সময় জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পন্ন হলেও জন্ম নিবন্ধন সনদ পেতে দেরি হয়। আপনি শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন নম্বর জেনেই অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন ঘরে বসেই এবং সেটি স্কুল কলেজে গ্রহণ যোগ্য। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি অনলাইন হতে ডাউনলোড করেই আপনি খুব সহজে আপনার কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ ইনপুট দিয়েই আপনি জন্ম নিবন্ধন চেক করতে পারেন এবং চেক করতে যে তথ্য দেখায় তা আপনি CTRL P চেপে অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন ফরম ২০২৪
জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আবেদন না করে আপনি অফলাইন ফরম পূরণ করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে জন্ম নিবন্ধন সনদ পেতে পারেন। যেহেতু অফলাইন বা ম্যানুয়াল পদ্ধতি একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার কারণ বর্তমানে খুব বেশি চাপ রয়েছে জন্ম নিবন্ধকের কার্যালয়ে তাই ফরমের মাধ্যমে আবেদন করে আপনি জন্ম নিবন্ধন পেতে পারেন। জন্ম নিবন্ধন ফরম 2022 হতে আপনি ফরম ডাউনলোড করে নিন। বিস্তারিত তথ্য হাতে লিখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যুক্ত করে ইউনিয়ন পরিষদে দাখিল করুন।
জন্ম নিবন্ধন হেল্পলাইন
জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন বা অনলাইনে আবেদন সংক্রান্ত কোন ধরনের জটিলতা ফেস করলে আপনি ১৬১৫২ নম্বরে কল করে সাহায্য নিতে পারেন। হেল্পলাইন ১৬১৫২ একটি পোর্টাল যেখানে কল করলে আপনাকে বাংলা ল্যাংগুয়েজ সিলেক্ট করতে হবে এবং জিরো (০) চেয়ে কাস্টমার সার্ভিসে কথা বলতে হবে। আপনি গ্রামীনফোন এবং টেলিটক হেল্প লাইনে যেভাবে কথা বলে ঠিক একই ভাবে ১৬১৫২ নম্বরে কল করে কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজারের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন
জন্ম নিবন্ধনে কোন ভুল তখনই পরিলক্ষিত হয় যখন আপনি ইউনিয়ন পরিষদ বা নিবন্ধকের কার্যালয়ের উপর নির্ভর করেন। আপনি অনলাইনে নিজে নিজে যদি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন তবে আপনার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই ইউনিয়ন পরিষদ অদক্ষ কম্পিউটার অপারেটরের উপর নির্ভর না করে আপনি নিজেই সাহস করে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন। যাহোক যদি আপনার জন্ম নিবন্ধনে কোন ভুল তথ্য ইনপুট আসে তবে আপনি অনলাইনেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করুন এবং আবেদনের সাথে যথাপযুক্ত ডকুমেন্ট যুক্ত করে ইউনিয়ন পরিষদ বা নিবন্ধকের কার্যালয়ে দাখিল করুন। জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য এই লিংকে যান।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনে কোন ভুল সংশোধনের কোন ডকুমেন্টস লাগবে?
যদি আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর থাকে, তাহলে তাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করে তাদের নাম সংশোধন করে আসতে হবে। এরপর যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন করার সময় আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে থাকেন, তবে তাদের নাম সংশোধন করার পর আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনর্মুদ্রণ করলে সেখানে পিতা/মাতার সংশোধিত নাম দেখা যাবে। আর যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন করার সময় আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না দিয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বরের সাথে পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ম্যাপ করতে হবে। পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ম্যাপ করার পর আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনর্মুদ্রণ করলে, সেখানে পিতা/মাতার সংশোধিত নাম দেখা যাবে।
যদি আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না থাকে এবং আপনার জন্ম তারিখ 01/01/2001 এর পূর্বে হয়, তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করার সময় আপনার পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার পিতা/মাতা মৃত হলেও তাদের মৃত্যুর কোন প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে না।
যদি আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না থাকে এবং আপনার পিতা/মাতা মৃত হয় এবং আপনার জন্ম তারিখ 01/01/2001 এর পরে হয়, তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করার সময় আপনার পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার পিতা/মাতার মৃত্যুর প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
bdris.gov.bd login
bdris.gov.bd login এটি সরকারি ওয়েবসাইট যেখানে আপনি খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন বা মৃত্যু নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন বা নতুন জন্ম নিবন্ধন বা মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোন সন্দেহ ছাড়াই আপনি bdris.gov.bd login ওয়েব সাইটটি ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া জন্ম নিবন্ধন যাচাই এবং জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলো, আবেদনের অবস্থা যাচাই, রি-প্রিন্ট ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন যাচাই
এখন ফেইক জন্ম নিবন্ধন সংশোধন যাচাই করা খুবই সহজ। everify.bdris.gov.bd লিংকে গিয়ে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করে তথ্য যাচাই করতে পারেন। কোন ভাবেই এখন আর ভূয়া জন্ম নিবন্ধন ব্যবহারের সুযোগ নেই। জন্ম নিবন্ধন এখন খুব ভাইটাল বিষয়। বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট ইন্টিগ্রেটেড থাকার কারণে ভুয়া বা বানানো জন্ম নিবন্ধন নম্বর বা জন্ম সনদ সার্টিফিকেট ব্যবহার করা যাবে না। জন্ম নিবন্ধন এখন পাসপোর্ট, এনআইডি কার্ড, টিআইএন, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন আবশ্যক তাই জন্ম নিবন্ধন আজই করে নিন তা অনলাইন আবেদন বা ম্যানুয়াল পদ্ধতি যাই হোক না কেন। ধন্যবাদ।
বি:দ্র: আপনার বয়স যাই হোক না কেন আপনি যদি ২০০১ সালের পরে জন্ম গ্রহণ করে থাকেন তবে আপনার পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন লাগবে এবং যদি আপনি ২০০১ সালের পূর্বে বা আগে জন্ম গ্রহণ করে থাকেন তবে আপনার পিতা মাতার জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন নম্বর লাগবে না। শুধুমাত্র এনআইডি নম্বর হলেই চলবে।